বহুজাতিক খাদ্য প্রস্তুতকারী সংস্থা নেসলে কোম্পানিকে চেনেন না এমন মানুষ খুব কমই রয়েছে। এই কোম্পানি বিশ্বের বহু দেশের মতোই ভারতেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে, নেসলের অন্যতম জনপ্রিয় হল শিশুখাদ্য।
বেশিরভাগ আমজনতাই এই ব্র্যান্ডের শিশুখাদ্য কেনেন।
কিন্তু জানেন কী এই শিশুখাদ্যগুলিতে মেশানো হচ্ছে চিনি? অথচ ব্রিটেন, জার্মানি, সুইজারল্যান্ডের মতো উন্নত দেশে একই পণ্যে তারা চিনি মেশানো হয় না।
হ্যাঁ এমনটাই জানা গিয়েছে ‘পাবলিক আই’ নামের এক সংস্থার রিপোর্ট থেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে জানা গিয়েছে যে এই নেসলে সংস্থার তৈরি শিশুখাদ্যে চিনি মেশানোর এই প্রবণতা খুবই বিপদজ্জনক। ফলে, স্থূলত্বের মতো সমস্যা তৈরি হবে বাচ্চাদের মতে।
এই অভিযোগে নেসলে কোম্পানি অস্বীকার করেনি। নেসলে ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে যে গত পাঁচ বছরে চিনির পরিমাণ ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রিপোর্টে কী বলা হয়েছে? ব্যপারটা খোলসা করে বলা যাক। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে ভারতে নেসলের ১৫ ধরনের সেরেল্যাক পণ্য বিক্রি করা হয়। তার মধ্যে প্রত্যেকের মধ্যেই চিনি মেশানো হয়। প্রতিবার যে পরিমাণ সেরেল্যাক সার্ভ করা হয়, তাতে ৩ গ্রাম করে চিনি থাকে।
অন্যদিকে, ইথিওপিয়া ও থাইল্যান্ডের মতন দেশে এই চিনির পরিমাণ বেরে যায় প্রায় ৬ গ্রাম। কিন্তু জার্মানি কিংবা ব্রিটেনের মতন দেশে কোনও চিনিই মেশানো হয় না।
ফলে, এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতেই নেসলে শিশুখাদ্যে চিনি মেশানো হয়। এই পণ্যগুলির প্যাকেটে পুষ্টি সংক্রান্ত সমস্তরকম তথ্য দেওয়া থাকলেও চিনির বিষয়টি উল্লেখ করা থাকে না। জানা গিয়েছে ২০২২ সালে, ভারতে ২০ হাজার কোটিরও বেশি সেরেল্যাক বিক্রি হয়েছে।
কিন্তু এই শিশুখাদ্যে নেসলের এই চিনি মেশানোর প্রবণতা কতটা বিপজ্জনক? এই বিষয়ে ব্রাজিলের পারাইবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিভাগের অধ্যাপক রডরিগো ভিয়ানা জানিয়েছেন যে এই বিষয়টা খুবই উদ্বেগজনক। শিশু ও কমবয়সিদের খাদ্যে অতিরিক্ত চিনি মেশানো উচিত নয়। এটা অপ্রয়োজনীয় তো বটেই, অত্যন্ত আসক্তি সৃষ্টিকারীও। এতে বাচ্চারা মিষ্টত্বের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। ফলে আরও বেশি মিষ্টি খাবারের দিকে ঝোঁকে। দেখা যায়, প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে পৌঁছনোর আগেই তাদের খাদ্যে পুষ্টির শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায়।
এছাড়া নেসলে ইন্ডিয়া কোম্পানির এক মুখপাত্র এই প্রসঙ্গে এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে এই সমস্ত স্থানীয় নিয়ম ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখেই তাঁদের পণ্য প্রস্তুত করা হয়। এছাড়া আরও জানানো হয়েছে যে গত পাঁচ বছরে এই শিশুখাদ্যে চিনির পরিমাণ প্রকায় ৩০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।