নতুন সরকার

গতকাল থেকে বলা যায়, শুরু হল দ্বিতীয় মোদী সরকার তথা বিজেপি সরকারের শাসনপর্ব। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সংসদে মাথা উঁচু করে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহন করলেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। ঘড়ির কাঁটা ৬টা ৫৬। উপস্থিত অতিথি দর্শকদের উদ্দেশ্যে মাথা হেঁট করে প্রণাম করে বসলেন নিজের আসনে। মঞ্চে নিয়ম মেনে রাখা হয়েছিল ভারতীয় সংবিধান। সেদিকে তাকিয়ে নিয়ে শপথ নিলেন প্রধানমন্ত্রী, সামনের আরও পাঁচ বছর দেশের নাগরিকদের জন্য কাজ করবেন বলে। মোট ৫৮ জন শপথ নিলেন গতকাল। তাৎপর্যপূর্ণভাবে দু'জন নতুন পূর্ণ মন্ত্রী হয়ে এলেন অমিত শাহ এবং প্রাক্তন বিদেশ সচিব সুব্রহ্মণ্যম জয়শংকর। পাশাপাশি মন্ত্রিসভা থেকে বাদ গেলেন সুষমা স্বরাজ এবং অরুন জেটলি। বাংলার তরফে দু'জন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন। বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরি।

 

   

অত্যন্ত নিখুঁতভাবে এবারে দেশের প্রায় প্রতিটি প্রান্ত থেকে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে একজন করে প্রতিনিধি রাখার চেষ্টা হয়েছে। টাটা, অম্বানী থেকে আদানি হয়ে হিন্দু ধর্মগুরুদের উপস্থিতিতে দর্শকাসনে উচ্ছাস ছিল চোখে পড়ার মত। গতবারের মত এবারেও খোলা আকাশের নিচে রাষ্ট্রপতি ভবনকে প্রেক্ষাপট রেখে মোদী সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। স্ত্রী নিতা অম্বানিকে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন মুকেশ অম্বানী। ছিলেন রতন টাটা, গৌতম আদানি। উপস্থিত ছিলেন নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা। বলিউডি উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মত। জিতেন্দ্র, বিবেক ওবেরয় থেকে আশা ভোঁসলে, প্রসূন জোশীও ছিলেন। মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন বিমস্টেকভুক্ত বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ, শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপাল সিরিসেনা, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ মিন মিন্ট, এবং থাইল্যান্ডের তরফে বিশেষ দূত তথা মন্ত্রী গ্রিসাদ বুনরাচ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিমস্টেকভুক্ত দেশগুলির মধ্যে ভারত ছাড়া রয়েছে বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, নেপাল এবং ভুটান। এসেছিলেন মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্ৰবিন্দ যুগনাথ। মার্কিন বিদেশ দফতরের তরফে জানানো হয়, দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে সহযোগী হিসেবে কাজ করবে ট্রাম্প প্রশাসন। আগামী মাসে জাপানের ওসাকায় জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী, মার্কিন প্রেসিডেন্ট সহ অন্যান্য বিশ্বনেতারা।

   উল্লেখনীয়ভাবে টাইম ম্যাগাজিন দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির ভূয়সী প্রশংসা করেছে তাদের সাম্প্রতিকতম সংখ্যায়। লন্ডনের মিডিয়া সংগঠন ইন্ডিয়া ইংক গ্রূপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্তা মনোজ লাডওয়া টাইম আইডিয়া বিভাগে একটি নিবন্ধে নরেন্দ্র মোদির ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাঁর মতে, মোদী সরকারের সাফল্যগুলি এখনও নির্মীয়মান স্তরে রয়েছে। তবে তাঁর সরকারের প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার ও রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ প্রায় প্রতিটি আন্তর্জাতিক সংগঠন।

নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংস্কারমূলক সিদ্ধান্ত নিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। এগুলিকে 'বিগ ব্যাং রিফর্ম' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে, এই বিগ ব্যাং রিফর্ম-এর ফলে বিদেশী পুঁজিপতিরা এ দেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন। পুঁজিপতিদের জমি দিতে ল্যান্ড ব্যাংকও গঠন করবে সরকার। বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করে জানিয়েছেন, তাঁর এই দলের স্ফুর্তি এবং প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা দুইই আছে।

 

মন্ত্রিসভার পোর্টফোলিয়ো ঘোষণা করা হল আজ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দায়িত্ব পেলেন বিজেপি সাংসদ অমিত শাহ। প্রতিরক্ষা দফতর পেলেন রাজনাথ সিং। নরেন্দ্র মোদীর প্রথম দফার কার্যকালের প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা নির্মলা সীতারমনকে দেওয়া হল কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব। বিদেশ দফতর সামলাবেন এস জয়শংকর।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কে কোন মন্ত্রক পেলেন দেখে নিই...

রেলমন্ত্রী - পীযুষ গোয়েল

নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী, বস্ত্রমন্ত্রী - স্মৃতি ইরানি

 মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী - পোখরিয়াল

সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী - মুক্তার আব্বাস নাকভি

পরিবহণ মন্ত্রী - নীতিন গডকরি

পরিবেশ, বন ও আবহাওয়ার পরিবর্তন মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী - বাবুল সুপ্রিয়

কর্মীবর্গ মন্ত্রক, মহাকাশ গবেষণা, পরমাণু শক্তি, পেনশন থাকছে প্রধানমন্ত্রীর হাতে

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...