বিজ্ঞানের পূজারী ডাঃ মহেন্দ্রলাল সরকার কেন শ্রীরামকৃষ্ণের সান্নিধ্যে এলেন?

মহেন্দ্রলাল সরকার। উনিশ শতকের মনীষী। ডাক্তার হিসেবে তিনি যত বিখ্যাত, ততটাই বিখ্যাত তিনি ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণদেবের ভাবশিষ্য হিসেবেও। ডাক্তারি হল বিজ্ঞান অর্থাৎ ভবের ব্যাপার; কিন্তু শ্রীরামকৃষ্ণের ভগবৎ-ভক্তি তো ভাবের ব্যাপার। অধ্যাত্ম ও বিজ্ঞানের নিকট বা সুদূর কোন সম্পর্কই নেই। দুটো সমান্তরাল রেললাইন; কোনদিন মেলে না। সেই অমিল ব্যাপারটা কীভাবে মহেন্দ্রলালের জীবনে মিলল, সেটাই আমাদের অনুসন্ধানের বিষয়। এই যে মিলন, এটা স্ববিরোধী নয় কী?

এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, হঠাৎ এমন একটা বিটকেল প্রসঙ্গের অবতারণা কেন করলাম? আসলে, আজ অর্থাৎ ২ নভেম্বর মহেন্দ্রলালের জন্মদিন। এই দিনে ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে হাওড়া জেলার পাইকপাড়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাই আজ তাঁকে স্মরণ করার দিন; আর তার মধ্য দিয়েই আমরা দেখাবো বিজ্ঞান ও অধ্যাত্ম মিলমিশ হবার জ্বলন্ত প্রেক্ষাপট রয়েছে মহেন্দ্রলালের বেড়ে ওঠা ও ‘হয়ে ওঠা’র প্রক্রিয়ার মধ্যেই। সেটা কেমন, আসুন বিচার করে দেখিঃ

মহেন্দ্রলাল সরকার সম্পর্কে উনিশ শতকেরই আর এক মনীষী শিবনাথ শাস্ত্রী তাঁর ‘রামতনু লাহিড়ী ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ’ গ্রন্থে লিখেছেনঃ

‘বঙ্গদেশকে যত লোক লোকচক্ষে উঁচু করিয়া তুলিয়াছেন এবং শিক্ষিত বাঙ্গালিগণের মনে মনুষ্যত্বের আকাঙ্ক্ষা উদ্দীপ্ত করিয়াছেন, তাঁহাদের মধ্যে ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার একজন অগ্রগণ্য ব্যক্তি। এমন বিমল সত্যানুরাগ অতি অল্প লোকের মনে দেখিতে পাওয়া যায়; এরূপ সাহস ও দৃঢ়চিত্ততা অতি অল্প বাঙ্গালীই দেখাইতে পারিয়াছেন; এরূপ জ্ঞানানুরাগ এই বঙ্গদেশে দুর্লভ।’ মন্তব্যটি নিঃসন্দেহে ব্যক্তি মহেন্দ্রলাল সম্পর্কে যথার্থ মূল্যায়ন।

মহেন্দ্রলাল বনেদি পরিবারের সন্তান ছিলেন না। কিন্তু তাঁর চরিত্রে যথার্থই বনেদিয়ানা ছিল। লড়াই করে বাঁচার সূত্রেই এই বনেদিয়ানা তিনি অর্জন করেন। তাঁর যখন পাঁচ বছর বয়স, তখন বাবা মারা যান; মা মারা যান ন’বছর বয়স হতে-না-হতেই। বাবা অসুস্থ হওয়ার পর তাঁরা সপরিবারে মামার বাড়ির আশ্রিত হন। মামাবাড়ি কলকাতার লেবুতলায়। ফলে, পিতৃমাতৃ বিয়োগের পর মামাদের ওপরেই বর্তায় তাঁর বেড়ে ওঠার দায়ভার। মামাদের অবস্থাও তেমন ভালো ছিল না। তবুও ভাগ্নের শিক্ষাদীক্ষায় তাঁরা অবেহেলা করেননি। হেয়ার সাহেবের বদান্যতায় মহেন্দ্রলাল বিনা-বেতনে পড়বার সুযোগ পান হেয়ার স্কুলে। তাঁর অসম্ভব মেধা ছিল, ছিল আর-পাঁচজন ছাত্রের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পাঠপরিধি; তাঁর মতো বিচিত্র বিষয়ে বই পড়ার ক্ষমতা সেই বয়সে আর কারও মধ্যে সহজে দেখা যায়নি। ফলে, অধীত জ্ঞানের দিক থেকে তাদের সকলের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন তিনি। কাজেই হিন্দু কলেজেও (পরবর্তীকালের প্রেসিডেন্সি কলেজ) বিনিবেতনে পড়তে তাঁকে বেগ পেতে হয়নি। সমস্ত সুযোগই তিনি পেয়েছেন নিজের কৃতিত্বে তাঁর অসাধারণ মেধার জন্য।

