জোড়াবাগান থেকে বলিউড

২০-সি, মথুর সেন গার্ডেন লেন-এর স্যাঁতস্যাঁতে এক ঘর। আলো-বাতাস ঢোকার জায়গা নেই। এলাকাটা উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান

সম্বল বলতে সীমাহীন দারিদ্র্য। আর অসম্ভবকে অসম্ভব করার বেতালা ইচ্ছে। তাই দিয়েই আরব সাগরের তীরে পাড়ি দিয়েছিল ছেলেটা। ২০-সি, মথুর সেন গার্ডেন লেন যার ঠিকানা।

লড়ে গিয়েছিল জীবনের বাজিতে। ঝড় ঝাপটা অনেক এসেছে। তবু শেষ হাসি হেসেছিল সেই চালচুলোহীন ছেলেটাই। নাম গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী

রাস্তা থেকে রাজপ্রাসাদ পৌঁছে যাওয়ার এক অপ্রাথিব রূপকথা। জীবন তো নয়, যেন আস্ত সিনেমা!

সময় লেগেছিল এক দশক। তার মাঝে অজস্র বিনিদ্র রাত, আধপেটা দিন। দুর্লভ নয়, না খেয়ে থাকাও।

বাবা টেলিফোন অফিসে সামান্য চাকুরে। বাড়িতে অভাব। তবু পাড়ার রক থেকে দুর্গাপুজোর ভাসান সবেতে সেই ছেলেটাই হিরো। কলেজে গিয়েও বদযায়নি ছবিটা।

MithunChakraborty1

কলেজের নাম স্কটিশচার্চ। একবার কোনও কারণে ডিসকলেজিয়েট হতে হয়েছিল। তার জন্য ঘেরাও হতে হয়েছিল প্রিন্সিপালকে। এমনই ছিল জনপ্রিয়তা।

বসন্ত কেবিন, হেদুয়ার জলের ধার মেতে থাকত তার অফুরন্ত প্রাণশক্তির ফুর্তিতে। তাতেই কাছে আসত বন্ধুরা। একদিন ছাড়তে হল কলকাতা। অনিশ্চিত জীবন আর অজানা ভবিষ্যতের ঠিকানা হল বম্বে

কোনওদিন রাস্তার রক। কোনওদিন পার্কের বেঞ্চ। ফকির থেকে আমির হয়েছিলেন। সকাল ৭ টা রাত ১টা তাঁর কাজের ঘড়ি। কোনও ছুটি নেই। সেভাবেই রাজপথে উঠে আসা। জীবনের প্রথম ২৫ বছর জন্মদিন আর অন্যদিনের কোনও আলাদা মানে ছিল না। একদিন ছবিটা বদলালো। আর সেই বদলের কারিগর তিনি নিজেই।

জার্নি বদলায়। জীবন বদলায়। কিন্তু লড়াই করে উঠে আসার গল্প বদলায় না। স্ট্রাগলার গৌরাঙ্গ চক্রবর্তীর প্রেমে পড়েছিল বলিউড, তবে 'মিঠুন' নামে। নিজের শহরও সেই নামেই চিনেছিল জোড়াবাগানের ঘুপচি ঘরের ছেলেটাকে।
আজকের দিনেই জন্ম হয়েছিল তাঁর। লোহিয়া হাসপাতাল। জেনারেল ওয়ার্ড।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...