জুনের ৪ তারিখ পৃথিবীতে এসে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কলের দ্বিতীয় সন্তান। পুত্রের পর এবার কন্যা।
গত ৬ জুন নাম ঘোষণা হয়েছে সদ্যজাত রাজকুমারীর।
লিলিবেথ ডায়ানা মাউন্টব্যাটন। ডাকনাম লিলি।
হ্যারির কন্যার নাম সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই প্রায় হইচই পড়ে গিয়েছে ব্রিটেনে। বাদ নয় রাজ অন্দর। অন্যান্য দেশেও চর্চা চলছে প্রায় এক পক্ষ বয়সী কন্যার নাম নিয়ে।
প্রিন্স হ্যারি অন্য ধারার মানুষ। ইংল্যান্ডের তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় তো বটেই।
ব্যাকিংহাম প্রাসাদ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর সেই জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে।
লিলিবেথ ডায়ানা মাউন্টব্যাটন উইন্ডসোর। মেয়ের নামে মা ঠাকুমার ছোঁয়া রেখেছেন হ্যারি। রাজ দম্পতি নিজেই জানিয়েছেন সেই কথা।
ঠাকুমা কুইন দ্বিতীয় এলিজাবেথকে সম্মান জানিয়েছেন তাঁর ছোটবেলার নামে। লিলিবেথ।
রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের ছোটবেলার ডাকনাম।
যখন খুব ছোট, তখন নিজের নাম ‘এলিজাবেথ’ ঠিক মতো উচ্চারণ করতে পারতেন না তিনি৷
বলতেন আমার নাম ‘লিলিবেথ’৷ পরিবারের সদস্যরাও তাই তাঁকে সে নামেই ডাকত৷
১৯৫২ সালে রানির আসনে অধিষ্ঠিত হবার আগ পর্যন্ত এ নামেই পরিবারে ডাকা হত তাঁকে। গত এপ্রিলে প্রয়াত হয়েছেন প্রিন্স ফিলিপ। ৭৩ বছরের দীর্ঘ দাম্পত্যজীবনের সমাপ্তি ঘটেছে৷
সঙ্গে সঙ্গে 'লিলিবেথ' নামে ডাকার শেষ মানুষটিকেও হারিয়েছেন তিনি।
তাঁর লিলিবেথ নামটি রেখেছিলেন রানীর বাবা রাজা ষষ্ঠ জর্জ।
তাঁর দুই কন্যা। লিলিবেথ আর মার্গারেট। বলতেন, " লিলিবেথ ইজ মাই প্রাইড, মার্গারেট ইজ মাই জয়"।
হ্যারিকন্যা লিলিবেথের মধ্যনাম তাঁর মা প্রিন্সেস ডায়ানার নামে। ১৯৯৭-এ এক গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।
লেডি ডায়ানা স্পেনসার। মা ডায়ানার নামেই মেয়ের নাম রেখেছিলেন হ্যারির দাদা প্রিন্স উইলিয়ামও।
হ্যারি সব সময়ই তাঁর মায়ের ব্যাপারে আবেগপ্রবণ। তিনি কখনও আড়ালের চেষ্টাও করেন না সে আবেগ।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজেকে সেভাবেই মেলে ধরেছেন।
" মা থাকলে ভীষন খুশি হতেন। গর্বিত হতেন আমায় নিয়ে"।
ব্যাকিংহাম প্যালেসের দমবন্ধ জীবন থেকে বেরিয়ে এসে মেগানকে নিয়ে তাঁর নিজের পৃথিবী তৈরিই যে হ্যারির কথায় মায়ের গর্বের কারণ তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
গত এক বছরে মাকে প্রতিটা মুহূর্তে অনুভব করছেন। আগের থেকে অনেক বেশি করে।
বিশেষ করে তাঁর প্রথম সন্তান পুত্র আর্চির আশেপাশে।
২ বছরের ছেলের ঘরে মায়ের ছবি।
হ্যারির কথায়, আর্চি যখন প্রথম কথা বলতে শিখল 'মামা', 'পাপা'র পরই বলেছিল 'গ্র্যানমা'। সেই মুহূর্ত যতটা খুশির ততটাই কষ্টের।
ব্রিটিশ রাজ পরিবারে নাম নিয়ে সব সময়ই নানা পরিবর্তন এসেছে।
১৯১৭- পর্যন্ত রাজ পরিবারের আলাদা করে কোনও অন্তনাম ছিল না। উর্ডস, স্টুয়ার্ট, হাউস অফ হ্যানভার এসবই ব্যবহার করতেন সদস্যরা।
১৯১৭-এ রাজা পঞ্চম জর্জ সিংহাসনে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবে ব্রিটেনে ক্রমশ প্রবল হচ্ছে জার্মান বিরোধী মনোভাব। সেই সময় তিনি 'উইন্ডসোর' উপাধি গ্রহণ করলেন।
উইন্ডসোর দুর্গের নাম। তারপর থেকে রানী ভিক্টরিয়ার পারিষদ বর্গের নামের সঙ্গেও যুক্ত হয়ে গেল 'উইন্ডসোর'।
পরে পঞ্চম জর্জের নাতনি এলিজাবেথ রাজ সিংহাসনে বসলে তিনিও উইন্ডসোর নামটাই রেখে দেন।
১৯৬০-এ তাঁর স্বামী প্রিন্স ফিলিপ নিজের নামে উউন্ডসোরের সঙ্গে জুড়ে নেন মাউন্টব্যাটন।
সেই সূত্রেই হ্যারির কন্যার নাম হয়ে দাঁড়াল ' লিলিবেথ ডায়ানা মাউন্টব্যাটন উইন্ডসোর'। দ্য ডাচেস অফ সাসেক্স।