ছোট থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি মহেন্দ্রলালের এক অদ্ভুত ভালোবাসা ছিল। কিন্তু বিজ্ঞান-বিষয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে একেবারেই ছিল না। যেটুকু প্রাতিষ্ঠানিক বিজ্ঞানচর্চা তখন বঙ্গদেশে হত, সেটুকু মেডিকেল কলেজের চৌহদ্দিতেই সীমাবদ্ধ ছিল। ফলে, মহেন্দ্রলাল বিজ্ঞানের অমোঘ টানে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে গেলেন। কলেজে ভর্তি হয়েই অধীত জ্ঞানের ব্যাপ্তির জন্য সকলের চোখে পড়তে লাগলেন, অধ্যাপকদের প্রিয় হয়ে উঠতে লাগলেন।

মহেন্দ্রলাল তখন দ্বিতীয় বার্ষিক শ্রেণির ছাত্র। এক আত্মীয়ের চোখের সমস্যা। তাই তাঁকে সঙ্গে করে আপন কলেজের চক্ষু-বিভাগে নিয়ে গেছেন ভালোভাবে দেখিয়ে দিতে। এই সময় চক্ষু-বিভাগের ডাক্তার আর্চার পঞ্চম বার্ষিক শ্রেণির ছাত্রদের শিক্ষা দেবার জন্য চক্ষু বিষয়ে নানান বক্তৃতা দিয়ে একসময় তাদের উদ্দেশ্যে একখানা বেশ জটিল প্রশ্ন করলেন। কিন্তু উপস্থিত ছাত্রেরা সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারল না। উত্তরটি মহেন্দ্রলালের জানা ছিল। তিনি কিছুটা দূরে ছিলেন। প্রশ্নটা তাঁকে করা হয়নি, তাঁর উত্তর দেবারও কথা না। কিন্তু চুপ করে এড়িয়ে যেতে পারলেন না মহেন্দ্রলাল। তিনি একটু চেঁচিয়ে, যাতে আর্চার শুনতে পান, এমনভাবে উত্তরটি দিলেন। উত্তর শুনে আর্চার বেশ তুষ্ট হলেন। ডেকে জানলেন, নীচু ক্লাসের ছাত্র। চক্ষু তাঁদের পাঠ্য না। তবুও মহেন্দ্রলাল জটিল প্রশ্নের উত্তর দিল কী করে! অবাক হলেন। বিদ্যার দৌড় কতটা দেখার জন্য আর্চার চক্ষু বিষয়ে আরও কয়েকটা জটিল প্রশ্ন করলেন মহেন্দ্রলালকে। মহেন্দ্রলাল সে-সবেরও যথাযথ উত্তর দিলেন। এই ঘটনার পর এ-দিন থেকে তিনি শুধু আর্চারের প্রিয়ই হলেন না, চক্ষু সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানার জন্য তাঁর কাছে নিত্যদিন পাঠ নেওয়ার সুযোগও পেলেন। সুতরাং, শাস্ত্র হিসেবে বিজ্ঞানকে মহেন্দ্রলাল সত্যিই ভালবাসতেন; তাঁর অনন্ত জ্ঞানস্পৃহাও ছিল; তাই সময়ের বহু আগেই উচ্চশ্রেণির বই সমূহ পড়ে শেষ করে ফেলতেন। তারই ফলস্বরূপ তিনি শিক্ষকদের কাছে সসম্ভ্রম ভালোবাসা যেমন পেয়েছেন; তেমনি কৃতিত্বের সঙ্গে অর্জন করেছেন ক্যালকাটা মেডিকেল কলেজের সর্বোচ্চ ডিগ্রি ‘এল.এম.এস’ ও ‘এম.ডি’। ডাক্তার চন্দ্রকুমার দে’র পর তিনিই দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি এই ডিগ্রি অর্জন করেন।

