ঘরোয়া উপায়ে নখের যত্ন

মেয়েদের কাছে একান্ত ব্যক্তিগত সাজানোর অঙ্গ হলো তার নখ। যা সে বেশ রংচঙে করে সাজিয়ে রাখতেই বেশি পছন্দ করে। লম্বা লম্বা নখে নানা রঙের নেলপলিশ লাগিয়ে সেই নখকে পরিপাটি করে সাজিয়ে রাখতে বেশিরভাগ মেয়েরাই অভ্যস্ত। সেই নখের যত্নের জন্য পার্লারে গিয়ে নেল এক্সটেনশন করাতেও পিছপা হয় না। সেই নখের যত্ন যদি ঘরোয়া উপায়েই করা যায় তাহলে কেমন হয় বলুন তো? নখের পিছনে পার্লারে গিয়ে আমরা যতটা সময় নষ্ট করে আসি ততটা সময় যদি আমরা ঘরেই ঘরেই করি তাহলে পয়সাও বাঁচবে আর নখও সুন্দর হবে।

তাহলে চলুন আজ ঘরোয়া উপায়ে নখের যত্ন কিভাবে করা যায় সেই উপায়ে নিয়ে আলোচনা করি......

রূপবিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিমাসে একবার করে ম্যানিকিওর করা প্রয়োজন। এতে নখেরই ভালো হয়। সেটাও পার্লারে গিয়ে করানোর কোনো প্রয়োজন নেই। ঘরোয়া উপায়েই ম্যানিকিওর করা যায়। নেল ম্যানিকিওরের অর্থ হলো, নখের এবড়োখেবড়ো অংশ সমান করা, নখের মধ্যে থাকা মোর কিউটিকল দূর করা, নখ পরিষ্কার করা এবং সর্বশেষ নেল পালিশ দিয়ে নখকে রাঙানো। তার জন্য আপনাকে যে দশটি স্টেপ ফলো করতে হবে তা হলো,

১) ম্যানিকিওর করার প্রসেস শুরু করার আগেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সব হাতের কাছে নিয়ে রাখুন। যাতে এই প্রসেস চালু হয়ে যাওয়ার পর জিনিসপত্র খোঁজার জন্য বারবার উঠে না যেতে হয়। এর জন্য যেসব জিনিসপত্র লাগবে তা হলো, নেলপলিশ রিমুভার, নেল কাটার, কটন প্যাড, নেল বাফার, কিউটিকল পুশার ও নিপার, কিউটিকল রিমুভার, কিউটিকল ক্রিম, হ্যান্ড ময়েশ্চারাইজার, বেস কোট,নেলপলিশ,আর ক্লিয়ার টপ কোট।    

২) প্রথমেই হাতের ও পায়ের যেসব নখে নেলপলিশ রয়েছে তা রিমুভারের সাহায্যে তুলে ফেলুন। নখে যেন নেলপলিশের লেশমাত্র না থাকে। এর জন্য অ্যাসিটোনবিহীন রিমুভার ব্যবহার করলে ভালো হয়। অ্যাসিটোনবিহীন রিমুভার নখের চারপাশের জায়গা শুকিয়ে যেতে দেয় না। অ্যাসিটোনযুক্ত রিমুভার নেইলপলিশের রং সহজে তুলতে পারলেও তা নখের ক্ষতিও করে থাকে। তাই অ্যাসিটোনবিহীন রিমুভার ব্যবহার করাই শ্রেয়।

৩) এরপর নেল কাটারের সাহায্যে নখের এবড়োখেবড়ো হয়ে যাওয়া অংশগুলো সমান করে নিন। খুব ছোট করে কাটবেন না। চেষ্টা করবেন সবকটি নখের শেপ যেন একইরকম হয়। নেল বাফার দিয়ে ঘষার সময় খেয়াল রাখবেন খুব জোরে ঘষবেন না। এতে নখের কিউটিকল ক্ষয়ে যেতে পারে। খুব বেশি সময় ধরে ঘষার ফলে নখ অত্যধিক মোলায়েম হয়ে যায় তার ফলে নখে নেলপলিশ লাগানো যায় না।

৪) এরপর একটি বড় কাঁচের বাটিতে উষ্ণ গরম জল নিয়ে তার মধ্যে বেবি শ্যাম্পু দিয়ে নিন। এবার মিনিট তিনেকের জন্য সেই জলে হাত চুবিয়ে রাখুন। এতে নখের মাসল রিল্যাক্স হবে। আর নখের কিউটিকল নরম হওয়ার সাথে সাথে নখ থেকে ধুলোবালি সহজেই বের করা যাবে। একটি নরম ব্রাশ দিয়ে নখের উপর ঘষতে থাকলেই ধুলোবালি সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। তবে বেশিক্ষন জলে হাত ডুবিয়ে রাখবেন না। এতে নখের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৫) এরপর নখের চারপাশে এবং আঙুলে ভালো করে কিউটিকল ক্রিম মালিশ করে নিন। কিউটিকল পুশার দিয়ে কিউটিকল ভিতরের দিকে ঠেলে দিন। তবে এই স্টেপটি আপনি চাইলে নাও করতে পারেন।

৬) আগের স্টেপটি যদি ফলো না করতে চান তাহলে হাত পরিষ্কার করার পরেই হাতে ভালো হ্যান্ড ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। ক্রিমটি যেন একটু বেশি ঘন হয় সেইদিকে খেয়াল রাখবেন। নখের চারপাশে এবং আঙ্গুলগুলিতে ভালো করে ক্রিম লাগান।

৭) এবার পালা নেলপলিশ পরার। নখে ক্রিম লেগে থাকলে সেখানে নেলপলিশ লাগে না। তাই আবারও অ্যাসিটোনবিহীন নেলপলিশ রিমুভার দিয়ে নখের উপর লেগে থাকা অতিরিক্ত ক্রিম তুলে দিন।

৮) এরপর নখের উপরে বেস কোট লাগিয়ে নিন।

৯) এরপর আর কি, পছন্দের নেলপালিশ দিয়ে নখ রাঙিয়ে নিন।

১০) সবার শেষে ক্লিয়ার কোট লাগিয়ে নিন। ব্যাস কাজ শেষ। তাই পার্লারে যাওয়ার কথা ভুলে যান আর ঘরে বসেই পেয়ে যান ঝকঝকে এবং ঝলমলে সুন্দর নখ।       

 

 

 

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...