হিরোশিমা শহরে ওপর নেমে এসেছিল ‘লিটিল বয়’-এর অভিঘাত। ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছিল ছবির মতো সুন্দর শহরটা। যুদ্ধ আর হিংসার ভয়ঙ্করতম চেহারা দেখে শিহরিত হয়েছিল গোটা বিশ্ব।
হিরোশিমায় বিস্ফোরণের ঘোরের মধ্যে ফের আরও এক ঘটনা কাঁপিয়ে দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। আর একবার। ‘লিটিল বয়’ বিস্ফোরণের ঠিক ৩ দিন পর জাপানের অপর শহর নাগাসাকির ওপর ফেলা হল ‘ফ্যাটম্যান’।
তিনিয়ন দ্বীপ থেকে বি-টোয়েন্টি নামে একটি বিমান দ্বিতীয় আনবিক বোমাটি নিয়ে নাগাসাকির উদ্দেশে রওনা হয়। এ বোমাটির নাম দেওয়া হয়েছিল ফ্যাটম্যান। বোমাটি ছিল গোলাকার প্লুটোনাম ক্ষেপণাস্ত্র।
সন ১৯৪৫। নাগাসাকি শহরে ৯ আগস্ট বেলা ১১টা ২ মিনিটে বোমাটি মাটি থেকে ৫০০ মিটার উপরে বিস্ফোরিত হয়। হিরোশিমায় ফেলা ‘লিটিল বয়’-এর থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল ‘ফ্যাট ম্যান'।
মুহুর্তের মধ্যে পুড়ে ঝলসে শেষ হয়ে গিয়েছিল ১ লক্ষ ৪০ হাজার প্রাণ। আহত আরও ৭৪ হাজার মানুষ। বোমার তেজস্ক্রিয়তায় সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায় শিশুদের মাথার চুল৷ শিশুরা খাওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে৷ যারা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তারা দীর্ঘদিন ধরে যুঝে মৃত্যুমুখী হয়। ১৯৫০ সাল নাগাদ আণবিক বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষে পৌঁছে যায়৷
ম্যানহাটন প্রজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, ক্যান্সার এবং অন্যান্য জটিল রোগে ভুগে পরবর্তী পাঁচ বছরে আরও দু'লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। আণবিক বিস্ফোরণে আহত হয়েও যারা প্রাণে বেঁচে যায় তাদের ‘#হিবাকুশা’ বলে ডাকা হত। নাগাসাকি শহর নতুন করে গড়ে উঠলেও নাগরিকদের ভয়, আতঙ্ক, মানসিক সংকট বয়ে চলেছিল প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
আণবিক বোমা বিস্ফোরণের ভয়াবহ স্মৃতিতে গড়ে তোলা হয়েছে নাগাসাকি অ্যাটমিকবম্ব মিউজিয়াম। ধ্বংসস্তূপ হয়ে যাওয়া দুই শহরের পরিণতি দেখে এক জোট হয়েছিল পৃথিবীর ত্রস্ত হয়েছিল শান্তিকামী মানুষ। শান্তির বার্তায়, সুস্থ পৃথিবীর লক্ষ্যে আজও চলছে সেই লড়াই..