“বিজয়ী বিশ্ব তিরঙ্গা প্যারা
ঝান্ডা উঁচা রহে হমারা”
শৌর্যের তেরঙ্গা । সাহসের তেরঙ্গা ।
গেরুয়া, সবুজ,সাদা তিন-রঙা এই পতাকা দেশবাসীর বিশ্বাস, ভরসা আর অস্তিত্বের প্রতীক। দেশ মাতৃকার সম্মান।
সে পতাকা দেখলেই হৃদয় জুড়ে জন্মভূমির টান।
১৯৪৭-এর ২২ জুলাই অর্থাৎ আজকের দিনে গণপরিষদের অধিবেশনে গৃহীত হয় জাতীয় পতাকার নকশা। পন্ডিত জওহরলাল নেহেরুর ডাকে দিল্লির কনস্টিটিউশন হলে এক হয়েছিলেন ভারতের গণপরিষদের সদস্যরা।
ওই বছরেরই ১৫ অগস্ট পতাকা ভারতের সরকারি পতাকার স্বীকৃতি পায়।
ভারতীয় প্রজাতন্ত্রেও জাতীয় পতাকার স্বীকৃতি বজায় রাখে।
দেশবাসীর কাছে পতাকা এই পতাকা ‘তেরঙ্গা’।
পতাকা তিন রং তিন গুণের প্রতীক।
গেরুয়া ত্যাগ। সাদা সত্য ও শান্তি। সবুজ বিশ্বাস ও প্রগতির প্রতীক।
পতাকাকে আজ আমরা যেভাবে দেখি আগে সেরকমটা ছিল না। বেশ কয়েকবার বিবর্তন ঘটে তবেই আজকের চেহারায় এসেছে।
প্রথম তেরঙ্গার প্রবর্তক মহাত্মা গান্ধী। সে পতাকা অবশ্য জাতীয় কংগ্রেসের জন্য। একই রকম গেরুয়া-সাদকা-সবুজ। মাঝখানে চরকা। দেশের অর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন ও দেশবাসীর শ্রমশীলতার প্রতীক হিসেবে এটি চিহ্নিত হয়।
স্বাধীন ভারতের পতাকায় চরকার স্থানে নিয়ে আসা হয় অশোকস্তম্ভ ।
১৪ আগস্ট মধ্যরাতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জহরলাল নেহেরু ১৫ আগস্ট লাল কেল্লার মাথায় প্রথম স্বাধীন দেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
আইন অনুসারে কেবলমাত্র খাদিবস্ত্রেই জাতীয় পতাকা প্রস্তুত করার নিয়ম।
পতাকার সম্মান রক্ষা দেশবাসীর কর্তব্য। সেই কারণে আছে 'ফ্ল্যাগ কোড অফ ইন্ডিয়া'।
পতাকার অসম্মান এবং ব্যবহারবিধি লঙ্ঘন দন্ডনীয় অপরাধ।
সেই অনুযায়ী, জাতীয় পতাকার আকার অবশ্যই আয়তাকার হতে হবে। যার মাপ হবে ৩:২ অনুপাতে। সূর্যাস্তের আগে জাতীয় পতাকাকে যথাযথ মর্যাদায় নামিয়ে নিতে হবে। আবার পতাকা উত্তোলন করলে সূর্যাস্তের আগে অবধি উত্তোলিত অবস্থাতেই রাখতে হবে।
ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে দেশের জাতীয় পতাকা কোনভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। পোশাকের অংশ হিসেবে বা পোশাক রূপে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করা যাবে না। জাতীয় পতাকাকে কোনভাবেই সেলাই করা যাবে না।
চাদর, গামছা, রুমালের মত কোনও কিছুতেই এই পতাকা প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। জাতীয় পতাকার উপর কোনও রকম লেখা বা কালির দাগ দেওয়া যাবে না।
উল্টোভাবে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করা মানে তা জাতির অবমাননা। জাতীয় পতাকার ব্যবহার করে কোন কিছু বহন করা যাবে না।
জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে গেলে অথবা ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় উত্তোলন করা অথবা অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
সরকারী এবং নাগরিক ক্ষেত্রে পতাকা ব্যবহারের ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম আছে। সে সব মেনে চলা নাগরিকদের জাতীয় কর্তব্য। এই পতাকার সম্মান রক্ষা করতেই সীমান্তে অতন্দ্র সেনাবাহিনী। পতাকার সম্মানে প্রাণ দিয়েছে বহু বিপ্লবী সন্তান। তবেই আজকের সার্বভৌম রূপ পেয়েছে দেশ।