পথ দেখাচ্ছেন রাণী-মেঘনা

মেঘনা সাহু।  এইচআর মার্কেটিং বিষয়ে এমবিএ। 

রাণী কিন্নার। ট্রেনের কামরায় ভিক্ষে করতেন। পরে অটো রিকশা চালাতে শুরু করেন।

এই দুই রুপান্তরকামী ভারতের পরিবহণ ক্ষেত্রে এক বড় ধরনের বিপ্লব এনেছেন বলা যায়। মেঘনা ভুবনেশ্বরের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার ক্যাব চালক। আর রাণী দেশের প্রথম ফাইভ রেটেড ট্র্যান্সজেন্ডার ক্যাব চালক। দুই বহুজাতিক অ্যাপ ক্যাব সংস্থা তাদের পরিবহণ পরিষেবায় তৃতীয় লিঙ্গের চালকদের নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সম্প্রতি।  

রাস্তায় চলাফেরা করার ক্ষেত্রে নানা ধরনের সমস্যার মুখে পড়তে হয় মহিলাদের। রেজিস্ট্রেশন করা ক্যাব নিয়েও বিপদে পড়ার নজির অমিল নয়।

২০০৪ সালে দিল্লির গুরুগ্রামে ক্যাবে যাওয়ার সময় এক মহিলা চালকের দ্বারা  হেনস্থার শিকার হয়ে চলন্ত ক্যাব থেকে লাফ দেন।  হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৬, ৩৮৭ এবং ৫০৬ ধারায়  মামলা দায়ের করা হয়।  ওই বছরেই এমন ধরনের আরও বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটে। জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকেও হেনস্থার শিকার হতে হয়।

মেঘনা এবং রাণী তাঁদের লড়াইটা মোটেই সহজ ছিল না। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মূল ধারার কাজে সুযোগ দিতে বেশির ভাগ সংস্থাই নারাজ থাকে।

ড্রাইভিং শেখার সুযোগ বা লাইসেন্স টেস্ট এগুলো  খুব সহজে মেলেনি।  যাত্রীদের ভরসার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে।   

সেই অভিজ্ঞতার কথা বলতে  গিয়ে রাণী বলেন, ২০১৬ সালে তিনি অটো চালাতে শুরু করেন। কিন্তু সেই সময় কেউ তাঁর অটোতে উঠতে চাইত না। পরের বছর অ্যাম্বুলেন্স চালানোর সুযোগ আসে।

rani (2)

পরে এক বন্ধুর কথায় অ্যাপ ক্যাবে চেষ্টা করেন। কষ্ট করে নিজে একটা ক্যাবও কেনেন।

 মেঘনার কথায়, অনেক প্যাসেঞ্জারই প্রথমে সহজ থাকেন না। আবার অনেকেই আমার কথা, আমার পেশা, পরিবার, লড়াইয়ের গল্প শুনতে চান নিজে থেকেই।

rani (1)

উড়িষ্যা এবং ভুবনেশ্বরে নিজেদের সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে  উদাহরণ। অনেকেই অনুপ্রাণিত হচ্ছেন তাঁদের দেখে।

অনেক মহিলা যাত্রী যাঁরা পুরুষ ক্যাব  চালকদের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না, তাঁদের কাছে ট্র্যান্সজেন্ডার ক্যাব চালকরা ‘সেফ অপশন’।

সেই কারনেই রানী- মেঘনারা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের উৎসাহিত করছেন এই পেশায় আসার জন্য। তাঁদের কথায় নিজেদের দিন বদল নিজেদেরই করতে হবে। তাতে হয়ত আঘাত আসবে, রক্ত-ঘাম ঝরবে কিন্তু বদল আসবেই।

 

   

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...