বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় একটি বহুতলে ঘটে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড। প্রায় রাত ১০টা নাগাদ ঢাকার বেইলি রোডে অবস্থিত একটি সাততলা ভবনে আগুন লেগে যায়।
জানা গিয়েছে যে এদিনের ঘটনায় অন্তত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে, মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া আহত অগুন্তি মানুষ। সমস্ত আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় আগুন লাগে। জানা গিয়েছে যে ৭ তলা বাড়ির প্রথম তলা থেকেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরপরেই একটার পর তলায় ছড়িয়ে পড়ে ভয়াবহ আগুন। মোট ১৩টি ইঞ্জিনের সাহায্যে প্রায় দু’ঘণ্টার প্রচেষ্টায় রাত ১১টা ৫০মিনিট নাগাদ আগুন নেভাতে সক্ষম হন দমকলকর্মীরা। এরপর আগুন নেভানোর পরেই শুরু হয় যায় উদ্ধারকাজ।
এই বাড়িটি সমস্ত বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হত। এই পুরো বহুতলটিতে খাবারের দোকান ছাড়াও জামাকাপড়, মোবাইল এবং অন্যান্য দোকান ছিল। এছাড়া বহুতলটির দ্বিতীয় তলে একটি বিরিয়ানির দোকান ছিল। ফলে, সেখানে আটকে পড়েন অনেক মানুষ। দেখা যায় বাঁচার জন্য় অনেকেই বহুতলের উপর থেকে ঝাঁপ দেন।
দমকল বিভাগের আধিকারিক মহম্মদ মইনুদ্দিন সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন যে বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম এবং দ্বিতলে সর্বপ্রথম আগুন লাগে। এরপর আগুন ক্রমে উপরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে, নীচ থেকে উপরের দিকে আগুন ছড়িয়ে পড়ায় বাড়িটির মধ্যেই অনেকে আটকে পড়েন। এদিন আগুন এবং ধোঁয়ার হাত থেকে বাঁচতে অনেকে ছাদে চলে গিয়েছিলেন।
তিনি আরও জানান যে বহুতলটির ভিতর থেকে মোট ৭৫ জনকে জীবিত অবস্থায় বাইরে বার করে আনা গিয়েছে। এদের মধ্যে ৪০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে ফের উদ্ধারকাজ শুরু করা হবে।
বাড়িটিতে বেশ কয়েকটি রেস্তোরাঁ ছিল। সেগুলিতে থাকা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ফলে আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কী ভাবে আগুন লাগল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়দের মতে একটি রেস্তোরাঁ থেকে আগুনের সূত্রপাত। তাঁদের দাবি ঢাকার ওই বহুতলটিতে পদে পদে ছিল বিপদ। প্রায় প্রতিটি তলায় গ্যাস সিলিন্ডার রাখা থাকত। এমনকি সিঁড়িতেও রাখা থাকত গ্যাস সিলিন্ডার।
অন্যদিকে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্তলাল সেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করে সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “এখনও পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সংখ্যাটি আরও বাড়তেও পারে। আহতদের চিকিৎসা চলছে।”