খাস কলকাতায় হাড়ভাঙা রোগীর অপারেশন অ্যানাস্থেশিয়া ছাড়া শুধু গান শুনিয়ে

গান জুড়েছেন গ্রীষ্মকালে ভীষ্মলোচন শর্মা,

আওয়াজখানা দিচ্ছে হানা দিল্লী থেকে বর্মা !

গানের গুঁতোর শুরুতে সুকুমার রায় এই দুটি চরণ লিখেছিলেন। গান সুর-তাল-লয় হীন হলে তা গুঁতো দেয়, আর মধুর হলে তা ওষুধে পরিণত হয়। গানের গুঁতো নয়, গানের মাধুর্যতা নিয়েই সুন্দর হোক দুনিয়া। গুপীর গান রাজার ঘুম ভাঙিয়ে ছিল বলে, আমলকি গ্রামে তার আর থাকা হয়নি। পরে ভূতের রাজার বরে সেই গান দিয়েই গুপী শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখত। গানই এখন ধন্বন্তরি মহৌষধ। চৈনিক চিকিৎসা শাস্ত্রে বহুদিন ধরেই মিউজিককে চিকিৎসার একটি পদ্ধতি বিবেচনা করা হয়। প্রাচীন গ্রিসেও মিউজিক দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য, ভালো ঘুম হওয়ার জন্য ও ব্যথা কমানোর জন্যে ব্যবহৃত হত। আমেরিকানরা, আফ্রিকানরা গান গেয়ে ও সুর করে রোগীর ক্ষত দ্রুত কমানোর জন্য ভগবানের আছে প্রার্থনা করেন। আজকের পৃথিবীতে মিউজিক এক প্রকার থেরাপি। যা বেশ কার্যকর।

খাস কলকাতায় হাড়ভাঙা রোগীর অপারেশন হয়েছে সম্পূর্ণ অ্যানাস্থেশিয়া ছাড়া। লোকাল অ্যানাস্থেশিয়ার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের 'আকাশভরা সূর্য-তারা' বা 'আলোকের এই ঝর্ণাধারায়' ব্যাস! তাতেই অস্ত্রোপচারের যন্ত্রনা সয়ে নিচ্ছেন রোগী। পিজিতে ওপেন হার্ট, বাইপাস সার্জারির মতো জটিল অপারেশনের পরেও গানের জন্য অসহ্য যন্ত্রণা হেলায় সহ্য করছেন রোগী, সাথে সামান্য মাত্রার অ্যানালজেসিক।

ক্রমেই কলকাতা শহরের সরকারি বেসরকারি চিকিৎসাকেন্দ্রগুলিতে জনপ্রিয় হচ্ছে মিউজিক থেরাপি। অপারেশন টেবিলে ডাক্তারবাবুদের সহায় আর রোগীদের ভরসা রাগাশ্রয়ী যন্ত্রসঙ্গীত। চিকিৎসা ক্ষেত্রে সঙ্গীতের ম্যাজিক, আগেই দেখেছে সারা দুনিয়ায়!আসলে কেবল গান শোনালেই হবে না। শুনাতে হবে নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের স্বল্পমাত্রার শব্দ, প্রেরণা জোগানো ইতিবাচক সুর, মধ্য মাত্রার তাল-লয়, তবেই তা কার্যকর হবে অর্থাৎ বেদনানাশক এবং আরামদায়ক হবে। তবলা, ড্রাম এড়িয়ে ব্যবহার করতে হবে বেহালা, সেতার, সরোদ, গিটার। এই করোনা আবহে মার্কিন মুলুকে ভায়োলিন বাজাতে থাকা রোগীর মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকরা!

তবে তৃপ্তি দায়ক শব্দর প্রাবল্যকে বেঁধে রাখতে হবে ৪৮-৬৮ (DB)ডেসিবেলের মধ্যে। আমাদের সিটি অফ জয়ে একমাত্র রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৮ থেকে মিউজিক থেরাপি শেখানোর হয়। সেখানে অবশ্য শুধু মিউজিক নয়, শেখানো হয় পারফর্মিং আর্ট থেরাপিও। থেরাপির ক্ষেত্রে কী গান বা সুর শুনবেন রোগী সেটা নির্ভর করবে রোগীর ব্যক্তিত্ব এবং তিনি কী সমস্যায় ভুগছেন তার উপর৷ গবেষণায় দেখা গিয়েছে বিভিন্ন রাগ খুবই কার্যকরী, যেমনঃ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে আহির ভৈরব এবং টোড়ি, নিম্ন রক্তচাপে মালকোষ, মাথাব্যথায় দরবারি কানাড়া ও জয়জয়ন্তী, ঘুম পাড়াতে বাগেশ্রী ও দরবারি কানাড়া, টেনশন কমাতে দরবারি কানাড়া-খাম্বাজ এবং পুরিয়া খুব কার্যকর৷ উচ্চাঙ্গ সংগীতে আগ্রহ আছে এমন রোগীরা এই সব শুনতে পারেন৷ অন্যথায় রীতিমতো কাউন্সিলিং করিয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো তালিকা করে নিতে হবে৷

হসপিটাল সিকনেস কমাতে মিউজিক থেরাপি খুবই উপযোগী৷ সেরিব্রাল পালসি, অটিজম, পক্ষাঘাত ইত্যাদি দুরারোগ্য রোগের ক্ষেত্রে রোগের শুরুতে অন্যান্য চিকিৎসার সঙ্গে মিউজিক থেরাপি করলে নিরাময়ের সম্ভবনা বেড়ে যাবে৷ রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো কষ্টকর অসুখেও মিউজিক থেরাপির ভূমিকা অনস্বীকার্য৷ নিয়মিত থেরাপি নিলে ক্রনিক ব্যথার রোগীরাও উপকৃত হন কারণ এর একটি বড়ো ভূমিকা রয়েছে বেদনা নাশক হিসেবে৷

ম্যাসুচুসেটস জেনারেল হাসপাতালের দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় পাওয়া গেছে, যেসব রোগী দীর্ঘদিন ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী তারা যদি প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে সফ্ট মিউজিক শোনে; সেক্ষেত্রে তাদের রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দনের গতি কম হয় ও রোগজনিত কষ্টও লাঘব হয়। উইসকনসিন বিশ্ববিদ্যালয়ের করা আরেকটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, হার্ট অ্যাটাকের পর বিশ্রামে থাকাকালীন প্রতিদিন ২০ মিনিট ধীরগতির মিউজিক শুনলে রোগীর রোগসংক্রান্ত দুশ্চিন্তা কম হয়। প্রতিদিন মোজার্ট শুনলে হৃদযন্ত্রের করোনারি রক্তনালীর ব্লক হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। হংকংয়ের একটি গবেষণা অনুযায়ী, তারা কয়েকজন বয়স্ক সুস্থ স্বেচ্ছাসেবক প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ মিনিট করে ৪ সপ্তাহ যাবৎ আনন্দের গান শোনান এবং দেখা যায় তাদের সিস্টোলিক রক্তচাপ ১২ mmHg ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৫mmHgপর্যন্ত কমে যায়। অর্থাৎ গান মানুষের দুশ্চিন্তা ও রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। সবসময় মিউজিক থেরাপির সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং মনের শান্তি খুঁজতে মাঝেমাঝে গান শুনুন। নিজের পছন্দের গান শুনুন। দেখবেন, অনেক সমস্যা হচ্ছে দূর। ভাল থাকতে শুরু করেছেন।

মিউজিক থেরাপি আমাদের কী কী রোগ সারতে পারে?

