কথায় বলে, প্রতিটি মানুষকে জীবনে দ্বিতীয় একটি সুযোগ দেওয়া উচিত| রত্নাকর দস্যু যেমন জীবনে দ্বিতীয় সুযোগ পেয়ে বাল্মিকি হয়ে উঠতে পেরেছিলেন সেরকম দ্বিতীয় সুযোগ পেলে অনেকেই তার জীবনকে আবার নতুনভাবে সাজিয়ে নিয়ে পারেন| সম্প্রতি, কর্নাটকে খোঁজ পাওয়া গেছে এমনই এক মানুষের যিনি কিনা খুনের দায়ে জেল খেটেছেন ১৪ বছর| জেল থেকে বেরিয়ে আজ তিনি একজন স্বনামধন্য চিকিত্সক| জীবনের থেকে পাওয়া দ্বিতীয় সুযোগকে হাতছাড়া করেননি তিনি|
জানা গেছে, কর্ণাটকের বাসিন্দা সুভাষ পাটিল ১৯৯৭ সালে চিকিত্সক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এমবিবিএস পড়া শুরু করেন| সবটা পরিকল্পনা মাফিকই চলছিল| কিন্তু ছন্দপতন ঘটে ২০০২ সালে| প্রেমিকা পদ্মাবতীর সাথে হাত মিলিয়ে তার স্বামী অশোক গুট্টেদারকে হত্যার অপরাধে ১৪ বছরের কারাদন্ড হয় সুভাষের| জানা গেছে, কর্নাটকে বসবাস করাকালীনই পদ্মাবতীর সাথে আলাপ হয় সুভাষের| আলাপ গড়ায় প্রেমে| প্রেম শুরুতেই বিপদঘণ্টা বাজতে শুরু করে| স্ত্রীয়ের বিবাহ-বহির্ভূত প্রেমের খোঁজ পেয়ে যান পদ্মাবতীর স্বামী| এরপরেই পরিকল্পনা করে তাকে খুন করেন সুভাষ এবং পদ্মাবতী| সেই সময় এমবিবিএস কোর্সের তৃতীয় বর্ষে পড়ছিলেন তিনি|
২০১৬ সালের স্বাধীনতা দিবসের দিন ভালো ব্যবহার এবং জেল হাসপাতালের বহির্বিভাগে কাজের সুবাদে জেল থেকে মুক্তি পান সুভাষ| জেল থেক মুক্তির পরেই সুভাষ রাজীব গান্ধী ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্সেস (আরজিইউএইচএস)-এর কাছে আবেদন জানান, তিনি তার এমবিবিএস কোর্সটি শেষ করতে চান| ইউনিভার্সিটির তরফ থেকে সমস্ত আইনি বিষয় বিচারবিবেচনা করে তারপরে সুভাষকে তার কোর্স শেষ করার অনুমতি দেওয়া হয়| এর আগে সুভাষ কর্নাটক স্টেট ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা এবং এমএ করেন| জানা গেছে, জেলে থাকাকালীন সেন্ট্রাল প্রিজন হসপিটালের চিকিত্সকদের কাজেও সাহায্য করতেন সুভাষ| ২০১৯-এ তিনি তার কাঙ্খিত এমবিবিএস ডিগ্রিটি ব্যাগবন্দী করেন| এরপর তিনি করেন এক বছরের একটি বাধ্যত্মূলক ইন্টার্নশিপ| চলতি মাসে ইন্টার্নশিপের মেয়াদ ফুরানোর সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হলো তার চিকিত্সক জীবনের পথ ধরে এগিয়ে চলা|