ভূত বা প্রেতাত্মা নিয়ে গবেষণার অন্ত নেই। সেই প্রাচীন কাল থেকে শুরু করে বর্তমানেও এ বিষয়ে নানা তর্ক-বিতর্ক, আলোচনা প্রচলিত। স্থান-কাল-সময় ভেদে ভৌতিক ক্রিয়া কলাপ বিষয়ে মত পার্থক্য দেখা দিলেও তাদের মূল বক্তব্য হল ভূতেদের অস্তত্ব আছে অথবা নেই। কেউ কেউ মনে করেন অতৃপ্ত আত্মারা চারিদিকে ঘুরে বেড়ায় নিজের অপূর্ণ ইচ্ছাকে পূরণ করার জন্য। আবার কারোর মতে এগুলি পুরোটাই কাল্পনিক। তবুও মানুষের ভূত বিষয়ক কৌতুহলের অন্ত নেই। অপরদিক থেকে দেখতে গেলে এলিয়েন এবং তাদের যান UFO বিষয়েও মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। আদৌ কী ভীন গ্রহের প্রানীদের অস্তিত্ব আছে? নাকি এগুলি শুধুই কল্পনা। এলিয়েন বিষয়ে গবেষণার অন্ত নেই। মাঝে মধ্যেই শুনতে পাওয়া যায় অমুক জায়গায় UFO দেখা গেছে। আদৌ তা কতটা সত্যি তার বিচারেই চলছে গবেষণা। যেমন কিছুদিন আগেই রেডিও সিগনাল পাঠানো হয়েছে এলিয়েনদের উদ্দেশ্যে। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো রিটার্ন সিগনাল আসেনি। আর উক্ত দুই বিষয় নিয়েই কিন্তু মানুষের কৌতূহল তুঙ্গে। বিভিন্ন ভূতুড়ে বাড়ির সন্ধান পাওয়ার সাথে সাথে নানা বই ও সিনেমার মধ্যও ভূত এবং এলিয়েন বহু চর্চিত একটি বিষয়। এবার ভেবে দেখুন যদি এই এলিয়েন এবং ভূতকে মিশিয়ে কোনো আস্তানার সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে কেমন হত? শুনতে অদ্ভুত লাগলেও ঠিক এমনই এক জায়গার সন্ধান পাওয়া গেলো জাপানের তাইওয়ানে।
জাপানের অন্তর্ভুক্ত তাইওয়ানের ওয়ানলি ভিলেজ একটি রহস্যময় স্থান। এখানে যেমন ভৌতিক গা-ছমছমে ব্যাপার রয়েছে ঠিক তেমনি সঙ্গে রয়েছে UFO হাউসের রহস্য। এবার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে UFO হাউস আবার কী বস্তু? তাইওয়ানের ওয়ানলি ভিলেজে এলিনেয় যান অর্থাৎ UFO-এর আদলে তৈরী এক বিশেষ আকৃতির বাড়ি লক্ষ্য করা যায়। কয়েকটি গোলাকার কিংবা ডিম্বাকৃতি আবার কিছু কিছু চৌকো আকৃতির। সাধারণ ভাবে দেখতে গেলে বাড়িগুলি দেখে UFO মনে হবে। বাড়িগুলির ভিতরের আসবাবপত্র পর্যন্ত মডার্ন স্টাইলের। আশ্চর্যের বিষয় হল এই বাড়িগুলি ৭০-এর দশকে নির্মিত হয়েছিল। আরো রহস্যের বিষয় হল এই সম্পূর্ণ অঞ্চলটি জন মানব হীন। সব বাড়িগুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
৬০ এর দশকে ‘ম্যাটি সুরোনেন’ নামক একজন স্থপতী তাইওয়ানের এই শহরটির নকশা করেছিলেন। তবে ৭০-এর দশক থেকেই এই বাড়িগুলি খালি পড়ে রয়েছে। শোনা যায় আশে পাশের শহরে সাময়িক উন্নতির জন্য এখানকার মানুষজন অন্যত্র চলে যায়। বাড়িগুলি তৈরীর সময় এতটাই খরচা হয়েছিল যে বর্তমানে কেউ চাইলেই এই বাড়ি কিনতে পারবে না তার দামের জন্য। তাছাড়া আশে পাশের বাসিন্দারা মনে করেন এখানে অতৃপ্ত আত্মাদের বাস। শহরটি তৈরীর সময় রহস্যজনক ভাবে এখানকার লোকদের পথ দুর্ঘটনা ও আত্মহত্যার প্রবণতা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। তার পর থেকেই ওয়ানলি ভিলেজ অভিশপ্ত বলে মনে করা হয়। বর্তমানে এখানে কোনো মানুষ বসবাস করে না। এই অঞ্চল জুড়ে এতটাই আতঙ্ক যে দিনের বেলাতেও কোনো মানুষ সহজে আসতে চায় না থাকা তো দূর অস্ত। পর্যটকরা মাঝে মধ্যেই এই স্থান পরিদর্শনের জন্য এসে থাকেন। এখানে আদৌ কোনো ভূত বা এলিয়েন আছে কিনা সে বিষয়ে জল্পনার ঘোর কাটেনি তবে বাড়িগুলির আকৃতি কেনইবা এরকম অদ্ভুত হল তা জানা যায়নি। ওয়ানলি ভিলেজে গেলে মনে হবে যেন অন্য কোন প্ল্যানেটে এসে পড়েছি। এখানে সর্বত্র যেন নানা আকৃতির UFO দাঁড়িয়ে রয়েছে।