তিনি যখন গানের জগতে প্রথম পা দেন, তখন তাঁর রোজগার ছিল মাত্র ৫০টাকা। আজ একটি গানের জন্য তিনি পারিশ্রমিক নেন প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। একসময় তাঁর বাবা বিক্রি করতেন শিঙাড়া। দু-বেলা পেটপুরে খাবার পাওয়া যেত না বাড়িতে। বহু কষ্ট করতে হত গোটা পরিবারকে। গায়িকা নিজেও অনেক কষ্ট করে আজ এই জায়গায় এসেছেন। সোনার চামচ মুখে নিয়ে মোটেই জন্মানই তিনি।
জানেন কে সেই সংগীতশিল্পী? তিনি বলিউডের জনপ্রিয় গায়িকা নেহা কক্কর।
প্রায় অনেকেই মনে করেন যে খুব সহজেই গায়ক-গায়িকা, কিংবা অভিনেতা হওয়া সম্ভব। কোনও কষ্ট করতে হয় না তাঁদের। কিন্তু সেটা যে খুবই ভুল, তা বুঝিয়ে দেন তাঁরা। পাঁচজনের তুলনায় তাঁদের অনেক বেশি কষ্ট করে কঠিন জীবনযাপন করতে হয়। তবে, এটা সকলের সাথে হয় না, অনেকেই পরিবারের দৌলতে সাজানো জীবন পান। কিন্তু বেশির ভাগ সফল তারকাই জীবন ও কেরিয়ার শুরু করে আসেন শূন্য থেকে।
ঠিক এমনটাই ঘটেছিল নেহার জীবনে। ছোটবেলা থেকে অনেক কষ্ট করে সংগীতজগতে নিজের জায়গা শক্ত করতে হয়েছে তাঁকে। বর্তমানে কোটি কোটি শ্রোতা তাঁর গানে মুগ্ধ। তাঁর গান শোনার জন্য মুখিয়ে থাকেন বহু অনুরাগীরা। শুধু দেশে নয়, বিদেশেও বিখ্যাত নেহা।
উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশে ৬ জুন ১৯৮৮ সালে জন্ম নেহার। পরবর্তীকালে তাঁর পরিবার ১৯৯০ সালের দিকে দিল্লিতে চলে আসে মেয়ের গানের স্বপ্ন পূরণের উদেশ্যে। খুব অল্প বয়স থেকেই গানের চর্চায় মেতে ছিলেন নেহা। তারপর ছোট বয়স থেকেই গানের মাধ্যমে শুরু হয় তাঁর রোজগার। সেই টাকা দিয়েই নিজের পরিবারকে যতটা পারতো সাহায্য করতো। এমনকি অন্যদের বিয়ের অনুষ্ঠানে গান গেয়েও সংসার চালিয়েছেন তিনি।
মাত্র চার বছর বয়সে, তিনি স্থানীয় অনুষ্ঠান এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে শুরু করেন। বলিউডে যাত্রা মোটেই সহজ ছিল না তাঁর জন্য। কঠোর পরিশ্রম করেন তিনি। জানা যায় যে ছোটবেলায় নেহা ও তাঁর ভাই এবং বোন সোনু কক্কর এবং টনি কক্করের সাথে নবরাত্রির সময় চৌকিতে গান গাইতেন। একসময় ভজন গাওয়ার জন্য তিনি মাত্র ৫০ টাকা নিতেন।
২০০৪ সালে নেহা ও তার ভাই টনি মুম্বইয়ে থাকতে শুরু করেন। এরপর দু-বছর পরে, আঠারো বছর বয়সে, ইন্ডিয়ান আইডলের দ্বিতীয় মরসুমের জন্য অডিশন দেন তিনি, তবে ভাগ্য তখন তাঁর সঙ্গে সঙ্গ দেয়নি। তাই প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ে যান। তবে, হাল ছাড়েননি। তাই আজ এই জায়গায়। শোনা যায়, নেহা কক্কর একটি গানের জন্য ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক নেন।