"এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হতো তুমি বলো তো"-গানের সাথে মহানায়ক এবং মহানায়িকার অন স্ক্রিন রসায়ন অনেকেরই মনে পড়ে যায় যখন ভালোবাসার মানুষের হাত ধরে রাস্তা পেরোনো হয়। আর তা না হলেও রাস্তার দীর্ঘ সময়ের ক্লান্তি কাটানোর জন্য অনেকেই সেই সময় গান শোনার কথা ভাবেন। তার জন্য গাড়ির মধ্যেই থাকতে হয় মিউজিক সিস্টেম কিংবা স্মার্টফোনের ইন্টারনেট কানেকশন। কিন্তু রাস্তা যদি নিজেই গান শোনায় তাহলে কেমন হয়? সত্যিই কি এরকম কোনো রাস্তা রয়েছে যে রাস্তা নিজেই গান শোনায়? না, রাস্তা তো গান গাইতে পারে না। তাহলে কিভাবে শোনায় রাস্তা গান? চলুন জেনে নেওয়া যাক...............
জাপানে রয়েছে এমন কয়েকটি রাস্তা যে রাস্তা দিয়ে গাড়ি গেলেই বেজে ওঠে নানা সুরেলা ধ্বনি। চালকদের একঘেয়েমি কাটাতে বেশ কয়েকটি মিউজিক্যাল রোড তৈরী করেছে জাপান। সম্প্রতি রিপোর্ট বলছে গোটা জাপান দেশে মোট ৩০টির ও বেশি এইধরণের মিউজিক্যাল রোড রয়েছে। এই মিউজিক্যাল রোডের আবিষ্কর্তা হলেন জাপানেরই একজন ইঞ্জিনিয়ার শিজুয়ো শিনোদা। তাঁর পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করেই সমগ্র জাপান শহর জুড়ে গড়ে উঠেছে নানাধরণের মিউজিক্যাল রোড। এর জন্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করতে দেখা গেছে। কোথাও অল্প ফাঁকা তো কোথাও তার থেকে একটু বেশি ফাঁকা এইভাবেই রাস্তায় চ্যানেল কাটতে দেখা গেছে। সেই চ্যানেলের উপর দিয়ে গাড়ি যাওয়ার সাথেই সাথেই শোনা যাচ্ছে সুরেলা শব্দ। তবে চ্যানেল কাটা কিন্তু একেবারেই সাধারণভাবে হয়নি। চ্যানেলগুলি এমনভাবে কাটা হয়েছে যার উপর দিয়ে গাড়ি যাওয়ার সাথে সাথে সৃষ্টি হওয়া শব্দ সৃষ্টি করে জাপানের কোনো লোকগাথা কিংবা জনপ্রিয় কোনো গানের সুর।
যেখানে অল্প ফাঁকযুক্ত চ্যানেল কাটা হয়েছে সেখানে দ্রুতলয়ের সুর সৃষ্টি হচ্ছে এবং যেখানে চ্যানেলের মধ্যে থাকছে দূরত্ব সেখানে ধীরলয়ের সুর সৃষ্টি হচ্ছে। জাপানে কোথায় কোথায় রয়েছে এইধরণের রাস্তা জানতে নিশ্চই ইচ্ছে করছে? জাপানের হোক্কাইডো, হিরোশিমা, কিমিনো, মাউন্ট ফুজি এবং গুনমাতে রয়েছে এইধরণের সুরেলা রাস্তা। জাপানের কিমিনো রাস্তা দিয়ে গেলেই সেখানে বেজে ওঠে জাপানের জনপ্রিয় লোকগাথা 'নিয়াগেত গোরান ইয়োরু'। সেরকমই গুনমা শহরে শোনা যায় সেখানকার জনপ্রিয় গান 'মেমোরিজ অফ সামার'।
উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার আজকাল সকল দেশেই কমবেশি দেখা যাচ্ছে। তবে রাস্তায় গাড়ি চালকদের একঘেয়েমি কাটাতে যে উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে জাপান দেশকে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।