নারী আর সৌন্দর্য যেমন একে অপরের পরিপূরক তেমনই নারী সৌন্দর্যের এক বিশেষ দিক হলো লম্বা কালো ঘন চুল। আগেকার দিনে যখন মা কাকিমারা পিঠের উপর একরাশ কালো চুল খুলে ছাদের রোদে চুল শুকোতে যেতেন, তাদের রূপ তখন ভোলাতো সকলকেই। দেশি নারী বা বিদেশী, চুল সবার প্রাণের খুব কাছের হয় এবং যতটা সম্ভব তাকে রক্ষা করার চেষ্টা করে থাকে সকলে। কিন্তু যুগ বদলাচ্ছে তার সাথে বদলাচ্ছে সাজ পোশাকও। সাজ পোশাক বদলানোর সাথে সাথেই বদলে যাচ্ছে চুলের সাজ। যেই খোলা চুল এক সময়ে জ্বালা ধরাতো পৌরুষ মনে সেই একঢাল কালো চুল এখন খুব বেশি দেখা যাচ্ছে না। কেউ চুল করছে স্ট্রেট তো কেউ করছে কার্লি। কেউ বা তার চুলে দিচ্ছে রঙের ছোঁয়া। চুলে এইসব স্টাইল করতে গিয়ে তাদের চুলের যেমন ক্ষতি হচ্ছে সেরকম অহেতুক খরচ বেশি হচ্ছে। আসলে, জীবনের নানা সময়ে নানা রকম এক্সপেরিমেন্ট করতে সবারই ইচ্ছে করে। কারোর ইচ্ছে হতেই পারে চুলে হাইলাইট করার। কিন্তু হাইলাইট করার আগে চুলে করতে হয় ব্লিচ। আর ব্লিচ চুলের কোন প্রকারের ক্ষতি করে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু যদি ভেষজ উপায়ে চুলে হাইলাইট করা যায় তাহলে কেমন হয়?
অবাক হচ্ছেন তো শুনে? যে ভেষজ উপায়ে আবার হাইলাইট কি করে করা যায়? কিন্তু আপনি ঠিকই শুনেছেন। ভেষজ উপায়েই চুলে হাইলাইট করা যায়। হাইলাইট করার অর্থ হলো সমস্ত চুলে নয় চুলের বিশেষ কিছু অংশের রং বদলানো। অনেকে অনেকরকম রঙের হাইলাইট করে থাকে চুলে। কিন্তু সবটাই হয় কেমিক্যাল উপায়ে। সবচেয়ে সস্তা উপায়ে ভেষজভাবে চুলে হাইলাইট করার কিছু সহজ পদ্ধতি হলো-
১) চুলে হাইলাইট করার জন্য সবচেয়ে সহজলভ্য উপাদান হলো লেবুর রস। একটি পাত্রে ৩ থেকে ৪ চামচ লেবুর রস নিয়ে তাতে সমপরিমাণ জল মেশান। এবার যেই অংশটি হাইলাইট করতে চান সেই জায়গাটিতে এই মিশ্রণ লাগিয়ে একটি অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়ে মুড়ে রাখুন। মিশ্রণটি শুকিয়ে গেলে ফয়েল খুলে চুলের সেই জায়গাটি ভালো করে ধুয়ে নিন। কিছু সময় রোদে বসে চুল শুকিয়ে নিন। তারপর দেখুন কত সুন্দর হাইলাইট হয়ে গেছে আপনার চুল।
২) ঘরোয়া উপায়ে চুল রং করার অন্য একটি সামগ্রী হলো চা পাতার জল বা লিকার। তবে তা যে সে চা নয়। সবচেয়ে ভালো ফলের জন্য ক্যামোমাইল চায়ের প্যাকেট কিনে আনুন। এই টি ব্যাগ গরম জলে রেখে দিন যতক্ষন না পর্যন্ত ব্যাগ থেকে রং বেরোচ্ছে। রং ভালো মতো বেরিয়ে গেলে সেই রং ভালো করে জলে গুলে নিন। তারপর সেই জল দিয়ে চুল ধুয়ে তারপর রোদে বসুন। পরপর তিনবার এই পদ্ধতিতে চুল ধুলেই চুলে হালকা লালা আভা চলে আসবে।
৩) চুল হাইলাইট করার অন্য একটি উপাদান হলো দারুচিনি। কয়েকটি দারুচিনি প্রথমে গুঁড়ো করে নিন। তারপর দারুচিনি গুঁড়োর সাথে পছন্দের কন্ডিশনার মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করে নিন। তারপর সেই মিশ্রণ একটি ব্রাশের সাহায্যে চুলে লাগিয়ে নিন। মোটা দাঁড়ের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ে চুলে খোঁপা করে নিন। এরপর মাথায় একটি শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। ঘন্টা খানেক এইভাবে থাকার পর শ্যাম্পু করে নিন। দুর্দান্ত হাইলাইটের রং পেয়ে যাবেন।
মোট তিনটি পদ্ধতি এখানে আলোচনা করা হলো যা ব্যবহার করে একদম প্রাকৃতিক বা ভেষজ উপায়ে চুলে রং বা হাইলাইটিং করা যাবে। এর মধ্যে আপনার হাতের কাছে থাকা উপাদান দিয়ে আপনি আপনার চুলে হালকা রঙের ছোঁয়া দিতেই পারেন। তাহলে মন যদি চায় একটু সাজগোজ করতে আর চুল যদি চায় একটু রঙিন হতে তাহলে ক্ষতির চিন্তা ভুলে যান আর নিরাপদে সম্পূর্ণ ভেষজ উপায়ে চুলকে করুন হাইলাইট।