“১৬ বছর বয়সে কহো না পেয়ার হ্যায় দেখার জন্য পাগল ছিলাম। সেটা ছিল ২০০০ সাল। যদিও আমি ছিলাম শাহরুখ খানের ভক্ত, তবু এই নতুন ছবি ও তাঁর নতুন নায়কের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছিলাম। আমরা তখন ছিলাম টিনএজার। তাই টিনএজারদের মতোই কোন ছবি দেখব, কোন বিষয়ে পড়াশোনা করব, কোন স্যার ভালো পড়ান এবং কোন পেশা নিয়ে এগোবো—সব কিছু নিয়েই আলোচনায় মেতে থাকতাম আমরা।“ বলছিলেন খুশবু গোয়েল।
তাঁর কথায়, দুর্ভাগ্য হল, মেয়েদের এ বয়স থেকেই পড়াশোনা বন্ধ করার চাপ আসে। সে সাথে চাপ আসে বিয়ে করার। বাড়ির দায়িত্ব নেওয়ার। অথচ তখন তাঁদের পড়াশোনা-পরীক্ষা নিয়ে ভাবার কথা।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে মত না থাকলেও বিয়ে করতে হয় তাঁকে। বলছিলেন, “আমি দেখেতাম বাবা মদ্যপান করে মা-কে মারছে রোজ। আমি মনে করতাম, ভায়োলেন্স হয়তো স্বাভাবিক প্রবণতা পুরুষের।”
তাঁর নিজের দাম্পত্য জীবনেও একই ছায়া পড়ে। রোজ তাঁকে আঘাতের দাগ নিয়ে স্কুলে যেতে হত। বেল্টের দাগ থাকত তাঁর সারা শরীরে। কখনও কখনও নিজেকে মেরে ফেলতেও ইচ্ছে করত তাঁর। বাড়িতেও কোনও সাহায্য পেতেন না তেমন। স্বপ্ন সাফল্যের পথে কোনও উদ্যোগই নিতেন না তাঁর অভিভাবকেরা। উল্টে তাঁর মা-বাবা বারবার চাপ দিত বিয়ের জন্য। মায়ের ভাইয়ের ছেলের সাথে তাঁর বিয়েও হয়।
বিয়ের প্রথমদিকে স্বামী তাঁকে অর্থ সাহায্য করতে থাকেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, শরীরের চাহিদা ছাড়া কিছুরই দরকার নেই তাঁর। সন্তান জন্মানোর পর যদিও জীবন কিছুটা বদলায়। ‘আচমকা জানতে পারি, আরেকবার বিয়ে করছেন আমার স্বামী। এবং সে খবরটা আমায় জানানোর প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি।‘ বলেন খুশবু। সন্তান আজানকে বড়ো করে তুলতে তারপর থেকে লড়াই শুরু করেন তিনি।
আজান আজ বড়ো হয়েছে। তাঁর সাথে, খুশবুও তাঁর পড়াশোনা শেষ করে এমএসডব্লু পড়ছেন। বর্তমানে তিনি মুম্বইয়ের বাসিন্দা। বললেন, জীবনে কিছুই অস্বাভাবিক না যদি লড়াই করা যায় স্বপ্নের পিছনে। এক জীবনেই সব মেলে।