সালটা ১৯৬৩। কলকাতার কুমোরটুলি থেকে জলপথে উমা পাড়ি দিলেন সুদূর বিলেতে। প্রখ্যাত সাংবাদিক স্বর্গীয় তুষার কান্তি ঘোষের উদ্যোগে লন্ডনের মাটিতে সেই প্রথম দুর্গোৎসবের সূচনা। ইংল্যান্ড অধিবাসী বাঙালিরা পায় প্রথম দুর্গা পুজোর স্বাদ। জিয়ো বাংলা আয়োজিত 'শারদ সম্মান ২০১৯' উপলক্ষে ভিডিও কলিং-এর মাধ্যমে আমরা যোগাযোগ করেছিলাম সেই দুর্গা পূজা কমিটির ট্রাস্টি মৈনাক রায় ও ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটার সর্বরী রায়ের সঙ্গে।
সঞ্চালক মনীষা'র সঙ্গে পুজোর আড্ডায় তাঁরা জানালেন তাঁদের পুজোর ইতিহাস-বর্তমান। তৎকালিন লন্ডনে দুর্গা পুজো করাটা সহজ কাজ ছিল না, কিন্তু লর্ড সারা পল, লর্ড আরএন বাগরি, শ্রী এসএন গৌরিসারিয়া ও এন শেট্টির উদ্যোগে শুরু হয় মাতৃ আরাধনা। দেখতে দেখতে ৫৬ বছর হয়ে গেল লন্ডনের এই দুর্গা পুজোর। তবে আজও সেই উন্মাদনায় বিন্দু মাত্র ঘাটতি পড়েনি। এই ৫৬ বছরের পথচলায়, প্রথমে সেন্ট্রাল লন্ডনের ‘মেরি ওয়ার্ল্ড' হলেই শুরু হয়ে পুজো। তারপর একে একে ‘ক্যামডেন কমিইনিটি হল’, ‘লন্ডন আইরিজ সেন্টার কমিউনিটি’ হল ও বর্তমানে অর্থাৎ এইবছর সেন্ট্রাল লন্ডনের ‘সুইস কটেজ লাইব্রেরি’-কে পুজো উদ্যোক্তারা নির্বাচন করেছেন মাতৃ আরাধনার স্থান হিসেবে।
তবে এককথায় যাঁকে লন্ডনের এই দুর্গোৎসবের প্রধান উদ্যক্তা বলা যেতে পারে, তিনি হলেন এই দুর্গা পুজোর পৃষ্ঠপোষক বিখ্যাত শিল্পপতী তথা ইস্পাত ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান লক্ষী মিত্তল। মৈনাক বাবুর মতে তিনি যদি তাঁদের পাশে এসে না দাঁড়াতেন তাহলে হয়ত বিদেশে এভাবে পুজোর আয়জন করা সম্ভবই হতো না।
কলকাতার পাশাপাশি তাঁরাও এবার থিমের পুজো করতে চলেছে লন্ডনে। তাঁদের এবারের থিম কবি সুব্রত পালের কবিতা অবলম্বনে “তোমার দুর্গা, আমার দুর্গা”। পুজোর পাঁচটি দিন আলাদা করে ‘শেফ’ বা পাচক এনে চলে মায়ের ভোগ তৈরীর কাজ, যার তত্ত্বাবধানে থাকে পূজা কমিটির মহিলা সদস্যরা। খাওয়া দাওয়ার পাশাপাশি পুজোর প্রত্যেকদিন থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। যার মধ্যে প্রধান উল্লেখ্য সপ্তমির দিন ‘কপালকুন্ডলা’ যাত্রা। জিয়ো বাংলা শারদ সম্মান ২০১৯-এ অংশগ্রহন করার জন্য লন্ডন দুর্গোৎসব কমিটিকে, জিয়ো বাংলার তরফ থেকে রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা।