বর্তমানের জাঁক-জমক পূর্ণ বিয়েবাড়িতে গিয়ে অভ্যস্ত আমরা আগেকার দিনের বিয়েবাড়ির রকম-সকম কেমন ছিল, তাই নিয়ে অবশ্যই কৌতূহল রয়েছে। এখন বিয়ে হয় বিভিন্ন থিমকে কেন্দ্র করে। সেই মত হয় পোশাক নির্বাচন থেকে শুরু করে ফ্যাশন, এমন কি উপহার প্রদান-ও। কিন্তু আগেও কি এমনই ছিল? আগেকার দিনে কেমন করে আনন্দ করত সকলে বিয়েবাড়ি? কেমন ছিল উপহার দেওয়ার প্রচলন? আসুন জেনে নিই। বিয়ের বিভিন্ন রকম নিয়ম কানুন তো ছিলই। ছিল উপহার দেওয়াও।
তবে সেই সময় বিশেষ ভাববার বিষয় ছিল উপহার দেওয়া। লাল বা গোলাপি রঙের কাগজে রঙিন কালি বা সোনার জল দিয়ে লেখা হতো প্রীতি উপহার, কেউ কেউ আট আনা বা ১টি টাকা দিতেন উপহার হিসেবে, কেউ কেউ দামি কাপড় বা অন্যান্য জিনিস দিতেন, উপহার দেওয়ার মধ্যে বেশ একটা কাব্যিক ব্যাপার ছিল| তবে এসব কিছুর আগে যা নিয়ে ভাবনা চিন্তা হত তা হলো নিমন্ত্রণ পর্ব, সেকালে নিমন্ত্রণ করতে হতো বাড়িতে গিয়েই। কার্ড দেওয়ার চল ছিলোনা, বিশেষ কারণবশত নিমন্ত্রণ করতে যেতে না পারলে চিঠি পাঠানো হতো আর তারই পুনশ্চে লেখা থাকতো পত্র দ্বারা নিমন্ত্রণের ত্রুটি মার্জনীয়। মহিলাদের নিমন্ত্রণ করার জন্য মহিলাদেরকেই আসতে হতো না হলে সেই নিমন্ত্রণ গ্রহণযোগ্য বলে মনে করা হতনা। মহিলাদের ভোজ শেষ হওয়ার পর বাড়িতেও পৌঁছে দিয়ে আসতে হতো, আবার যে সমস্ত আত্মীয় দূর থেকে আসতো তারা ফিরে যাওয়ার খরচ বাবদ কিছু টাকাও নিয়ে যেতেন গৃহকর্তার কাছ থেকে। একবিংশ শতাব্দীতে এসব রীতি রেওয়াজের আর কিছুই নেই বটে তবে ভাবতে ভালোই লাগে একটা বাড়ি বিয়ের জন্য সাজানো হচ্ছে, কড়িকাঠে ঝাড়লণ্ঠন ঝোলানো হচ্ছে, হোগলা পাতার ম্যারাপ বাঁধা হচ্ছে, তার নিচেই খাওয়ানো হবে অতিথি অভ্যাগতদের, বর আসবে চতুর্দোলায় করে, পেছনে আসবে ব্যান্ড পার্টি, বাড়ির মেয়েরা অতিথিদের গায়ে গোলাপ জল ছিটিয়ে দেবে, উৎসবে মেতে উঠবে দুটো পরিবার।