মাউথ ওয়াশ এখন মানুষের প্রায় নিত্যসঙ্গী হয়ে গেছে। দিনে দুবার দাঁত মাজার পর মাউথ ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলাই এখন সকলের রোজকার রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। খুব ছোট বয়স থেকেই বাইরের খাবার, অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার বা চকোলেট খাওয়ার ফলে দাঁতের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাড়ি ফুলে যাওয়া থেকে শুরু করে, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, মুখে দুর্গন্ধ প্রভৃতি সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে যাদের শরীরে থাবা বসিয়েছে ডায়াবেটিস, তাদের ক্ষেত্রে এইসব লক্ষণ অধিক প্রকাশ পায়। তাদেরই বিশেষ করে ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়ে থাকেন মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করার জন্য।
সম্প্রতি একদল মার্কিন বিজ্ঞানী জানিয়েছেন এক অদ্ভুত দাবি। তাঁরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন এইভাবে মাউথ ওয়াশের ব্যবহারের ফলে বেড়ে যেতে পারে ডায়াবেটিসের লক্ষণ। যাদের শরীরে এখনো থাবা বসায়নি এই রোগ রেহাই নেই তাদেরও। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা সময়ের সাথে সাথে মানুষকে আরও অসুস্থ করে তোলে। সমীক্ষায় দেখা গেছে ভারতেরই প্রায় ৭ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আর এই ডায়াবেটিসের জন্য অনেকাংশে দায়ী করা হচ্ছে প্রতিদিনের ব্যবহৃত মাউথ ওয়াশকে। কিন্তু কিভাবে? চলুন জানা যাক।
আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনেই গবেষকদের মতে, টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষদের মধ্যে দাঁত ও মাড়ির সমস্যা বেশি দেখা যায়। তাই চিকিৎসকেরা এইসব রোগীকে দিনে দুবার মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। কিন্তু এতেই ঘটছে বিপদ। তিন বছর ধরে নানা গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দীর্ঘদিন ধরে মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করছেন তাদের শরীরেই হানা দিচ্ছে এই রোগ। দেখা গেছে, যাদের শরীরে এই রোগ এখনও থাবা বসায়নি তাদের শরীরে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে প্রায় ৫৫%। তাহলে উপায়? দাঁত মুখ ভালো রাখতে কি কি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে?
মাউথ ওয়াশ ব্যবহার না করেও যেসব উপায়ে দাঁত ও মাড়িকে সুস্থ রাখা যায় সেগুলি হলো-
১) দিনে দুইবার অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করা উচিত। এতে দাঁতের ফাঁকে খাবারের কণা ঢুকে থেকে মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে না। এর ফলে দাঁত ও মাড়ি দুইই সুস্থ থাকে।
২) দিনের নানা সময়ে আপেল, গাজর প্রভৃতি ফল খেতে থাকুন। এর ফলে দাঁতের ভিতরে জীবাণুরা বাসা বাঁধতে পারে না। এর ফলে দাঁতের ক্ষয়ও কম হয়।
৩) মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করলে যদি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে তাহলে তা ব্যবহার না করে আপনি টি ট্রি অয়েল, পিপারমেন্ট অয়েল বা লেমন অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
৪) মুখের অভ্যন্তরে বেড়ে ওঠা জীবাণুর বংশকে ধ্বংস করতে আরেকটি উপকারী জিনিস হলো ব্ল্যাক টি বা গ্রিন টি। এই দুইরকম টি মুখের ভিতরে বেড়ে ওঠা জীবাণুদের মেরে ফেলতে সাহায্য করে।
এইসব উপায় অবলম্বন করে দেখুন। আশা করা যায় এতেই উপকার পাবেন। আর এতে যদি উপকার না পান তাহলে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। উনি প্রয়োজন মতো ওষুধ বা অন্য কোনো উপায়ের কথা বলতে পারবেন যা বিশেষ করে আপনার জন্য এফেক্টিভ হবে।