বিগত দশকের সবচেয়ে বড় , বিলাসবহুল ও আভিজাত্যের প্রতীক ছিল জাহাজ ‘RMS টাইটানিক’। যদিও তার পরিণতি সুখকর হয়নি। প্রথম যাত্রায় ডুবে যায় সেটি, কিন্তু জলের স্রোতে ভাসিয়ে রেখে যায় একাধিক প্রশ্ন , রহস্য। এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। বহুল আলোচনা, সিনেমা তাকে প্রায় কিংবদন্তির পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
টাইটানিক এর প্রতি মানুষের আবেগ ও ভালোবাসাকে পুঁজি করে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছেন অস্ট্রেলীয় ধনকুবের ক্লিভ পালমারক।
না , কোনো অস্কারগামী হলিউডি সিনেমা নয় - ঘোর বাস্তব। আবার এক আভিজাত্যের ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে গোটা বিশ্ব। পালমারের মালিকানাধীন BLUE STAR LINE কোম্পানি তৈরী করতে চলেছে ‘MS টাইটানিক ২’।
টাইটানিকের থেকে অনেকগুন বড়, বিলাসবহুল ও আধুনিক বহু জাহাজ তৈরী হলেও এখনো জনপ্রিয়তায় টাইটানিককে কোনোটিই ছাপিয়ে যেতে পারেনি। টাইটানিক-২ সেই আবেগকে উস্কে দিয়ে কতটা জনপ্রিয়তার শীর্ষ স্থান বজায় রাখতে পারবে তার অপেক্ষায় এখন গোটা বিশ্ব।
জাহাজটির নকশা করা হয়েছে হুবহু টাইটানিকের আদলে, যদিও বিলাসবাহুল্যতা ও নিরাপত্তা সূচক ব্যবস্থা আরো বেশি। ২০২২ সালে টাইটানিক-২ তার যাত্রা শুরু করবে। ১৯১২ সালের টাইটানিক ১ ও ২০২২ সালের নতুন টাইটানিকের মধ্যে বেশ কিছু মিল ও অমিল রয়েছে।
প্রথমটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ছিল হোয়াইট স্টার লাইন, তৈরী হয়েছিল ১৯ শতকের প্রযুক্তি দ্বারা ও নতুনটির মালিক ব্লু স্টার লাইন এবং তৈরী হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে। নতুন জাহাজটির সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হল - এখানে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য থাকছে পর্যাপ্ত লাইফ বোট। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য যা যা থাকা প্রয়োজন অত্যাধুনিক জাহাজে তাই থাকছে। থাকছে স্যাটেলাইট ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ, ডিজিটাল নেভিগেশন ও আধুনিক রাডারের মাধ্যমে সর্বক্ষণ সংযুক্ত থাকবে এই টাইটানিক-২। এছাড়া আপৎকালীন সময়ে যাত্রীদের অন্যত্র সরানোর ব্যবস্থাও থাকবে।
এই নতুন টাইটানিকের দৈর্ঘ্য পুরনোটির মতোই, ৮৮৫ফুট। কিছু বাড়তি সুবিধা যোগ করায় ৯ তলা বিশিষ্ট টাইটানিক -২ এর প্রস্থ কিছুটা বেশি এবং ওজন ৪০ হাজার টন। এখানেও থাকবে প্রথম, দ্বিতীয় , তৃতীয় শ্রেণীর টিকিট ব্যবস্থা। এই জাহাজে ৮৪০ টি কেবিনে থাকতে পারবে ২৪০০ জন যাত্রী ও জাহাজ পরিচালনার জন্য থাকবে নাবিক ও কর্মীসহ ৯০০ জন। প্রথমটি নির্মিত হয়েছিল বেলফাস্টে ও নতুন জাহাজের জন্মস্থল চীনের জিয়ানসুতে। নির্মাণ শেষের পর নতুন টাইটানিক-২ চীন থেকে দুবাই হয়ে সাউদাম্পটন বন্দর থেকে নিউয়র্কের উদেশ্যে যাত্রা শুরু করবে। নিঃসন্দেহে আরো এক স্মরণীয় মুহূর্তের অবতারণা হবে ২০২২ এ। যার দীর্ঘায়ু ও সর্বাঙ্গীন সাফল্য একান্ত কাম্য।