ডাক্তার সূর্যকুমার চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এই সময় কলকাতায় ব্রিটিশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের একটি শাখা স্থাপিত হল। মহেন্দ্রলালও অচিরেই তার সভ্য হলেন এবং নেতৃত্বে এগিয়ে এলেন। এ্যাসোসিয়েশনের বক্তৃতায় হ্যানিম্যানের হোমিওপ্যাথিকে হাতুড়েদের চিকিৎসা বলে একদিন খুব হাততালি পেলেন। আত্মতুষ্টও হলেন। তারই মাঝে এক বন্ধু একদিন তাঁকে মর্গানের ‘ফিলজফি অব হোমিওপ্যাথি’ নামের একটি বই দিয়ে গেল। পাঠানুরাগী মহেন্দ্রলালের পাঠে কোন বাছবিচার ছিল না। তিনি এই চিকিৎসাপদ্ধতির বিরুদ্ধ-ভাবাপন্ন হলেও বইটি পড়লেন। এবং বইটি পড়ে যথেষ্ট প্রভাবিত হলেন। বিদেশ থেকে হোমিওপ্যাথির ওপর যে সমস্ত ভালো ভালো বই আছে সব আনিয়ে পড়লেন। পাঠ সমাপন যখন হল, তখন তিনি যেন অন্য মানুষ। আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার পরিবর্তে হোমিওপ্যাথিকে ভালোবেসে ফেলেছেন। এ্যাসোসিয়েশনের পরের সভায় তিনি হোমিওপ্যাথির হয়ে সওয়াল করলেন। তাতে সভায় ছিছিক্কার উঠল। এ্যাসোসিয়েশন থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হল। তাঁকে বয়কট করা হল। সমসাময়িক সংবাদপত্রে তোলপাড় উঠল। কিন্তু মহেন্দ্রলালকে কোন কিছুই বিচলিত করতে পারল না। তিনি যা সত্য বলে উপলব্ধি করেছেন, কোনকিছুর জন্য তা থেকে সরে দাঁড়ালেন না। এই সত্যনিষ্ঠা, এই বনেদিয়ানা, শিরদাঁড়ার সেই জোর তাঁর মধ্যে ছিল। পরবর্তী ছ’মাস তিনি একটাও রুগি পাননি; তবুও নবলব্ধ হোমিওপ্যাথী থেকে তিনি সরে যাননি। এভাবেই সেদিন বাঙালিকে তিনি মাথা উঁচু করে নিজের বিশ্বাসে ভর করে দাঁড়ানোর প্রেরণা জুগিয়েছেন, দেখিয়েছেন ‘পুরুষকার’ কাকে বলে।

ডাক্তার হিসেবে মহেন্দ্রলাল অত্যন্ত মানবিক ছিলেন। দুঃস্থ রোগিদের কাছে ফি নিতেন না। বিনি পয়সায় দিনের পর দিন বাড়ি গিয়ে তাদের চিকিৎসা করেছেন। এমন অনেক মানবিকতার অমূল্য কাহিনি তাঁর জীবনের মণিমুক্তোর মতো ছড়িয়ে আছে।

কিন্তু এই মানুষটাই আবার শ্রীরামকৃষ্ণের কাছে এলে তাঁর কাছ থেকে নড়তে চাইতেন না। দুঃস্থ-চোস্ত সমস্ত রোগি দেখার কথা ভুলে যেতেন। তাঁর এই রামকৃষ্ণ সান্নিধ্যের কথা কথামৃতে যেমন আছে, তেমনি আছে রামকৃষ্ণভক্তদের বিভিন্ন রচনায়। বৈকুণ্ঠনাথ সান্ন্যাল সংকলিত ‘শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ লীলামৃত’ গ্রন্থে আমরা দেখতে পাচ্ছিঃ

ঠাকুর তখন শ্যামপুকুরের ভাড়াবাড়িতে। সেখানে নিত্যি আসেন মহেন্দ্রলাল। বৈকুণ্ঠনাথ লিখছেনঃ

‘ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার ঠাকুরের চিকিৎসার্থ আগমন করিয়া প্রত্যহ তাঁহার নিকট অন্ততঃ দুই ঘন্টাকাল ঈশ্বরীয় কথায় অতিবাহিত করিতেন। বলিতেন, কি জানি তোমার উপর আমার একটা অনুরাগ হইয়াছে যে, দেখিয়া যাইয়াও নিশ্চিত হইতে পারি না। কেবল তোমারই বিষয় ভাবি। এরূপ তো অন্য কোন ধনী রোগী সম্বন্ধে হয় না। হয় তুমি আমাকে মোহিত করিয়াছ, নয় তো তোমার গুণে আমি মুগ্ধ হইয়াছি। দেখ না, বেলা অধিক হইয়াছে জানিয়াও তোমাকে ছাড়িয়া গৃহে যাইতে ইচ্ছা হইতেছে না।’

