রাতে আজকাল ঘুম আসতে চায় না কিছুতেই। এপাশ-ওপাশ অনেকক্ষণ। তবু তার আসার নাম নেই।
বালিশে মাথা দিলেই যেন যত রাজ্যের চিন্তা। কখনও হাবিজাবি। কখনও দরকারি। মাথার মধ্যে যেন ভূতের নেত্য চলছে।
চোখ ধরে আসে। কপাল ভারি। তবু ঘুম নেই। মিউজিকের দাওয়াই কোনও কাজ দেয় না।
ঘড়ি এগোয়। ছটফটানি এতটুকু কমে না।
রাতের নেই ঘুম বিব্রত করে দিনকেও। সূর্যের আলো চোখ লাগলেও যেন বিরক্ত।
ফলাফল টেনশন, এনজাইটি,খিটখিটে মেজাজ।
এসব খুব চেনা সমস্যা। অতিমারীতে এই সমস্যা যেন আরও বেড়েছে।
আপাত সাধারণ সমস্যা হলেও তা থেকে বেরতে পারা অনেক সময়ই কঠিন হয়ে পড়ে।
তবে হাতের কাছে ওষুধ আছে। যোগব্যায়াম।
ঘুম না আসার অব্যর্থ দাওয়াই যেমন আসন।
আসলে শুধু ঘুম নয়, অনেক মানসিক সমস্যা থেকেই রেহাইয়ের হাতিয়ার হতে পারে যোগ।
পাঁচ হাজার বছরের পুরনো ভারতীয় ওষুধ।
শান্ত ভোরের নির্জনে খোলা হাওয়ায় শরীর চর্চা।
একটা আসন বা ম্যাট ছাড়া বাকিটা খালি হাতে।
আমার শরীর, অঙ্গ প্রত্যঙ্গ আমার আয়ত্বে আছে, আমার কথা শুনছে, তাদের আমি বশে আনতে পারছি, এটা যেন বড় এক আত্মবিশ্বাস।
প্রাণায়ামে থিতু হয় মন। মনোসংযোগ বাড়াতে অব্যর্থ।
প্রতিদিন ৩০ মিনিট যোগ অভ্যাস বদলে দেয় জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি।
এই ভাবনা শুধু এ দেশের যোগ বিশেষজ্ঞদের মত নয়, মেনে নিয়েছে বিদেশও।
যোগ ব্যায়াম সরাসরি প্রভাব ফেলে মস্তিষ্কে। একাধিক গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। যোগ যতটা শরীরের তার চেয়ে অনেক বেশি মনের।
অবসাদ, ভয়, দুশ্চিন্তা, মানসিক জটিলতা, অস্থির মন, সন্দেহপ্রবণতা এসব থেকে মুক্তির রাস্তা।
এমনকি পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার-এ চিকিৎসক ও মনোবিদরা যোগব্যায়ামের পরামর্শ দিচ্ছেন।
ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যোগ সবচেয়ে জনপ্রিয় 'ফিজিক্যাল এক্টিভিটিস'।
জনপ্রিয়তার নিরিখে যোগব্যায়াম এখন সেলিব্রিটিদের সেলিব্রিটি বলতে পারেন। যে সেলিব্রিটির কোনও ট্যানট্রাম নেই। যাকে সহজেই আনতে পারেন নিজের বাড়ি। বসাতে পারেন নিজের ড্রইংরুম থেকে ছাদ যেখানে খুশি।
যোগচর্চাকে আর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে একটি যোগ অ্যাপ আনল ভারত সরকার। যোগ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য এবং চর্চার বিশদ তাতে থাকবে। ২০২১- এর বিশ্ব যোগ দিবসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং ভারত সরকারের আয়ুশ মন্ত্রকের যৌথ উদ্যোগ এম যোগা অ্যাপ।