কলকাতার মেয়ে অগ্নিকা মুখোপাধ্যায়। তার অভিনব ভাবনা সকল কে অবাক করে দিয়েছে। শুধু দেশের বা রাজ্যের মানুষ নয় বিদেশের মানুষের কাছেও তার অভিনব ভাবনা জায়গা করে নিয়েছে। কলকাতার অভিজাত স্কুল থেকে পাশ করে সাইকোলজি নিয়ে নাম করা কলেজে ভর্তি হন তিনি। এরপর ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট থেকে মাস্টার্স করেন। কিন্তু পেশা নির্বাচন নিয়ে তার অন্য চিন্তায় ছিল মাথায়। চেয়েছিলেন গতানুগতিক পেশা থেকে একটু সরে গিয়ে অন্য কিছু করার। এরপরে তিনি শুরু করেন 'ফুড মিনিয়েচার ফ্রিজ ম্যাগনেট' তৈরির কাজ।
কি অবাক লাগছে তো? এভাবেই বাঙালির প্রিয় খাবারগুলি বিশ্বদরবারে পৌছে দিচ্ছে অগ্নিকা। কখনও খিচুড়ির আকারে কখনও বা রোল, আলুভাজা রূপে। তবে ইলিশ মাছ, পায়েস, ফিশ ফ্রাই দেখে মুখে জল আসতে বাধ্য। ব্যক্তিগত জীবনে অগ্নিকা খেতে খুব একটা ভালো বাসেননা। রান্না বান্নাতেও বিশেষ দক্ষ নন তিনি। কিন্তু আশপাশের মানুষের খাবারের প্রতি ভালোবাসা দেখে, নিজের শিল্পের জন্য নির্বাচন করেছেন খাবার কে। নানা ধরনের খাবারের সম্ভার তাঁর শিল্প সত্ত্বার গুণে ফুটে উঠেছে বেশ। বাঙলার নানা ধরনের পদের খাবারের পাশাপাশি তাঁর তৈরি খাবারের পদে থাকছে কেক, ম্যাকরোন, ডোনাট, পিৎজা ইত্যাদি। জানা গিয়েছে যে, এই খাবার গুলি 'ড্ৰাই ক্লে' দিয়ে তৈরি করা হয়। কিন্তু তিনি এর সঙ্গে পারফেকশানের দিকে সব থেকে বেশি নজর রাখেন। এই বিষয়ে অগ্নিকা জানিয়েছেন যে, তাঁর ক্লায়েন্ট রয়েছে সমগ্র বিশ্ব জুড়ে। ভারত ছাড়াও ইতালি, স্পেন ,সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে নিয়মিত অর্ডার আসে তাঁর কাছে। নামী অনলাইন সাইটগুলোতেও পাবেন তাঁর ম্যাগনেট। তিনি শুধু ফ্রিজ ম্যাগনেট নয়, চাবির রিং, জুয়েলারিও বানাচ্ছেন। তবে মূল বিষয় 'খাবার'। তিনি আরও জানান, কিছুদিন আগে নিউ ইয়র্কের এক বাঙালির কাছ থেকে মহাভোজ থালি বানানোর অর্ডার পেয়েছেন তিনি। এই থালিতে তিনি পরিবেশন করেছেন ভাত, লুচি, সুক্তো থেকে মুরগি, মটন, পায়েস, মিষ্টি দই, রসগোল্লা, পান। অনেক পরিশ্রম করে নিখুঁত বাঙালি মহাভোজ থালি তৈরি করতে পেরেছেন তিনি। পরিবারের সহযোগীতা থাকলেও মূলত একাই তিনি ব্যবসাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। আপাতত বিভিন্ন কাস্টমারের নানা অনুরোধ মতো মিনিয়েচার ডিশ তৈরি করাই তাঁর কাছে সব থেকে আনন্দের বলে তিনি জানান।