বক্তব্যে স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে যে, শ্রীরামকৃষ্ণের ব্যক্তিত্বের বিভায় মহেন্দ্রলাল মগ্ন হয়েছেন। যেভাবে মগ্ন হয়েছিলেন নরেন্দ্রনাথসহ অপরাপর ভক্তজনেরা। বোঝাই যাচ্ছে, ঠাকুরের সরল দার্শনিক উপদেশ মহেন্দ্রলালের অন্তরে বিশেষ শ্রদ্ধার আসন পেয়েছে। আসলে, মহেন্দ্রলাল বিজ্ঞানের পাঠক, বিজ্ঞান উৎসুক এক মানুষ; তিনি বিজ্ঞানী নন। জগত-প্রপঞ্চ সম্পর্কে নির্মোহ নন। দর্শন তাঁকে দুর্বল করে। হোমিওপ্যাথীর কার্যকারিতা তাঁকে মুগ্ধ করার আগে হোমিওপ্যাথীর দর্শন তাঁকে মুগ্ধ করেছে। তাতেই তিনি আধুনিক চিকিৎসার পথ থেকে সরে দাঁড়াবেন, এটা স্থির করে নিয়েছেন। তাঁর চরিত্রে দৃঢ়তা ছিল, কিন্তু ভাবালুতা ছিল তার চেয়ে বেশি। একটা সময়ে তিনি বুঝেছিলেন যে হোমিওপ্যাথীর সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তখন ঠাকুরের চিকিৎসাতে মডার্ন চিকিৎসক ডাকার অনুমতি তিনি নিজেই দিয়েছেন। ম্যালেরিয়ায় হোমিওপ্যাথী বিরুদ্ধ কুইনাইন প্রয়োগ করেছেন। ফলে, ভাবালুতার আবেশে মডার্ন চিকিৎসা থেকে সরে এসে পরে হয়তো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলেন মহেন্দ্রলাল। আর ঈশ্বর বিশ্বাস? এটা তাঁর আজন্মের সংস্কার। অকালে বাবা-মাকে হারিয়ে ঈশ্বর-ভাগ্য-ললাট লিখন সমস্তই তাঁর ‘বেড়ে ওঠা’ ‘হয়ে ওঠা’র সঙ্গে অকাতরে মিশে গেছে, আর-পাঁচজন আপাত হতভাগ্য মানুষের জীবনে যেভাবে মেশে। বিজ্ঞানের পাঠ নিয়েও মহেন্দ্রলাল তাকে অতিক্রম করতে পারেননি। পারেননি সনাতন দর্শন বা ফিলজফির ওপর তাঁর দুর্বলতার জন্যই।

মহেন্দ্রলাল ‘বিজ্ঞান সভা’ গড়ে তুলে বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার পথ প্রশস্ত করেছিলেন। কিন্তু তাঁর মন প্রকৃত বিজ্ঞানচর্চার অনুকূল ছিল না। বিজ্ঞান যুক্তি ও প্রমাণের ওপর ভর দিয়ে চলে, ভাবের তরণী বেয়ে নয়। মহেন্দ্রলালের যথার্থ বৈজ্ঞানিক মন থাকলে শ্রীরামকৃষ্ণকে বলতে পারতেন না, ‘এই যে বিজ্ঞানের এত চর্চা করছি কেন? আশা করি, ইহা দ্বারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব সহজেই প্রমাণ করিতে পারিব।’ কিংবা ‘তুমি যদি বল, তোমার দর্শনে যত লোক আসিয়াছে, তাহাদের পাদুকার মালা গলায় পরিয়া আমি স্বচ্ছন্দে পথে যাইতে পারি।’ (বৈকুণ্ঠনাথ সান্ন্যালের পূর্বোক্ত গ্রন্থ) এই সমর্পণ বৈজ্ঞানিকের নয়; এটি দর্শন(ফিলজফি)পিয়াসী ভক্তজনের অন্তরলোক। বিজ্ঞান-সাধনার কর্মকাণ্ড পেরিয়ে মহেন্দ্রলাল শেষপর্যন্ত তাই একজন উদার-মানবিক চিকিৎসক ও পরলোক, দৈববিশ্বাসী সমর্পিত ভক্তজন। সেই দর্শনে ভর করেই বিজ্ঞানের আঙিনা ছেড়ে তিনি সহজেই শ্রীরামকৃষ্ণের ভাবশিষ্য হয়ে উঠতে পেরেছিলেন।।...

 

 

 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...