৫৫ বছর পর মিললো উত্তর

 

মহাকাশ নিয়ে গবেষণা চলছে প্রতিনিয়ত। আবিষ্কৃত হচ্ছে নতুন গ্যালাক্সি। তারই সাথে খোঁজ মিলছে নতুন নতুন গ্রহ নক্ষত্রের। মিলছে বহুযুগ পুরোনো ব্ল্যাকহোলের খোঁজও। সম্প্রতি, এক দানবাকৃতি কৃষ্ণগহ্বরের খোঁজ জাগিয়ে তুলেছে আজ থেকে ঠিক ৫৫ বছর আগের কিছু স্মৃতি। একজন বিজ্ঞানীর অক্লান্ত পরিশ্রম আজ স্বীকৃতি পেয়েছে। জন্মসূত্রে ভারতীয়, নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন অ্যাস্ট্রোফিজিক্স গবেষক সুব্রহ্মণ্যম চন্দ্রশেখর। তিনি আজ থেকে ৫৫ বছর আগে তিনি খোঁজ পেয়েছিলেন আদি ব্রহ্মান্ডের কোলে একটি ক্ষুদ্র ব্ল্যাকহোলের। সেই ব্ল্যাকহোলটি স্বমহিমায় আত্মপ্রকাশ করেছে এতদিন বাদে।

 

আপাদমস্তক গ্যাসের চাদরে মুড়ে থাকা ব্ল্যাকহোলটি যখন সৃষ্টি হয়েছিল তখন ব্রহ্মান্ড ছিল একেবারে শিশু। সেই সময় ব্রহ্মান্ডের বয়স ছিল মাত্র ৮৫ কোটি বছর। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে হিসেবে বলছে, বর্তমানে ব্রহ্মান্ডের বয়স ঠিক ১৪০০ কোটি বছর। সেই সময়েই ব্ল্যাকহোলটির ভর ছিল সূর্যের ভরের থেকে বেশ কয়েকগুন বেশি। পৃথিবী থেকে বহুদূরে অবস্থিত এবং তার উপর মেঘের চাদরে ঢাকা থাকার কারণে এর আগে চোখে পড়েনি এই ব্ল্যাকহোলটি।জানা গেছে, প্রথম থেকেই রাক্ষসাকৃতি বা দানবাকৃতি ছিল এই ব্ল্যাকহোলটি। এই ব্ল্যাকহোলটি প্রথম থেকেই দানবাকৃতি হওয়ার কারণে প্রথম থেকেই তার প্রয়োজন ছিল অনেক বেশি পরিমান খাবারের। তাই তার পাশে জমা ছিল সেই গ্যাসের মেঘপুঞ্জ। আর গ্যাসের মেঘের আড়ালে থাকার কারণে মানবচক্ষুর অগোচরেই থেকে গেছিলো এই ব্ল্যাকহোলটি।

 

১৯৬৪ সালে চন্দ্রশেখরবাবু প্রথম তাঁর গবেষণাটির কথা জনসমক্ষে আনেন। সেই গবেষণাতেই তিনি গাণিতিকভাবে দেখিয়েছিলেন যে এমন ঘটনা ভবিষ্যতে ঘটতে পারে। তাঁর "থিওরি অফ স্ফেরিক্যালি কোলাপস গ্রাভিটেশনাল ইনস্টেবিলিটি"তে তাঁর সমগ্র গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। সে যে আছে তার প্রমান মিলেছিল অনেকদিন আগেই কিন্তু মানবচক্ষুর সামনে কিছুতেই আনা যাচ্ছিলনা তাকে। অবশেষে এক্স রে এবং রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে ধরা পড়লো সেই রাক্ষুসে কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাকহোলের ছবি। গবেষকরা জানিয়েছেন, ব্ল্যাকহোল যখন গ্যাসের মেঘের আড়ালে থাকে তখন তার থেকে একটুও আলো বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে না। সেই সময় তাকে প্রায় দেখাই যায় না। সেই সময় এই দৃশ্য পরিলক্ষিত হতে গেলে প্রয়োজন উন্নত মানের প্রযুক্তি যা ৫৫ বছর আগে বিজ্ঞানীদের কাছে উপলব্ধ ছিল না। সেই কারণেই সেই সময় খোঁজ মেলেনি এই ব্ল্যাকহোলটির। সম্প্রতি, নাসার চাঁদ এক্স রে 'অবজারভেটরি'র চোখে ধরা পরে এই ব্ল্যাকহোলের ছবি। এই প্রথম আদি ব্রহ্মান্ডের কোনো ব্ল্যাকহোলের খোঁজ মিললো। আর খোঁজ অন্য যে অবজারভেটরি তার নামও রাখা হয়েছিল এই অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বিজ্ঞানীর নামেই। এর নাম ছিল পিএসও-১৬৭-১৩

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...