বয়স খুব বেশি হলে সাতের কাছাকাছি| তাতেই হার্ট সম্পূর্ণ ব্লক| স্বাভাবিকভাবেই তার প্রয়োজন পেসমেকার প্রতিস্থাপনের| কিন্তু দেশে পেসমেকার প্রতিস্হাপনের পরিকাঠামো অতটা ভালো নয়| মানুষের ক্ষেত্রে হলে এই নিয়ে এত ভাবনাচিন্তার কিছুই কিছুই ছিল না| কিন্তু চিন্তার বিষয় ছিল রোগীকে নিয়ে| রোগী যে আসলে একটি সারমেয়| সম্প্রতি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হয় একটি খবর| জানা যায়, সাড়ে সাত বছর বয়সী একটি ক্রকার স্পেনিয়েলের শরীরে বসেছে একটি পেসমেকার| যে চিকিত্সক অস্ত্রপ্রচার করেছেন তার দাবি, এই ঘটনা দেশে প্রথম| এর আগে কখনো কোনো সারমেয়র শরীরে পেসমেকার বসানো হয়নি|
খুশি নামক এই সারমেয়টির হার্ট সম্পূর্ণভাবে ব্লক হয়ে যাওয়ার কারণে খুশির হার্ট রেট কমে ২০তে গিয়ে পৌঁছেছিল| স্বাভাবিক হার্ট রেট অর্থাৎ প্রতি মিনিটে হৃদস্পন্দনের সংখ্যা যেখানে ৬০ থেকে ১২০ হওয়ার কথা সেখানে খুশির হার্ট রেট কমে হয়েছিল ২০| হার্টেরসাধারণ কাজকর্ম যেগুলি একজন প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তাও করতে সমস্যা হচ্ছিল খুশির হার্টের| প্রয়োজন অনুযায়ী ইমপালসও তৈরী করতে ব্যর্থ হচ্ছিল খুশির হৃদয়| ঠিক যতটা পরিমাণ রক্ত স্বাভাবিক অবস্থায় হার্টের মধ্যে দিয়ে পাস করে তার পরিমাণও অস্বাভাবিক হারে কমে যায়| এরফলে খুশি রক্তচাপ কমে যাওয়ার ফলস্বরূপ বারবার সংজ্ঞা হারাতে শুরু করে| পশুচিকিত্সক ভানু দেবশর্মা জানিয়েছেন, খুশির হার্ট রেট অত্যন্ত লো হয়ে গেছিল| এই অবস্থায় খুশিকে বাঁচানোর জন্য একমাত্র পেসমেকার প্রতিস্থাপনই ছিল একমাত্র পথ|
খুশির অভিভাবকরা জানিয়েছেন, এর আগে কান অপারেশনের সময় খুশি কোলাপস করে গেছিল| অনেক কষ্টে চিকিত্সকেরা সেই সময় তাকে বাঁচে| সেইসময়েই চিকিত্সকেরা সন্দেহ করে খুশির শরীরে নিশ্চই কোনো বড় সমস্যা রয়েছে যার কারণেই অপারেশনের পড়ে কোলাপস করে গেছিল খুশি| এরপর নানা পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে ধরা পড়ে খুশির হার্টের অবস্থা| এরপরেই ডক্টর ভানু দেবশর্মা এবং ডক্টর কুনাল দেবশর্মা তাদের ইউরোপিয়ান কলিগদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং খুশির শরীরে কৃত্রিম হৃদয় অর্থাৎ পেসমেকার বসানোর সিদ্ধান্ত নেনে তারা| তারাই জানান, ভারতবর্ষে এই প্রথম কোনো সারমেয়র শরীরে পেসমেকার বসানোর মতো ঘটনা ঘটল| তার সাথেই সারমেয় শরীরে পেসমেকার প্রতিস্থাপনে এক অনন্য নজির গড়ল ভারত|