ইতিমধ্যে ৫০ বছর অতিক্রান্ত।তাও মানুষের মনে টাটকা রয়েছে গেছে সেই দিনের স্মৃতি। সেইদিন যেদিন নীল আর্মস্ট্রং প্রথম পা রেখে ছিলেন চাঁদের মাটিতে। দিনটা ছিল ১৯৬৯ সালের ২০শে জুলাই।সেই প্রথম চাঁদের মাটিতে কোনো মানুষের পা পড়েছিল। সারাবিশ্বের মানুষ সেদিন সাক্ষী ছিল এই বিরল ঘটনার।যে স্পেসস্যুট পরে আর্মস্ট্রং সেদিন চাঁদের মাটিতে পদার্পন করেছিলেন সেই স্পেসস্যুটটি আবারও জনসাধারণের সামনে নিয়ে এলো আমেরিকার স্মিথসোনিয়ানের এয়ার অ্যান্ড স্পেস মিউজিয়াম।
এর আগেও প্রায় ৩০ বছর ধরে এই স্পেসস্যুটটি স্মিথসোনিয়ানের গ্যালারিতেই রাখা ছিল।কিন্তু এক জায়গায় জিনিসটি রেখে দেওয়ার ফলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার একটি সম্ভাবনা তৈরী হয়। সেই সময় সেই স্পেসস্যুটটি গ্যালারি থেকে সরিয়ে যাওয়া হয়। গত ১৩ বছর ধরে নানা স্পেসস্যুট ডিজাইনারদের সাথে কথা বলে এই স্পেস্যুটটির সংরক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য হাতে পাওয়ার পরেই ফের জনসমক্ষে নিয়ে আসা হয় স্যুটটিকে।
নীল আর্মস্ট্রংয়ের ছেলে রিক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেনস ওইদিন উপস্থিত ছিলেন মিউজিয়ামে। মাইক পেনস জানান, আর্মস্ট্রংয়ের নিঃসন্দেহে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা।আজও মানুষের মনে টাটকা রয়েছে সেইদিনের স্মৃতি।সেই মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই তার ব্যবহৃত স্পেসস্যুটটি জনসাধারণের সামনে আনার হয়েছে।
আজ থেকে ঠিক ৫০ বছর আগে স্যাটার্ন ফাইভ রকেটের সাহায্যে অ্যাপেলো ১১ চন্দ্রযানে চেপে চাঁদের মাটিতে সফলভাবে পদার্পন করেছিলেন নীল আর্মস্ট্রং এবং তার দুই সাথী মাইকেল কলিন্স এবং এডউইন অস্ট্রিন। টানা আড়াই ঘন্টা চাঁদের মাটিতে হেঁটে তারা সংগ্রহ করেছিলেন নানা লুনার মেটিরিয়াল।এরপর একাধিকবার মানুষ ছুঁয়েছে চাঁদের মাটি। সম্প্রতি চন্দ্রযান ২ এর সাহায্যে আরেকবার চাঁদের মাটি স্পর্শ করার ইচ্ছে ছিল ভারতের কিন্তু জ্বালানি লিক করার কারণে আপাতত এই উৎক্ষেপণ স্থগিত রাখা হয়।
ওয়াসিংটন ডিসির মিউজিয়াম কিউরেটর জানান,এই স্পেসস্যুটটি এমনভাবে তৈরী করা যাতে এই স্যুটটি অত্যধিক ঠান্ডা বা অত্যধিক গরম, রেডিয়েশন, মহাজাগতিক বস্তুকণা সবকিছু থেকেই সেই নভোশ্চরকে রক্ষা করতে পারবে। জানা গেছে, এই স্পেসস্যুটটি ছিল ১৮০ পাউন্ড ওজনের এবং এই স্যুটটিতে ছিল মোট ২১টি লেয়ার।এই স্যুটটি তৈরী করতে সেই সময় খরচ হয়েছিল মোট এক লক্ষ ডলার যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৭ লক্ষ ডলার।তাই এই স্পেসস্যুটটি দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করা খুব সহজ কাজ নয়।এই স্যুটটি সংরক্ষণের খরচই ছিল প্রায় ৭ লক্ষ ডলার যা জোগাড় করার জন্য স্মিথসোনিয়ান মিউজিয়ামের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় একটি ফান্ড রাইজিং ক্যাম্পেইনের।মাত্র পাঁচ দিনেই প্রয়োজনমতো অর্থ সংগ্রহ করতে সমর্থ হয় সেই মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ। মিউজিয়ামের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংরক্ষণের সময় খেয়াল রাখা হয়েছে যাতে স্পেসস্যুটটির মধ্যে থেকে যাওয়া চাঁদের ধুলো যাতে ঝরে না যায়। আপাতত আমেরিকার স্মিথসোনিয়ান মিউজিয়ামের রয়েছে এই স্পেসস্যুটটি। তবে যারা দূরে থাকেন তাদেরও দুঃখ পাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তাদের জন্য থ্রি-ডি পদ্ধতিতে যাতে স্পেসস্যুটটি দেখা যায় তার ব্যবস্থা করবে মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ।