শহর জুড়ে এখন সাজো সাজো রব। বাবুঘাটে ইতিমধ্যেই বহু ভক্ত সমাগম শুরু হয়ে গেছে। কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। তারই প্রস্তুতি চলছে শহরে। এবারে বেশ কিছু নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে মেলাকে কেন্দ্র করে, তা আমরা জেনেছি। আগামী কাল অর্থাৎ ৯ তারিখ থেকে শুরু করে ১৭ তারিখ অব্দি মেলা চলবে। পুণ্যস্নান ১৪ এবং ১৫ তারিখ। এই উপলক্ষে সোমবার ৭ডিসেম্বর উদ্বোধন হল গঙ্গাসাগর মেলা অফিসের। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের এই অফিসটি উদ্বোধন করেন বিভাগীয় মন্ত্রী মলয় ঘটক। উপস্থিত ছিলেন সংখ্যালঘু দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন মোল্লা, জেলা সভাধিপতি শামীমা শেখ, বিধায়ক বঙ্কিম হাজরা প্রমুখ।
এবারে গঙ্গাসাগর মেলার বিশেষ আকর্ষণ হতে চলেছে ম্যুরাল পার্ক। সাগর-বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে এই ম্যুরাল পার্কটি তৈরী করা হয়েছে। পরিকল্পনায় আছেন শিল্পী দুর্জয় সেন। গত ছয় মাসের বেশি সময় ধরে পুরাণের নানান বই থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই ম্যুরাল পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। আর্ট কলেজের প্রাক্তনী দুর্জয় সেনও পার্কটি তৈরী করতে পেরে যারপরনাই খুব খুশি। তিনি কাজটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলেন। তাঁর আশা, ভ্রমণার্থীদের এই কাজ নিশ্চয়ই ভালো লাগবে। এতদিন শুধু কপিলমুনির আশ্রম আর সমুদ্রতট-ই ছিল ভ্রমণার্থীদের কাছে প্রধান আকর্ষণ। কিন্তু রাজ্য সরকারের উদ্যোগে পরিকাঠামো উন্নয়নের ফলে সাগরে এখন সারা বছর ভিড় জমাচ্ছেন পুণ্যার্থী থেকে সাধারণ পর্যটকেরা। প্রতি বছর ভিন রাজ্য থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী আসেন এখানে। মন্দিরের ঠিক পাশে দুটি বিশাল ডালা আর্কেডের দেওয়ালে ফাইবার গ্লাস দিয়ে তৈরী করা হয়েছে ১২টি ম্যুরাল। প্রত্যেকটি ম্যুরালে সুন্দর মূর্তির মাধ্যমে থাকছে পৌরাণিক ব্যাখ্যা। বাংলা, হিন্দি ও ইংরিজিতে লেখা থাকছে এগুলি। পার্কটিকে আলো দিয়ে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। বসার জন্য কাঠের চেয়ারও তৈরী করা হয়েছে। ম্যূরালগুলোর পাশাপাশি একটি ফাইবার গ্লাসের শিবমূর্তি তৈরি করা হয়েছে। শিবের জটায় রয়েছে গঙ্গা। সেখান থেকে জলধারা নেমে এসেছে। পুরো বিষয়টি ফুটিয়ে তোলার জন্য নানান রঙিন আলো ব্যবহার করা হয়েছে। সত্যিই যে ম্যূরালগুলি ভ্রমণার্থীদের মন কেড়েছে, তা এখন থেকেই সেখানে ভিড় দেখেই বোঝা যাচ্ছে। চলছে দেদার সেলফি তোলা। তাই এবারের গঙ্গাসাগর মেলায় পুণ্যস্নানের পাশাপাশি দারুন বিনোদন অপেক্ষা করছে সকলের জন্য তা বলাই যায়।