ছায়া গাছ মা

মা। এই একটা শব্দ আসলে একটা গোটা পৃথিবী। মায়া-মমতার মাটি দিয়ে গড়া ত্রিভুবন।
সব ভয়, অন্ধকার হার মেনে যায় এই শব্দের কাছে। অশান্ত চারপাশে ছায়াগাছ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে মহীরুহ মা।
যুগ বদলায়। সময় বদলায়। মানুষ বদলায়, কিন্তু একই থাকে মা।
অতিমারীর করাল চেহারা হার মেনেছে মায়ের লড়াইয়ের কাছে। ভয়, অনিশ্চয়তাকে হারিয়ে দিয়েছে মায়ের কোল। উত্তাল স্থিতিতে ভূমিষ্ঠ হয়েছে নতুন প্রাণ। সে এক বিশ্বযুদ্ধ লড়াই।
ম্যানচেস্টারের রকসি আফজাল। ২০২০-র কালো বছরটা অন্যরকম হয়ে শুরু হয়েছিল ৩৭ বছরের রকসির কাছে। গত বছরের ১ মে জীবনে প্রথমবার মা হয়েছেন।
অতিমারীর জেরে যুক্তরাষ্ট্র তখন লকডাউনে। সব বন্ধ। দোকান, বাজার, রাস্তায় বেরবার উপায় নেই। ঘরের ভিতরেও সেঁধিয়ে এসেছে ভয়।

দেখার কেউ নেই। সবাই গৃহবন্দী। পরিবার, বন্ধু সকলের একই অবস্থা। সেই পরিস্থিতিতে সন্তানের জন্ম হল। ছেলে।
সকলে হাফ ছেড়ে বাঁচল। কিন্তু ২ সপ্তাহ যেতে না যেতেই ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়ল ছেলে। যুক্ত রাষ্ট্রের তখন করোনা সঙ্কট চরমে। রকসির স্বামী অন্য শহরে আটকে। একা একাই হসপিটাল ঘর করতে হচ্ছে সদ্য মা হওয়া রকসিকে। ডাক্তার বলেছিলেন, অস্ত্রপ্রচার করতে হবে ২ সপ্তাহের ছেলেকে। অন্য উপায় নেই।
রকসি সাহস হারাননি। সব একাই সামলে সুস্থ করলেন ছেলেকে। তার ২ মাস পর খবর করোনায় বাবাকে হারালেন। এক বাড়িতেই বাস। আতঙ্কের ধুকপুকুনিটা আরও বাড়ল।
হাল ছাড়েননি। কালো অন্ধকারে শুধু আলোর দিন গুনেছেন। চেয়েছেন সন্তান বড় হয়ে উঠুক মারীভয়হীন পৃথিবীতে। ততক্ষণ লড়াই চলবে।
রকসি একা নন, গোটা বিশ্ব জুড়ে মায়েরা আজ লড়াই করছেন মারীর বিরুদ্ধে। কেউ দেশ বাঁচাতে, কেউ ঘর বাঁচাতে, কেউ সমাজ বাঁচাতে। ধর্ম তাঁদের একটাই মাতৃত্ব। শক্তিও সেটাই। সেই জোরেই রুখে দেবেন মানুষ আর মারণ ভাইরাসের অসম লড়াই।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...