লিথিয়ামের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে বিশ্ববাজারে। আমাদের ব্যবহৃত স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, গাড়ি -এই সমস্ততেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে লিথিয়ামের ব্যাটারি। কিন্তু এই ধাতু তো অফুরন্ত নয়। ভবিষ্যতে এই বিপুল পরিমাণ চাহিদা মেটাতে ঘাটতি হতে পারে লিথিয়ামের। এবার সেই ক্ষতিপূরণ করার উপায় খুঁজলেন রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল। সেই দলেই রয়েছেন বাংলার মেয়ে সোহিনী ভট্টাচার্য।
হাইলাইটস:
১। ব্যবহৃত ব্যাটারি থেকে লিথিয়াম নিষ্কাশন করার পথ খুঁজলেন বিজ্ঞানীরা
২। গবেষক দলে রয়েছেন বাংলার মেয়ে সোহিনী
৩। এবার প্রায় ১৫ মিনিটে ৮৭ শতাংশ লিথিয়াম বের করা সম্ভব
লিথিয়াম দিয়ে যে ব্যাটারি তৈরি হয়েছে, সেই ব্যবহৃত ব্যাটারি থেকেই যদি আবারও লিথিয়াম নিষ্কাশন করা সম্ভব হয়, তাহলে বিশ্ব চাহিদায় এই ধাতুর ঘাটতি পূরণ করা অনেকটাই সহজ হবে। আর সেই কাজ করতেই উদ্যোগ নিয়েছে রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। এই দলের নেতৃত্বে রয়েছেন পুলিকেল অজয়ন। সম্প্রতি 'অ্যাডভান্সড ফাংশনাল মেটিরিয়ালস'-এ প্রকাশিত হয়েছে তাদের রিপোর্ট। আর তাতেই সোহিনীরা দেখিয়েছেন, কীভাবে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারির ক্যাথোড থেকে মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে ৫০ শতাংশ লিথিয়াম নিষ্কাশন করা সম্ভব।
ছোটবেলা থেকেই মেধাবী সোহিনী। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক স্তরে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বেঙ্গালুরুর জহরলাল নেহেরু সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চ থেকে মেটেরিয়াল সায়েন্সে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করেন তিনি। এরপর রাইস বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো হিসেবে মার্কিন মুলুকে গবেষণার কাজ শুরু করেন।
তার মতে, নতুন পদ্ধতিতে লিথিয়াম নিষ্কাশন অনেকটা মাইক্রোওভেনে রান্না করবার মতন। ডিইএস-এর সাথে মাইক্রোওয়েভ টেকনোলজি ব্যবহার করলে লিথিয়াম, আয়ন ব্যাটারি থেকে বের করা অনেক দ্রুত হয়। মাইক্রোওয়েভে সরাসরি খাবার গরম করলে তা খাবারের অণুর মধ্যে পৌঁছে সেটিকে তাড়াতাড়ি গরম করে দেয়। এই ক্ষেত্রেও সেই একইভাবে প্রায় ১৫ মিনিটের মধ্যে অন্তত ৮৭ শতাংশ লিথিয়াম নিষ্কাশন করা সম্ভব হচ্ছে। পুরাতন পদ্ধতি অয়েল-বাথ হিটিংয়ে যা করতে প্রায় ১২ ঘন্টা সময় লাগত।
তিনি আরও বলেন, লিথিয়াম, কোবাল্ট এই ধাতুগুলো সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে একটি জিও পলিটিক্যাল বাধা কাজ করে। সব থেকে বেশি লিথিয়াম পাওয়া যায় চিলিতে। কিন্তু এই পদ্ধতিতে লিথিয়াম সংগ্রহ করা গেলে, সেটি পরিবেশ, অর্থএবং শিল্প এই সবক্ষেত্রেই সমানভাবে লাভজনক হবে।