মাঘ মাসে কেন কল্পবাস করেন সন্ন্যাসী এবং গৃহী মানুষ?

“ মাগে নিমাগ্নাঃ সলিলে সুশীতে বিমুক্তপাস্ত্রাদিবম্ প্রয়ন্তি”

পুরাণে মাঘ মাসকে স্নান ও দানের মাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মকর সংক্রান্তির পরের দিন থেকে শুরু হয়েছে মাঘ মাস। বছরের ১১ তম মাস মাঘ মাস। মাঘে শ্রী কৃষ্ণ, দেবী গঙ্গা ও সূর্যদেবের পুজোর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। 

মাঘ মাস মাধ অর্থাৎ মাধবের সঙ্গে সম্পর্কিত যা কৃষ্ণের একটি রূপ। হিন্দু ধর্ম অনুসারে, এই মাসকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়। মনে করা হয়, শ্রী হরি নারায়ণ, সূর্য দেবতার আরাধনা করলে এবং মাঘ মাসে গঙ্গা নদীতে স্নান করলে সমস্ত পাপ নাশ হয়। নিয়ম মেনে প্রতি বছর মাঘ মাসে প্রয়াগরাজেও মাঘ মেলা হয়। এই সময়ে কল্পবাস করার প্রথাও রয়েছে। এই মাসে কল্পবাস, কৃষ্ণ আরাধনার মাহাত্ম্য মেনে চলেন ধর্মপ্রাণ মানুষ।

কল্পবাস কী?

প্রয়াগ মাঘমেলায় কল্পবাস করেন ভক্তরা। বন্ধনহীন সাধু সন্ন্যাসী এবং গৃহী মানুষ উভয়েই কল্পবাস করে থাকে। বহু প্রাচীন এই প্রথা। মাঘ মেলা গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর তীরে ত্যাগ, তপস্যা ও বৈরাগ্যের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। কল্পবাসে সঙ্গম তীরে কিছু বিশেষ সময়ের জন্য বাস করা হয়। যাঁরা কল্পবাস করেন তাঁদের কল্পবাসী বলা হয়। এই বসবাসকালে সৎসঙ্গ, নদীতে স্নান ও স্বাধ্যায় করা হয়ে থাকে। লোক বিশ্বাস অনুযায়ী নিয়ম মেনে কল্পবাস করলে জীবনে সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করা যায়। যে কল্পবাসী তপস্যা ও একাগ্রতার সঙ্গে কল্পবাস করেন, তিনি নিজের মন ও ইন্দ্রিয়কে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা জন্মায়। এক মাসের কল্পবাসের মাধ্যমে ব্যক্তি একটি কল্প অর্থাৎ ব্রহ্মার এক দিনের পুণ্য লাভ করতে পারেন। ৪৫ দিনকে সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি এই চার যুগের প্রতীক মানা হয়। গত জীবনের পাপ থেকে মুক্তি পেতে সঙ্গম তীরে প্রায়শ্চিত করেন বহু ভক্ত।

এই বছর ১৫ জানুয়ারি মকর রাশিতে প্রবেশ করেছে সূর্য। প্রয়াগরাজে পৌষ সংক্রান্তির দিন থেকেই শুরু হয়েছে মাঘ মেলা। ৮ মার্চ মহাশিবরাত্রির দিন শেষ হবে মেলা।

মাঘ মেলা প্রথম স্নান- ১৫ জানুয়ারি

দ্বিতীয় স্নান- ২৫ জানুয়ারি

তৃতীয় স্নান- ৯ ফেব্রুয়ারি (মৌনি অমাবস্যা)

চতুর্থ স্নান- ১৪ ফেব্রুয়ারি (বসন্ত পঞ্চমী)

পঞ্চম স্নান- ২৪ ফেব্রুয়ারি (মাঘ পূর্ণিমা)

অন্তিম স্নান- ৮ মার্চ (মহাশিবরাত্রি) 

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...