বর্ষা মানেই ইলিশ। কিন্তু সূচাগ্র জমিও ছাড়তে নারাজ চিংড়ি। তাই যুদ্ধ বাঁধে। কে আসবে হেঁশেলে ছুটির দিনে? ইলিশ নাকি চিংড়ি? ইলিশ রাজা কিন্তু কম যায় না চিংড়ি! যাতে পড়বে তাতেই তুখোড়। আসলে চিংড়ির এমন কিছু পদ আছে, যে সব রান্না নাহলে রান্নাঘরে বর্ষা জমে না। বাইরে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, ঘরে গরম ভাতের সঙ্গে চিংড়ি দিয়ে কচুর লতির স্বাদ! সে তো রাজসুখ সমান। বর্ষার এমনই কিছু চিংড়ির পদের খোঁজ থাকল এই নিবন্ধে
লাউ পাতায় চিংড়ি পাতুরি
চিংড়ি- ছোট ২৫০ গ্রাম
লাউ পাতা- প্রয়োজন মতো
পোস্ত- ২ চামচ
কালো সরষে- ১ চামচ
হলুদ সরষে- ১ চামচ
কাঁচা লঙ্কা- ৪
সরষের তেল- প্রয়োজন মতো
কীভাবে বানাবেন
ছোট চিংড়ি ভাল করে ধুয়ে নিয়ে নুন, হলুদ মাখিয়ে রাখতে হবে। লাউ পাতা জলে খুব ভাল করে ধুয়ে নিন। পোস্ত, কালো সরষে, হলুদ সরষে, কাঁচা লঙ্কা, সামান্য নুন দিয়ে বেটে নিতে হবে। এবার এই মিশ্রণে সরষের তেল, হাফ চামচ হলুদ দিয়ে খুব ভাল করে মাখিয়ে নিন। সব কিছু দিয়ে মাছ ৩০ মিনিট মেখে রাখুন। এবার চারটে লাউপাতা একসঙ্গে নিয়ে তার মধ্যে চিংড়ি দিয়ে সুতো দিয়ে ভাল করে বেঁধে দিতে হবে। এবার কড়াইতে জল দিয়ে একটা টিফিন বক্সের মধ্যে এই লাউপাতায় মোড়া চিংড়ি দিয়ে ভাপে বসান। ১৫ মিনিট ভাপে রাখলেই তৈরি হয়ে যাবে লাউ পাতায় মোড়া চিংড়ি।
কুমড়ো পাতায় চিংড়ির পাতুরি
কী কী লাগবে
মাঝারি সাইজের চিংড়ি মাছ- ৪টি
নারকেল কোরা- ৩ টেবিল চামচ
পোস্ত- ৩ টেবিল চামচ
সর্ষে- ১ টেবিল চামচ
কাঁচালঙ্কা- ২টি
পাতি লেবুর রস- ১ চামচ
নুন- স্বাদ মতো
সর্ষের তেল- পরিমাণমতো
কুমড়ো পাতা- ২টো
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে চিংড়ি মাছ ভালো করে ধুয়ে ও বেছে নিতে হবে। কাঁচালঙ্কা, নারকেল কোরা আর সর্ষে ভালো করে পেস্ট করে নিন। এবার চিংড়ি মাছগুলো সামান্য নুন, লেবুর রস ও সমস্ত বাটা মশলা দিয়ে ভালো করে ম্যারিনেট করে ৩০ মিনিট পর্যন্ত রাখুন। কুমড়ো পাতা ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখুন। ৩০ মিনিট পর ওই পাতার মধ্যে পুরো জিনিসটা দিয়ে দিন। উপর থেকে ১/২ চামচ সরষের তেল দিয়ে কুমড়োপাতা মুড়ে বেঁধে ফেলুন। এবার কড়ায় পাতুরিগুলো স্টিমে বসান। ভাপিয়ে ১০-১৫ মিনিট রান্না করুন। তৈরি কুমড়ো পাতায় চিংড়ির পাতুরি।
শাপলা চিংড়ি
কী কী লাগবে
শাপলা- ৪ কাপ
চিংড়ি- ২৫০ গ্রাম
পেঁয়াজ কুচি- ২ কাপ
লঙ্কাগুঁড়ো- ১ চা চামচ
হলুদ গুঁড়ো- ১ চা চামচ
জিরে গুঁড়ো- ১ চা চামচ
নারকেল বাটা- ২ টেবিল চামচ
নুন- স্বাদমতো
সর্ষের তেল- আধ কাপ
তেজপাতা- ২
পদ্ধতি: কড়াইয়ে তেল গরম করে তাতে সব মসলা ও মাছ দিয়ে নাড়তে থাকুন। কিছুক্ষণ পর জল দিন। ভাজা গন্ধ বের হলে এবং তেল ওপরে উঠে এলে এতে শাপলা-পাতা দিয়ে ঢেকে দিন। জল শুকিয়ে এলে স্বাদ মতো চিনি দিয়ে ১-২ মিনিট নেড়ে নামিয়ে ফেলুন।
নারকেল চিংড়ি দিয়ে কলমি শাক
কী কী লাগবে
কলমিশাক- এক আঁটি
নারকেলবাটা- আধ কাপ
চিংড়ি- আধ কাপ
সর্ষের তেল- ২ টেবিল চামচ
পেঁয়াজ ও রসুনকুচি- ২ টেবিল চামচ
লঙ্কাগুঁড়ো- আধ চা-চামচ
হলুদ গুঁড়ো- আধ চা-চামচ
আদা ও জিরেবাটা- আধ চামচ
ভাজা জিরে গুঁড়ো- আধ চা-চামচ
নুন- পরিমাণ মতো
কাঁচা লঙ্কা- ৫/৬টা
কীভাবে বানাবেন
প্রথমে কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ ও রসুনকুচি দিয়ে ভাজুন। তারপর এতে চিংড়ি ও বাকি সব মসলা দিন। আবার একটু ভেজে নিন। তারপর দিন নারকেলবাটা। আরও একটু ভাজুন। এবার এতে কলমিশাকের কুচি দিয়ে কিছুক্ষণ ঢেকে রাখুন সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত। সেদ্ধ হলে শাকের জল সব শুকিয়ে ভাজা ভাজা করতে হবে। এবার কাঁচা মরিচ ও জিরেগুঁড়ো দিয়ে নামিয়ে ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন।
কচুর লতি চিংড়ি
কী কী লাগবে
কচুর লতি- ৫০০ গ্রাম
চিংড়ি- ২৫০ গ্রাম (ছোট বা মাঝারি)
নারকেল দুধ- ১ কাপ
আদাবাটা- ১ চা-চামচ
লঙ্কা গুঁড়ো- ১ টেবিল চামচ
রসুন বাটা- ১ চা-চামচ
হলুদ- সামান্য
নুন- স্বাদমতো
পেঁয়াজ কুচি- আধ কাপ
সর্ষের তেল- আধ কাপ
কাঁচা লঙ্কা- ৪/৫টি
কীভাবে বানাবেন
লতি ছোট করে কেটে ভাপিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে। চিংড়ি বেছে ধুয়ে নুন হলুদ মাখিয়ে রাখুন। কড়াইয়ের তেল গরম হয়ে এলে পেঁয়াজ দিন, সোনালি রং হলে একে একে সব মসলা দিয়ে কষাতে হবে। এবার চিংড়ি ও লতি দিয়ে কষিয়ে আধ কাপ দুধ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। কাঁচালঙ্কা দিয়ে কিছুক্ষণ দমে রেখে তেল উঠে মাখা মাখা হলে নামিয়ে নিতে হবে।