মুঘল স্মৃতি নিয়ে আজও জীবন্ত ‘নবাববাড়ি’

আজ  বলবো  বাংলার  শরিফাবাদে  নির্মিত   সপ্তদশ  শতাব্দীর  অসাধারণ  ইন্দো-সিরীয়  এক   স্থাপত্য  সম্পর্কে।   যদিও  এই   স্থাপত্য   ‘নবাববাড়ি’  বলেই  বেশি  পরিচিত।  শরিফাবাদ  অচেনা  লাগছে?  বেশ,   এই  স্থাপত্যের  সন্ধান  মেলে  বর্ধমান  শহরের  দক্ষিণ  প্রান্তে।  মুঘল রাজত্বে   আজকের  এই   বর্ধমানের  নাম  ছিল  ‘শরিফাবাদ’।   এই নাম  কিন্তু  এক   ইতিহাসের  সন্ধান  দেয়-  জায়গাটির  সাথে  আছে  মুঘলদের  যোগসূত্র।  দিল্লির   নবাব  ফারুকশিয়ার  এটি  নির্মাণ  করিয়েছিলেন  তার  প্রধান  সেনা  সৈয়দ খাজা আনোয়ারের উদ্দেশ্যে।   তিনি  বর্ধমানের  কাছে  এক  যুদ্ধে  নিহত  হন।  সম্রাট তাঁর  স্মৃতির  উদ্দেশ্যে সমাধিস্থ  করবার  পর  তার ওপর  একটি  সৌধ  নির্মাণ  করে  দেন। বিশাল  পাঁচিল  দিয়ে  ঘেরা  নবাব বাড়িতেই  এই  স্থাপত্যটি  দেখা  যায়। এই বাড়িতেই থাকতেন   সৈয়দ  খাজা  আনোয়ারের  পরিবার।

                         এর  চার কোণে চারটি মিনার রয়েছে।  আর আছে।সৌধের দুপাশে বাংলার দোচালার কাজ। এমন আকর্ষণীয় জোড় বাংলা  রীতির  সমাধি সৌধ সম্ভবত বাংলায় আর কোথাও নেই।  এর  পাশেই  রয়েছে  আর  এক  মুঘল  সেনা  সৈয়দ  আবুল  কাশেমের  সমাধি।  নবাব বাড়িতে আছে এক বিশাল  জলাশয়।  আর সেই  জলাশয়ের  উপর  আছে  হাওয়া মহল।  মুঘল রীতির আর এক  বিশেষ  নিদর্শন। জলাশয়ের ধার থেকে  হাওয়া মহল যুক্ত  রয়েছে  বহু খিলানের একটি  সেতু  দিয়ে। গ্রীষ্মকালীন  বিশ্রামস্থল হিসাবে  মহলটি  ব্যবহৃত  হত।  যদিও  এই  জলাশয়  এখন   জলহীন।  খিলানের  দরজায়  ঝুলছে পোড়ামাটির  ঘোড়া । সর্বত্র অযত্ন ও  জীর্ণতার ছাপ  সুস্পষ্ট   হলেও    সেই  মুঘল  স্মৃতি  আজ  বহন  করছে  এই   নবাব বাড়ি।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...