পেরিয়ে গিয়েছে তিরিশ দশকের বেশি সময়। কিন্তু এতটুকু ক্রেজ কমেনি সেই অদৃশ্য হিরোর। শুধু মাত্র লাল কাচের আড়াল থেকেই যাকে দেখা যেত।
মিস্টার ইন্ডিয়া। ভারতের প্রথম আইকনিক সাই- ফাই মুভি। আশির দশকের শেষ দিকে ভারতীয় সিল্ভার স্ক্রিনে যার প্রবেশ।
মুগাম্বোর হুঙ্কার। হাওয়া-হাওয়াই’র সেনসেশন। সহজ সরল অরুণ বর্মা। হাই ভল্ট মিস্টার ইন্ডিয়া।
সিনেমার প্রতিটা ফ্রেম, প্রতিটা দৃশ্য এখনও একই শিরশিরানি। আবার পর্দায় ফিরছে সেই মিস্টার ইন্ডিয়া। শেখর কাপুর পরিচালিত কাল্ট ফিল্ম।
জল্পনা শুরু হয়েছিল অনিল কাপুরের একটি টুইট ঘিরে। মিস্টার ইন্ডিয়া অনিল কাপুর একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন সম্প্রতি। ছবির সঙ্গে তিনি লিখেছিলেন, “আমার আবার দেজাভু’র মত অনুভূতি হচ্ছে। আমি আর শেখর কাপুর দুজনে মিলে আবার মিস্টার ইন্ডিয়ার ম্যাজিক তৈরি করতে চাইছি।”
শেখর কাপুর সরাসরি টুইটে বলেছেন, “মিস্টার ইন্ডিয়া টু বা অন্য ছবি নিয়ে আলোচনা চলছে।”
মিস্টার ইন্ডিয়া যে ফের ফিরতে চলেছে পর্দায় সে কথা জানান বনি কাপুর নিজেই। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ছবির সিক্যুয়েল তৈরির ভাবনা ছিল। শ্রীদেবীর ঘটনার পর ‘কারণ’ আরও বেড়ে গিয়েছে।
১৯৮৭ সালে মুক্তি পায় মিস্টার ইন্ডিয়া। বক্স অফিসে চূড়ান্ত সফল সিনেমা। এই সপ্তাহেই মুক্তির ৩২ বছর পার করল। সিনেমার প্রযোজক ছিলেন বনি কাপুর।
মিস্টার ইন্ডিয়া সব দিক থেকেই মনে রাখার মত সিনেমা। অনস্ক্রিন তো বটেই। অফ স্ক্রিনের গল্পের আকর্ষণও কম নয়। মিস্টার ইন্ডিয়ার জন্য শ্রীদেবীকে কনফার্ম করতে মাদ্রাজ উড়ে গিয়েছিলেন তিনি। ‘মাদ্রাজ’ তখনও ‘চেন্নাই’ হয়নি। বনি শ্রীদেবীর মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। শ্রীদেবীর মা প্রযোজক বনির কাছ থেকে শ্রীদেবীর পারিশ্রমিক হিসেবে সেই সময়ে দশ লাখ টাকা দাবী করেন।
যে কোনও মূল্যে ‘শ্রী’ কে পেতে রাজী বনি এগারো লাখ টাকায় ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’র হিরোইনকে সাইন করান।
শ্রীদেবীর বিপরীতে বনির ভাই অনিল।
মিস্টার ইন্ডিয়ায় শ্রীদেবীর জন্য তিনজন কস্টিউম ডিজাইনার রাখা হয়েছিল।
এই সিনেমা থেকেই বলিউডে উত্থান ঘটেছিল এক সুপার স্টারের। তিনি শ্রীদেবী। এই সিনেমার পর থেকেই তাঁর কেরিয়ার অন্যদিকে মোড় নেয়। চার্লি চ্যাপলিনের মিমিক্রি এমন করে আর কেউ করে উঠতে পারেনি গোটা বি- টাউনে।
২০১২ সালে বনি কাপুর ঘোষণা করেছিলেন মিস্টার ইন্ডিয়ার সিক্যুয়েল বানাবেন তিনি। কিন্তু শ্রীদেবীর অকাল মৃত্যুতে চাপা পড়ে যায় মিস্টার ইন্ডিয়া- ২ এর সমস্ত আলোচনা।
মিস্টার ইন্ডিয়ার সিকুয়েল তৈরির জন্য ফ্যানেদের থেকে নিয়মিত অনুরোধ আসত তাঁর কাছে।
মোগাম্বর চরিত্রের অভিনেতা অমরীশ পুরিও আর নেই। ‘হাওয়া হাওয়াই গার্ল’ও নেই।
মিস্টার ইন্ডিয়ার সিকুয়েল নিয়ে শুরুর দিকে অবশ্য দ্বিধায় ছিলেন ছবির পরিচালক শেখর কাপুর নিজেই। জানিয়ে দিয়েছিলেন শ্রীদেবী, অমরেশ পুরি ছাড়া মিস্টার ইন্ডিয়া ভাবাই যায় না।
ছবির দৃশ্যের কোলাজ ছবি পোস্ট করে, মিস্টার ইন্ডিয়ার ৩২ বছর অনিল কাপুর উৎসর্গ করেছেন ভিরু দেবগনকে। মিস্টার ইন্ডিয়া’র সমস্ত অ্যাকশন দৃশ্যের নেপথ্য কারিগর ছিলেন তিনি। গত সোমবার প্রয়াত হন। বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।
#MrIndia was made iconic by its children friendly action scenes & Veeru’s Midas touch. I want to dedicate its 32nd anniversary to the man who made these unforgettable moments possible. #VeeruDevgan was an amazing man & I'm lucky to have worked with him. He is sorely missed... pic.twitter.com/jdw1w6ULtI
— Anil Kapoor (@AnilKapoor) May 29, 2019