কথায় বলে, মৃত্যুর আশা করলে নাকি আয়ু বেড়ে যায়। আর এই কথাটি মাথায় রেখেই প্রায় ২৫,০০০ মানুষ অংশগ্রহণ করলো দক্ষিণ কোরিয়ার এক নিরাময় কেন্দ্রের মৃত্যুর উৎসবে। মৃত্যুর উৎসবটির মূল উদ্দেশ্য ছিল বাঁচার মান বৃদ্ধি করা। মৃত্যু নিয়ে যখন একটি মানুষ উদ্বিগ্ন হয় বা তার থেকেও বড় কথা যখন একটি মানুষ মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করে তখন তার কাছে তার জীবনের প্রতি অভিগমন অনেকটাই সহজ হয়, জানালেন ৭৫ বছর বয়সী চো জি হি যিনি এই মৃত্যুর উৎসবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
সিনিয়র ওয়েলফেয়ার সেন্টারের 'ডাইং ওয়েল' প্রোগ্রামটিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন কিশোর, যুবক থেকে শুরু করে বহু অবসরপ্রাপ্ত মানুষ। এই উৎসবটিতে আগত সমস্ত মানুষ মৃত্যুর আগে যা যা করণীয় সমস্তটাই করেছেন। উইল লেখা থেকে শুরু করে, ছবি বাঁধানো সবটাই করেছেন তারা। সবথেকে বড় কথা মৃত্যুর পর মানুষকে যেভাবে কফিনে শোয়ানো হয় সেভাবেই প্রায় ১০ মিনিট নিজেদের কফিনবন্দি করে রেখেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার এক ইউনিভার্সিটির ছাত্রের কথায়, প্রথমবারের জন্য এই ধরণের অভিজ্ঞতা হয়েছে তার । প্রথমে তিনি বিশ্বাস করতে পারেননি যে তার সাথে ঠিক কি হচ্ছে? সেই ছাত্র জানিয়েছে, পড়াশোনার শেষে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা আছে তার। আসান মেডিক্যাল সেন্টারের প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর জানিয়েছেন, খুব কম বয়স থেকেই যাতে মৃত্যু সম্পর্কে সর্বদা অবগত থাকে ছাত্ররা তার জন্য এই ধরণের একটি প্রোগ্রাম করা প্রয়োজন ছিল। জানা গেছে, ৪০ টির মধ্যে মোট ৩৩ টি দেশ অংশগ্রহণ করেছিল এই সার্ভেতে।
জানা গেছে, দক্ষিণ কোরিয়ায় গত দুইবছরে আত্মহত্যার হার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২০.২ পার ১০,০০০ মানুষ অর্থাৎ প্রতি ১০,০০০ মানুষের মধ্যে ২০.২ জন মানুষ আত্মহত্যা করছে যা সারাবিশ্বের অর্থাৎ গ্লোবাল অ্যাভারেজের থেকেও দ্বিগুন। এই কারনে দক্ষিন কোরিয়ার একটি ফিউনেরাল সংস্থার পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় এই অনুস্থানের। যেখানে জীবিত মানুষেরা গিয়ে তাঁর মৃত্যুর পরবর্তী জীবন প্রত্যক্ষ করতে পারবে।