বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শিবমূর্তি রয়েছে এই মন্দিরে

কর্ণাটক রাজ্যের অবস্থিত মুরুদেশ্বর মন্দিরে পূজিত হন ভগবান শিব। বিশ্বের দ্বিতীয় উচ্চতম শিবমূর্তিটি অবস্থিত এখানেই। মন্দিরের মুরুদেশ্বর হলেন ভগবান শিব। কথিত আছে, দেব-দেবীদের মতো লঙ্কার রাজা রাবণেরও ইচ্ছা ছিল অমর হওয়ার। সেই কারণেই তিনি শিব লিঙ্গের পুজো করা শুরু করেছিলেন। শিব তার পুজো দেখে প্রসন্ন হয়ে তাকে একটি বর দেন। তারপর রাবণ শিবের কাছে আত্মলিঙ্গ প্রাপ্তির ইচ্ছা প্রকাশ করে। ভগবান শিব রাবণের এই স্বপ্ন পূরণ করলেও তাকে সতর্ক করে বলে দেন যে এই আত্মলিঙ্গ মূর্তিটি যেখানে রাখা হবে সেখানেই স্থায়ী হয়ে যাবে। তাই রাবণ আত্মলিঙ্গটি নিয়ে নিজের দেশের দিকে রওনা হয়েছিলেন। সেই সময় ভগবান বিষ্ণু বুদ্ধি করে গণেশকে পাঠিয়ে ছিলেন। একবার রাবণ পুজো করার সময় আত্মলিঙ্গটি দেখা শোনা করার দায়িত্ব গণেশকে দিয়ে ছিলেন। কিন্তু গণেশ রাবণকে শর্ত দিয়েছিলেন যে, তিনি তিনবার ডাকার পর রাবণ না আসলে আত্মলিঙ্গটি এখানে রেখে গণেশ চলে যাবে। সেই মতো বিষ্ণু মায়া বলে সূর্যোদয় ঘটালে গণেশ তিনবার রাবণের নাম ডাকেন। কিন্তু তিনি সাড়া না দেওয়ায় গণেশ আত্মলিঙ্গ মূর্তিটিকে ওখানেই রেখে চলে যান। পরে রাবণ সব জানতে পেরে মূর্তিটি উপরে ফেলার চেষ্টা করেন। তখন আত্মলিঙ্গের বস্ত্র মৃধেশ্বরে গিয়ে পরে এই মৃধেশ্বর পরবর্তীকালে মুরুদেশ্বর নামে পরিচিত হয়।

 

সমুদ্রের তীরে অবস্থিত এই মন্দিরের শিব লিঙ্গটি দেখার জন্য গর্ভগৃহে প্রবেশ করার অধিকার নেই কোনও ভক্তের। কিন্তু প্রবেশদ্বার থেকে শিব লিঙ্গটি দেখার সুযোগ রয়েছে ভক্তদের। মুরুদেশ্বরের বিশাল শিবমূর্তিটির উচ্চতা প্রায় ১২৩ ফুট। এই কান্ডুকা পাহাড় ঘিরে রয়েছে অনেক কাহিনী। এখানেই শিবের দেওয়া শঙ্খের জলে স্নান করে নিজের দোষ কাটিয়ে ছিলেন বিষ্ণু। মন্দির সংলগ্ন একটি পাহাড় রয়েছে যেখানে সাজানো রয়েছে অসংখ্য মূর্তি ও স্থাপত্য। মহাভারত ও রামায়ণের বহু চরিত্রের চিত্র আঁকা রয়েছে এখানে।

হিন্দুদের কাছে শ্রাবণ মাস হল শিবের মাস। এই সময় মুরুদেশ্বর মন্দিরে বিভিন্ন উৎসব পালন করা হয়। এছাড়াও শিবরাত্রি উপলক্ষে প্রচুর ভক্তের ভিড় লক্ষ্য করা যায় এই মন্দির চত্বরে। ট্রেন ও বাসের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে আসার জন্য। সড়কপথে কলকাতা থেকে মুরুদেশ্বরের দূরত্ব প্রায় ২২০০ কিলোমিটার।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...