পৈশাচিক ও জঘন্যতম কাজ চরমে পৌঁছে গেলে তাকে বর্ণনা করার মতো শব্দ খুঁজে পাওয়া যায় না। ডিসেম্বর ২০১২ আমাদের সবাই আঁতকে উঠতে বাধ্য করেছিল। দিল্লির রাস্তায় ঘটে গিয়েছিল এক চরম অপরাধ যা মানুষ শুনলে আঁতকে উঠবেই। এমন অপরাধ হয়ত কেউ করার ভাবতেও পারে না বলে মনে হয়ে। কিন্তু না, এমনটা ভাবাও হয়েছিল এবং করাও হয়েছিল। দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেশবাসী কেন সারা বিশ্বের মানুষ শিউরে উঠেছিল।
'দিল্লী ক্রাইম' হল একটি কাল্পনিক ক্রাইম ড্রামা। এটি এই যন্ত্রণাদায়ক তদন্তের ওপর ভিত্তি করে তৈরী হয়, যা এই দুই যুগলকে আক্রমণকারী ছয় ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার কাহিনীকে তুলে ধরে। সিরিজটি মূলত দিল্লী পুলিশের কেস ফাইল থেকে অনুপ্রাণিত, বলা যায় একেবারে কেস ফাইল এর ওপর ভিত্তি করেই সিরিজটি তৈরী হয়। খুব নিপুণ ভাবে এই সূক্ষ্ম কাহিনীটিকে আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন সিরিজটির পরিচালক Richie Mehta। আমরা সবাই বুঝি এই কাহিনীর গুরুত্ব কতটা ও এটা এতটাই সংবেদনশীল একটি বিষয় যা নিয়ে কথা বলতে গেলে সতর্ক থাকা জরুরি বটে, যা খুব সুচারুভাবে করেছেন পরিচালক। কাহিনীটি পুরোপুরি অপরাধীদের গ্রেপ্তার করার ওপরই নির্ভর করে থাকে। কাহিনীর প্রধান চরিত্র 'ভার্তিকা চতুর্বেদী' (পুলিশ কমিশনার) তাঁর সবচেয়ে মজবুত দল তৈরী করে ফেলে কিছু সময়ের মধ্যেই। আর পরিকল্পনামাফিক এক এক করে অপরাধীদের ধরার চেষ্টা করতে থাকে। এক গতানুগতিক ভুল ভাবনা আছে যে কোনো অপরাধ ঘটলেই আমরা মনে করি পুলিশের গাফিলতি আছে, কিন্তু এই ভাবনাকে ভুল প্রমাণিত করে দেয় এই কাহিনী। সত্যটা যে কতটা উল্টো তা দায়িত্ব সহকারে দেখানো হয়।
সিরিজটি আমাদের এই ঘৃণ্য অপরাধের কথা মনে করিয়ে দেয় বটে এবং সাথে সাথে দেখায়, হয়ত অনেক সময় দিল্লির মত বড় শহরের রাস্তায় প্রত্যেকটি ক্রাইমকে প্রতিরোধ করা যায় না কিন্তু পুলিশ নিজের জীবনের সুখ, শান্তি বিসর্জন দিয়ে চেষ্টা করে যায় কিভাবে অপরাধীদের ধরা যায়। সাতটি পার্ট -এ বিভক্ত এই সিরিজটি আমাদের সেই অপরাধের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় যা ঘটা উচিত ছিল না।
অভিনয়ে শেফালী শাহ অনবদ্য কাজ করেছেন। ভিক্টিম মেয়েটির সমস্ত অনুভূতি যেমন প্রত্যেক নারীকে নাড়িয়ে দেয় সেই আবেগটা শেফালী শাহ খুব নিপুণ ভাবে দেখেয়েছেন। সিরিজটির শেষে হয়তো দ্বিতীয় ভাগের একটা ঝলক থাকে।