আমাদের ছোটবেলা থেকেই কিছু কিছু বিষয়ের ওপর ভীতি থাকে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে আমরা কিছু বিষয়কে যমের মতন ভয় করি। তার ভিত্তিতেই আমাদের পড়াশোনার চলন নির্ধারিত হয়ে যায় ছোট থেকেই। কিন্তু আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, কোন বিষয়ই ভীতিপ্রদ নয়। হয়, ছোটরা ঠিকমত বিষয়টি অনুধাবন করতে পারেনা, অথবা তাদের সঠিকভাবে বোঝানো হয়না। ঠিকমত কোন বিষয়কে যদি বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বোঝানো যায় তাহলে যেকোনো বিষয়ই শিশুরা খেলাচ্ছলে বুঝে যেতে পারে। এক্ষেত্রে তথাকথিত বিজ্ঞান বিষয়ক বিষয়ের সঙ্গে কলা বিষয়ক বিষয়কেও বিজ্ঞানসম্মতভাবে বোঝাতে হবে। সবথেকে ভীতিপ্রদ বিষয় হল অঙ্ক এবং ইতিহাস। ইতিহাস তথ্য নির্ভর, কিন্তু অংক প্রায়োগিক বিষয়।
তাই সেই বিষয়টি যথেষ্ট সাবলীল করার জন্য একটু অন্যরকম ভাবনা ভেবেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে এবারে তৈরী হয়েছে গণিতের ল্যাবরেটরি। স্টেট কাউন্সিল অফ এডুকেশন রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং(এসসিইআরটি)-এর অফিসে তৈরী করা হয়েছে এই ল্যাবরেটরি। বুধবার ১১ ডিসেম্বর তার উদ্বোধন হল। কেন্দ্র ও রাজ্যের অনুদানের ভিত্তিতেই এই ল্যাবরেটরির উদ্বোধন হল। প্রাথমিক ও উচ্চমাষ্যমিক স্তরের পড়ুয়ারা এই ল্যাবরেটরি ব্যবহার করতে পারবে। এই রকম একটি ল্যাবরেটরি করে রাজ্য এক নজির সৃষ্টি করল তা বলাই বাহুল্য। এই রকম একটি ল্যাবরেটরি ছাত্রছাত্রীদের যথেষ্ট সহায়ক হবে বলেই মনে করছেন শিক্ষক মহল। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, এর মাধ্যমে অংকের প্রতি জড়তা কাটবে। অংকের -ভীতিও এইভাবেই কাটানো সম্ভব বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল। জ্যামিতিতে ব্যবহৃত চাঁদা, কম্পাস, চতুর্ভূজ, ত্রিকোণ, স্কেলের কাঠের মডেল তৈরী করে রাখা হয়েছে। যোগ-বিয়োগ বোঝানোর জন্যও ব্যবস্থা রয়েছে। ল্যাবরেটরিতে যে ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, তা বোঝাতে একটি বইও লেখা হয়েছে। তাতে এই ল্যাবরেটরির ব্যবহার সম্পর্কেও বোঝানো হয়েছে। উল্লেখ্য, এরকম ল্যাবরেটরি সিবিএসই-র বেশ কিছু স্কুলে রয়েছে। রাজ্যের স্কুলও যদি এই পদ্ধতি অবলম্বন করে তাহলে তা ভাল হবে। বিভিন্ন ডিস্ট্রিক্ট ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশন এন্ড ট্রেনিং-এর দুজন করে শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। কোনও স্কুলে তা এখনও তৈরী না হলেও, পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ঝাড়গ্রামের একলব্য মডেল স্কুলে তা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।