তাঁর সুরেই বাঙালির শিউলি ভোরের শুরু। শরৎ মেঘের পাল ছুটিয়ে আনমনা হয় সকাল। পুজোর বাঁশির ডাকে দিন গুনতির শুরু।
ছোট্টখাট্টো মানুষটি। ঠিক যেন শিউলি ফুল। যাঁর গুনগুন সুরের টান উতল করেছিল রাইচাঁদ বড়াল মতো বাঘা মানুষকেও।
ডাক নাম ‘পানসি’। বাঙালির ‘সুপ্রীতি ঘোষ’।
আলোর বেণু ছাড়াও গাইতেন ‘বিমানে বিমানে আলোকের গানে’। কণ্ঠের যাদুতে ঘনিয়ে আসত পুজো ঘোর। শরৎ মেঘের রাংতা রোদ ঘিরে ধরে মুহুর্তে।
এক সময় গাইতেন রবীন্দ্রনাথের গান। তাঁর গান জীবনের শুরুটাই রবিঠাকুর দিয়ে। অন্যান্য গান গাইলেও রবীন্দ্রসঙ্গীত জগতে তিনি ছিলেন নিয়মিত নাম।
স্পষ্ট উচ্চারণে স্নিগ্ধ গায়কী এই ছিল তাঁর বৈশিষ্ট্য।
জ্যাঠামশাই রেডিও স্টেশনের বড়বাবু। বাড়িতে ভরপুর গানের পরিবেশ। কে আসতেন না শেখানে! রাধারানী দেবী থেকে শুরু পঙ্কজ মল্লিক সকলেই। জ্যাঠামশাইয়ের করে তাঁর হাত ধরেই প্রথম পা রাখা গার্স্টিন প্লেসে। রবীন্দ্রনাথের গান গেয়ে প্রথম গানের মানুষদের চোখে পড়ে তিনি।
‘মহিষাসুরমর্দিনী’- তাঁকে সমাজের সব স্তরে সর্বাধিক পরিচিতি দিয়েছিল। পুজোর সময় আলাদা করে পুজোর গানও গাইতেন।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রভাতে আকাশবাণী থেকে প্রচারিত হল সুপ্রীতি ঘোষের গান। সেই বিশেষ অনুষ্ঠানে সুপ্রীতি ছাড়াও অংশগ্রহণ করেছিলেন পঙ্কজকুমার মল্লিক, জগন্ময় মিত্র ও হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।
২০০৯ সালের ২২শে এপ্রিল প্রয়াত হন সুপ্রীতি ঘোষ৷ বাঙালির শরৎ ভোরে আজও সুরে সুরে জেগে আছেন সুপ্রীতি...