সুরে যন্ত্রণার মুক্তি! সঙ্গীত শক্তিমান। একটা মিঠে সুর সব ভুলিয়ে জীবনকে নতুন ছন্দে বেঁধে দিতে পারে। এখানেই মিউজিক থেরাপির সার্থকতা। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় তার বিস্তর প্রমাণও রয়েছে। মস্তিষ্কের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে যায় সুর, শান্তি ও তৃপ্তি দেয়। মনের চাপকে দূর করে রোগের তীব্রতা কমে আসে। গবেষণায় তথ্য মিলেছে মিউজিক মানুষের পাশাপাশি যেকোন প্রাণীর উপরেও প্রভাব বিস্তার করে। গাছ উপরও এই মিউজিক থেরাপির প্রভাব পড়ে। যেমন গরুর দুধের পরিমাণ বেড়ে যায় বা গাছের বেশি ফুল বা ফলন হয়। মিউজিক থেরাপি মানুষের মস্তিষ্কে প্রত্যেকটি ভাগকে উজ্জীবিত করে। সুতরাং মানুষের মস্তিষ্কের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকটি স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে। মস্তিষ্কের স্নায়ুকে পুনর্গঠন করে, পুনর্বৃদ্ধি করতে এবং আরও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

মিউজিক থেরাপির মূল ব্যবহার মানসিক সমস্যায়। জীবনযাপনে তৈরি হচ্ছে নানা সমস্যা। ঘুম হচ্ছে না ভাল মতো। সারাদিন টেনশন নিয়েই জীবনযাপন চলছে। এক্ষেত্রে এই দুশ্চিন্তার কারণে আবসাদ, উৎকণ্ঠা, অকারণ ভয়, হিস্টিরিয়াসহ নানা মানসিক সমস্যা ধরা দিচ্ছে। গবেষকদের মতে, তেমনভাবে সুর শোনাতে পারলে হতাশা অবসাদের রোগী ভুলে যেতে পারেন তাঁর কষ্টের কথা, বেদনায় ভারাক্রান্ত মানুষ সাময়িক ভাবে হলেও সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন৷ অনিদ্রার রোগীর চোখে নেমে আসতে পারে শান্তির ঘুম৷ স্ট্রেস, টেনশনে জেরবার মানুষ খুঁজে পেতে পারেন তাঁর শান্তি।

কারণ, পছন্দের সুর সোজা গিয়ে হানা দেয় সব আবেগের কেন্দ্র মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাসে৷ পছন্দের গানে তারা উদ্দীপিত হয়৷ এনআইবিপি নামের মনিটরে ধরা পড়ে সেই উদ্দীপনা৷ প্রবল ব্যথায় বা টেনশনে যে হৃদস্পন্দন, নাড়ির গতি ও রক্তচাপ বেড়ে থাকে, তারা সব কমতে শুরু করে৷ এক-আধ বারেই কষ্ট গায়েব! এমনটা নয়, সুরের জগৎকে আপন করে নিতে পারলে ওষুধের মাত্রা কমে যায়৷ এরই নাম মিউজিক থেরাপি৷

মারাত্মক মানসিক চাপ ও টেনশন চলতে থাকলে সুরে ডুবে যাওয়া একটু কঠিন৷ কিন্তু কোনও মতে ডুবে যেতে পারলেই হল৷ আঠার মতো লেগে থাকা স্ট্রেস হরমোনকে সরিয়ে মন ভাল করা হরমোনরা ক্ষরিত হয়৷ তাতে সাময়িক ভাল লাগা যেমন হয়, কমে উচ্চ রক্তচাপ, নিদ্রা ও দীর্ঘমেয়াদি অসুখের প্রকোপ৷ নিয়মিত থেরাপি নিলে সারে ক্রনিক অসুখ। গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে, হসপিটাল সিকনেসের প্রকোপ কমাতে মিউজিক থেরাপি একাই একশো৷ সেরিব্রাল পাল‌সি, অটিজম ও পক্ষাঘাতের শুরুতে অন্যান্য চিকিৎসার সঙ্গে মিউজিক থেরাপি করলে ভাল ফল হয়৷ লাভ হয় বাতের চিকিৎসাতেও৷ রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো কষ্টকর অসুখেও তার ভূমিকা আছে৷ নিয়মিত থেরাপি নিলে এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতো বাড়িতে তার প্রয়োগ করলে ক্রনিক ব্যথার রোগীদের কাছে খুলে যায় এক নতুন দিগন্ত৷

