পাখির ঠোঁটে সিগারেটের টুকরো

 

কারেন মাসোন- শৌখিন ফটোগ্রাফার। ছবি তোলেন নেশায়।

ন্যাশনাল অডোবন সোসাইটিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে গিয়েছিলেন সেন্ট পিটার বিচে। ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন, বন্যপ্রাণ কতটা সুরক্ষিত আছে, গুরুত্ব দেন পরিবেশের ওপর। ঘুরে ঘুরে ছবি তুলছিলেন তিনি। ছবি তুলতে গিয়ে একটি পাখি ও তার বাচ্চার দিকে চোখ আটকে গেল তাঁর। নিয়ে নিলেন কয়েকটি স্ন্যাপ। মা পাখি তার বাচ্চাকে কিছু খাওয়াচ্ছে। দূর থেকেই বুঝেছিলেন, মাছ নয় খাবারটি। কি তবে? দেখতে দূর থেকে মাছের মতোই লাগছিল। মনে খুঁত খুঁত একটা ছিলই। বাড়ি ফিরেই ছবিগুলি নিয়ে বসে পড়েন তিনি। জুম করে দেখতে গিয়েই তো চক্ষু চড়ক গাছ!  একটা সিগারেটের টুকরো ! 

   রাগে, ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিভিন্ন ওয়াইল্ডলাইফের সোশ্যাল গরুপে  ছবিগুলো ছড়িয়ে দিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মানুষের কাছে, এইভাবে সামুদ্রিক প্রাণী এবং পাখিরা অচিরেই ধ্বংসের মুখে এগিয়ে যাবে। সিগারেটের অবশিষ্টাংশ মোটেও পাখিদের বা যে কোনো প্রাণীদের খাওয়ার উপযুক্ত নয়। কিন্তু সমুদ্রের তীরে এভাবে ওই ধরণের জিনিস পড়ে থাকলে অবুঝ প্রাণীরা বুঝবে কি করে? তারা তো খাদ্য হিসেবেই গ্রহণ করবে, তার পরিণতি হবে মারাত্মক। সারা বিশ্বজুড়েই যেখানে সেখানে প্লাস্টিক সহ বিভিন্ন রকম বর্জ্য জিনিসপত্র ছড়িয়ে থাকে। সেগুলিতে পরিবেশ দূষণ তো হয়ই, তার সঙ্গে সঙ্গে প্রাণীদেরও ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।

    সান দিয়েগো স্টেট্ ইউনিভার্সিটির গ্রাজুয়েট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের একটি প্রচারে জানানো হয়েছে, ৫.৫ ট্রিলিয়ন ফিল্টার সিগারেটের একটা বড় শতাংশ প্রতিবছরই পরিবেশের কোনো না কোনো জায়গায় নিক্ষিপ্ত হয়। এবং একথা জেনে রাখা ভালো, একটি রিপোর্ট অনুযায়ী সিগারেটের এই অংশ অনেক ক্ষেত্রে স্ট্রয়ের থেকেও বেশি বিপজ্জনক।

     মাসোন মূলত ব্ল্যাক স্কিমার পাখিটি খুব পছন্দ করেন। তাই মাঝে মাঝেই চলে যান তাদের কান্ড-কারখানা ছবিতে তুলে রাখতে এবং স্থানীয় মানুষদের ওই ব্ল্যাক স্কিমারের ব্যাপারে বোঝান তিনি।

       ঘটনাটি ঘটার পর মাসন সকলের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, এইভাবে যত্র তত্র যেন সিগারেটের টুকরো ফেলে না রাখা হয়। হয় নির্দিষ্ট নোংরা ফেলার জায়গাতেই তা ফেলা হোক অথবা সকলে যেন একটি করে পোর্টেবল এশট্রে সঙ্গে ক্যারি করে। যাতে পরিবেশের ওপর এইরকম সাংঘাতিক প্রভাব না পড়ে।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...