মশা দমনে হাতিয়ার নাসা

কলকাতা মানেই মশার আঁতুড়ঘর। এই কথাটি কিন্তু অনেক জায়গাতেই শোনা যায়। বিশেষ করে যারা বাইরে থেকে কলকাতায় আসেন তাদের প্রায়শই মশা নিয়ে অভিযোগ করতে শোনা যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, মশার বাস শুধু কলকাতার নয়। কলকাতা ছাড়াও আমেরিকা, ক্যালিফোর্নিয়া, নিউ জার্সি এবং সান ফ্রান্সিসকোকেও একই ভাবে বিপদে ফেলেছে মশাকুল।

গত কয়েকমাস আগেই মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আমেরিকায় ড্রোন পাঠিয়েছিল গুগল।এবার সেখান থেকে আরেকধাপ এগিয়ে মশা দমনের দায়িত্ব নিলো আন্তর্জাতিক মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। জানা গেছে, মশা রুখতে এবার মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর কথা ভাবছে নাসা। নাসার সাথে এই কাজের জন্য হাত মিলিয়েছে আমেরিকার বহু ল্যাবরেটরি সংস্থা।ড্রোনের থেকেও শক্তিশালী অস্ত্র এবার মশা নিধনের জন্য ব্যবহৃত হতে চলেছে।মশা নিধন যজ্ঞের জন্য ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে ছোট-বড় নানা দলও। এছাড়াও থাকছে অত্যাধুনিক বিজ্ঞানসম্মত প্রযুক্তিযুক্ত এয়ার ট্র্যাপিং-এর ব্যবস্থা।এইসব যন্ত্রাদি ছাড়াও এই দলের কাছে মজুত থাকছে ম্যাপ, ক্যামেরা, গ্রাফ প্রভৃতিও।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এর মতে, শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়।মশা আতঙ্কে ভুগছে আমেরিকার মতো দেশও।সব দেশেই মশাবাহিত রোগের কারণে মারা যান প্রায় ১ কোটি মানুষ। সম্প্রতি এই সমস্যা আরও বেড়েছে বলেই জানিয়েছে হু। অন্যদিকে, ‘সেন্ট্রাল ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ এর তরফ থেকে জানান হয়েছে, প্রতিবছর গ্রীষ্মেই মশার উৎপাত সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। তা সে আমেরিকা হোক বা ক্যালিফোর্নিয়া কিংবা কলকাতা।বিগত কয়েক বছর ধরে এই অত্যাচার আরও বেড়েছে বলেই জানা গেছে।মশার অত্যাচারে নাজেহাল হয়ে অবশেষে স্যাটেলাইট পাঠানোর অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে নাসা।

কিন্তু স্যাটেলাইট কিভাবে মশা নিধনে সাহায্য করবে? কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউজিসি এমিরেটাস জুলজির প্রাক্তন অধ্যাপক সমীরণ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, মশা নিধনে কোনোভাবেই সাহায্য করবে না স্যাটেলাইট। স্যাটেলাইটের কাজ হবে কোন কোন অঞ্চলে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে তার চিত্র সকলের সামনে তুলে ধরা। নাসার এই মশা নিধন যজ্ঞের দলে থাকছেন পতঙ্গবিদ থেকে শুরু করে প্রাণীবিজ্ঞানীরাও। স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তথ্য যাবে এইসব মানুষের কাছে। যেসব জায়গার ছবি স্যাটেলাইটে ধরা পড়বে সেইসব জায়গায় পৌঁছে যাবে বিশেষজ্ঞের দল।এরপর তৈরি হবে সেই জায়গার ম্যাপ, তোলা হবে ছবি। আর এইসব তথ্য জমা হবে বিশেষজ্ঞদের কাছে থাকা চিপে। সবশেষে সমস্ত ডেটাবেস জমা হবে নাসার বিশেষ ওয়েবসাইটে।সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নানা পদক্ষেপ নেবে সরকারি দফতর।           

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...