মানসিক চাপ বা স্ট্রেসের ক্ষেত্রে রোগীকে রিলাক্সেশন থেরাপি দেওয়া হয় যেটা মূলত মিউজিক থেরাপির সঙ্গে বিভিন্ন ছবি দেখানো হয়। অটিজিমের ক্ষেত্রে বাচ্চাদের মিউজিক থেরাপি অনেকটা শান্ত করে। তাদের অন্য মানুষের সাথে যোগাযোগ অনেকটা উন্নতি হয়। ডিমেনশিয়া রোগের ক্ষেত্রে মিউজিক থেরাপি করলে রোগীর মেজাজ ভাল হয়। সে শান্ত হয়। নিজের দৈনন্দিন কাজকর্ম করে বা করানো যায় এবং সহযোগিতা করার মনোভাব জাগে। গবেষণায় তথ্য বলছে ডিমেনশিয়ার ক্ষেত্রে রোগীর হার্ট বা সেরিব্রাল স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মিউজিক থেরাপি এই হৃদয় রোগ বা সেরিব্রাল অ্যাটাকের সম্ভাবনাও কমিয়ে দিতে পারে।

ঘুমের সমস্যায় বা স্লিপ ডিজঅর্ডার, যাঁদের সহজে ঘুম আসতে চায় না তাঁদের ক্ষেত্রে মিউজিক থেরাপি খুব কার্যকরী। শোওয়ার একঘণ্টা আগে থেকে আলো নিভিয়ে বা হালকা আলো জ্বালিয়ে, কোনও লঘু সুরের মিউজিক ব্যাকগ্রাউন্ডে শুনলে মনটা শান্ত হয়ে যায় এবং ঘুম খুব ভাল আসে। সন্তুর, সেতার, পিয়ানোর মিঠে আওয়াজ ঘুমকে ডেকে নিয়ে আসে চোখে। বিশেষভাবে সক্ষম বাচ্চাদের আইকিউ লেবেল কম তারা নতুন জিনিস শিখতে পারে না, ফলে এরা খুব উত্তেজিত হয়ে যায়, আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে, খেতে চায় না, মারপিট ঝগড়াঝাটি করে। মিউজিক থেরাপি করলে সেই শিশু খুব শান্ত হয়ে যায় এবং নতুন জিনিস শেখার প্রতি ঝোঁকটা বাড়ে।

অসুখের জটিলতার উপর নির্ভর করে অন্য চিকিৎসার পাশাপাশি এই থেরাপি করা হয়৷ প্রথমে রোগীর সঙ্গে কথা বলেন সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও মনোবিদ৷ এবার আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর জন্য তাঁর পছন্দের গান ও সুরের তালিকা বানানো হয়৷ মিউজিক থেরাপিস্ট নিয়ন্ত্রিত ভাবে সেই সব শোনাতে থাকেন এবং তাতে তাঁর কষ্ট কতটা কমছে তা বিভিন্ন পদ্ধতিতে মেপে দেখেন৷

কিছু দিন থেরাপি নেওয়ার পর অনেক সময়ই ওষুধের মাত্রা কমে যায়৷ কারণ টেনশন কমে গেলে মানুষ সঠিক জীবনযাপনে উদ্যোগী হন৷ তার হাত ধরে কমে যায় রোগের প্রকোপ৷ ক্যানসারের সঙ্গে লড়তেও সাহায্য করে মিউজিক থেরাপি। শারীরিক যেকোন ব্যথা বা যন্ত্রণা কমানোর জন্য পেন ম্যানেজমেন্ট করা হয়, এক্ষেত্রে মিউজিক থেরাপিও করা হয়। হাইপ্রেশার কমানোর ক্ষেত্রে, হার্টরেট কমানো জন্য, হার্টের অসুখে অস্ত্রোপচারের পরে মিউজিক থেরাপি রোগীকে খুব দ্রুত সুস্থ করে তুলতে পারে।

থেরাপির ক্ষেত্রে কী গান বা সুর শুনবেন, আপনার ব্যক্তিত্ব ও কী সমস্যায় ভুগছেন তার উপর তা নির্ভর করবে৷ বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, উচ্চ রক্তচাপ কমাতে আহির ভৈরব এবং টোড়ি, নিম্ন রক্তচাপে মালকোষ, মাথাব্যথায় দরবারি কানাড়া ও জয়জয়ন্তী, ঘুম পাড়াতে বাগেশ্রী ও দরবারি কানাড়া, টেনশন কমাতে দরবারি কানাড়া, খাম্বাজ এবং পুরিয়া খুব কার্যকর৷

শুধু মানুষের ক্ষেত্রেই নয়, পশু পাখির ক্ষেত্রেও মিউজিক থেরাপি খুবই উপযোগী। ধীর গতির গানের নির্দিষ্ট তরঙ্গে গরুদের দুগ্ধ উৎপাদন হার পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। তেমনই এক অবাক ঘটনা থাইল্যান্ডের ওয়াং-ডং অভয়ারণ্যে দেখা গিয়েছিল। স্বেচ্ছাঅবসরের পরে সেখানেই প্রথম দেখা গিয়েছিল পল বার্টনকে। আর তারপর কিছুদিনের মধ্যেই আবার লোপবুরি শহরের একটি হিন্দু মন্দিরে তাকে দেখা গিয়েছিল। সেখানেই ঝাঁকে ঝাঁকে ম্যাকাউয়ের দল তাকে ঘিরে ধরেছে। কেউ তাঁর ঘাড়ে, কেউ মাথায়, কেউ হাতে বসেছে। কেউ বসেছে একেবারে পিয়ানোর উপরে। আর অন্যদিকে পল কিন্তু নির্বিকার ভঙ্গিতে তাঁর সুর সৃষ্টি করেই চলেছেন পিয়ানোতে। এই জীবন তাঁর কাছে সাধনার মতো। তিনি মনে করেন বন্যপ্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখতে তাদের মনেরও যে যত্ন নিতে হবে, আর সে জন্যেই তিনি তাদের মন ভাল রাখতে পিয়ানোয় আবার আগের মতো সুর তুলছেন। আর থিয়েটার বা অর্কেস্ট্রায় নয়, পিয়ানো নিয়ে পল প্রকৃতির কাছাকাছি পৌঁছে সুর তুলছিলেন। চারপাশে গহণ অরণ্য। পাখি ডাকছে, ঝিঁঝি ডাকছে, জঙ্গলের নিস্তব্ধতা। তার মধ্যেই সুর তুলেছেন পল। আশ্চর্য্য দৃশ্য ! সামনে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি হাতি। পিয়ানোর সুর যেন হাতিটির অন্তরকেও ছুঁয়েছে। চোখের কোনে একটু জল।ব্রিটিশ পিয়ানো শিল্পী পল বার্টনকে ২০২০ নাগাদ থাইল্যান্ডে এভাবেই দেখা গিয়েছিল। মানুষ হোক বা কোনো প্রাণী, সঙ্গীত মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে ওষুধের মতো কাজ করে।

সব সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়ে বা বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে মিউজিক থেরাপি করতে হবে এমন নয়৷ নিজেও করতে পারেন৷ ছোট থেকে যদি নিয়ম করে গান শোনার অভ্যাস থাকে, বিপদের সময় সে অভ্যাস পথ দেখাবে। পছন্দের গান বা সুর শুনে যান৷ দিনে বার চারেক মিনিট ১৫ করে শুনলেই হবে৷ একটানা শুনতে পারলে ভাল৷ নাহলে খাওয়ার সময়, কাজের ফাঁকে, গাড়িতে, ঘুমোনোর আগে, ব্যায়ামের সময় বা একা থাকার মুহূর্তে শুনতে পারেন৷ গান বাজনার চর্চা করলে আরও বেশি লা

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...