সুদূর সীমান্তবর্তী জেলার এক কালীর কথা আজকের কালী কথায়। বনগাঁর গাড়াপোতা অঞ্চলে রয়েছে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, দেখলে মনে হবে ঠিক যেন দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দির। কিন্তু না, এখানে বিরাজ করছেন দেবী সিদ্ধেশ্বরী। বনগাঁ শহর থেকে মন্দিরের দূরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার, গাড়াপোতা অঞ্চলের এই মন্দিরটি নবরত্ন ঘরানায় নির্মিত। বনগাঁ স্টেশনে নেমে যেতে হবে মতিগঞ্জ মোড়। সেখান থেকে অটো বা বাসে চেপে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির স্টপেজে নাম হবে। কাছেই বাগদা-বনগাঁ রোড। বিপদে-আপদে দেবী সিদ্ধেশ্বরীই বনগাঁবাসীর ভরসা। যিনি সিদ্ধি প্রদান করেন, তিনিই তো সিদ্ধেশ্বরী।
ভক্তদের বিশ্বাস মন্দিরের দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। দেবী চতুর্ভুজা। তাঁর পদতলে শ্বেতশুভ্র মহাদেব। গাত্রবর্ণ নীল। দেবীর কাছে কোনও প্রার্থনা করা হলে, তা পূর্ণ হয়। বাংলার বেশিরভাগ সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরেই দক্ষিণাকালী প্রতিষ্ঠিত। দেবী সিদ্ধেশ্বরীর মন্দিরের মুখোমুখি রয়েছে শিব মন্দির। শিব মন্দির তৈরি হয়েছে তারকেশ্বরের শিব মন্দিরের আদলে। নাম সিদ্ধেশ্বর শিব মন্দির। মন্দিরের পাশ দিয়ে কোনও একসময় বয়ে গিয়েছিল ইছামতী। এখন ইছামতী গতিপথ পরিবর্তন করেছে, তৈরি বাওর আজও রয়ে গিয়েছে।
প্রতিদিন নিত্য পুজো হয়। ফি দিন দেবীকে ভোগ নিবেদন করা হয়। মন্দিরের বয়স ৪৩৫ বছর। একদা মন্দির ছিল অন্য রকম। প্রাচীন ও জাগ্রত দেবী পূজিতা হতেন ছোট একটি মন্দিরে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ভক্তদের অর্থানুকূল্যে আজকের রূপ পেয়েছে মন্দিরটি। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, যাঁর কেউ নেই, তাঁর আছেন দেবী মা সিদ্ধেশ্বরী। প্রতি বছর ভাদ্র মাসে কৌশিকী অমাবস্যা, কার্তিকে দীপান্বিতা অমাবস্যা ও জৈষ্ঠ্য মাসে ফলহারিণী অমাবস্যার রাতে দেবীর বিশেষ পুজো হয়। বিপুল সংখ্যায় ভিড় করেন ভক্তরা। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন।