এনসিইআরটি পরিবর্তন আনল দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ে, ঢুকল ৩৭০ রদ

আসন্ন শিক্ষাবর্ষে এনসিইআরটি বেশ কিছু পরিবর্তন আনল দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ে। সেখানে কিছু প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হয়েছে, আবার যোগও করা হয়েছে। এছাড়া কিছু প্রসঙ্গের ভাষ্য বদল করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে যে নতুন প্রসঙ্গ যোগ করার মধ্যে রয়েছে জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ। সেই বইয়ের ১৩২ নম্বর পাতায় আগে লেখা ছিল, ‘‘বেশির ভাগ রাজ্যেরই সমান ক্ষমতা রয়েছে। তবে জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ বিধান আছে।’’

এখন সেই লেখাকে বদল করে নতুন লেখা দেওয়া হয়েছে। এখন লেখা আছে, ‘‘বেশির ভাগ রাজ্যেরই সমান ক্ষমতা রয়েছে। তবে জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ বিধান আছে। তবে জম্মু-কাশ্মীরের জন্য বিশেষ বিধান ছিল সংবিধানের যে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে, সেটি ২০১৯-এর অগস্টে রদ হয়ে গিয়েছে।’’  

এই বিষয়ে এনসিইআরটি জানিয়েছে যে এই পরিবর্তন করা হয়েছে নতুন তথ্যের দিলে লক্ষ্য রেখেই।

শুধু তাই নয়, এই প্রসঙ্গ ছাড়াও বদল করা হয়েছে আরও কিছু অংশে। সেটা হল, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের ২৫ নম্বর পাতায় ভারত-চিন সম্পর্কের প্রসঙ্গ ছিল।

সেখানে ‘হিন্দি-চিনি ভাই ভাই’-এর আবহ বদল নিয়ে লেখা ছিল, ‘‘দু’টি দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে সামরিক সংঘর্ষের ফলে সে আশা নির্বাপিত হয়।’’ বর্তমানে এই বাক্যটি হয়েছে, ‘‘ভারতীয় সীমান্তের চিনা আগ্রাসনের ফলে সে আশা নির্বাপিত হয়।’’

এছাড়া, বইয়ে ১১৯ পাতায় অধিকৃত কাশ্মীর প্রসঙ্গে আগে লেখা ছিল, ‘‘ভারত এই এলাকাটিকে বেআইনি দখলদারি বলে মনে করে। পাকিস্তান আবার এটিকে বর্ণনা করে ‘আজাদ কাশ্মীর’ বলে।’’

এখন সেখানে লেখা হয়েছে, ‘‘ভারতীয় ভূখণ্ডের এই অংশটি পাকিস্তান বেআইনি ভাবে দখল করে রেখেছে। এই এলাকাটিকে বলা হয় ‘পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর’।’’

এই বিষয়ে এনসিআরটি যুক্তি দিয়েছে যে জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে ভারত সরকারের বর্তমান অবস্থানই এখানে প্রতিফলিত হয়েছে।

তবে, বাদ দেওয়া হয়েছে খলিস্তান প্রসঙ্গ।

১২৩ নম্বর পাতায় আগে ছিল, ‘‘এই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করার আবেদন ছিল। কিন্তু একে পৃথক শিখ জাতি গঠনের আবেদন হিসেবেও ব্যাখ্যা করা যায়।’’ তারপর দ্বিতীয় অনুচ্ছেদে লেখা ছিল, ‘‘ক্রমশ আরও চরমপন্থীরা বিচ্ছিন্নতার দাবি জানাতে থাকেন।’’

এখন এই দ্বিতীয় বাক্যটি বাদ গিয়েছে। প্রথম বাক্যটিতে শুধু লেখা রয়েছে, ‘‘এই প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করার আবেদন ছিল।’’

এনসিইআরটি এই বিষয়ে জানিয়েছেন যে এই পরিবর্তন আগেই অনলাইনে করা হয়েছিল। এখন থেকে সেটা বইতেও ছাপানো হল।

এছাড়াও বইয়ে একটি ব্যঙ্গচিত্রও বাদ দেওয়া হয়েছে। ১৫৫ নম্বর পাতায় আগে একটি ব্যঙ্গচিত্র ছিল। আর ক্যাপশনে লেখা ছিল,‘ভারতীয় গণতন্ত্র বাঁচবে কি?’

জানা গিয়েছে যে এখন ওই ব্যঙ্গচিত্র এবং প্রশ্ন দুটোই বাদ পড়েছে।

তার জায়গায় ভারতের বিকাশ সম্পর্কে একটি তালিকা এসেছে।

এই বিষয়ে জানানো হয়েছে যে ২০১৪-পরবর্তী ভারত সম্পর্কে যাতে কোনও নেতিবাচক ধারণা না ছড়ায়, সে দিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...