বলতে দ্বিধা নেই বিশ্বব্যাপী করোনা এমন এক পরিস্থিতি তৈরী করেছে যে চেনা ছকের জীবনযাপনে ঘটেছে এক বিশাল বদল। যদিও পরিস্থিতি এখন খানিক স্বাভাবিকের দিকে গেলেও শিক্ষাকে আবার আগের ছন্দে ফেরাতে বিভিন্ন স্কুল একাধিক উদ্ভাবনী পাঠক্রমিক প্রকল্পের পরিকল্পনায় ব্রতী হয়েছে।
আর এমনি এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে নর্থ ওয়েস্ট ইন্ডিপেন্ডেন্ট জেলার পিটারসন এলিমেন্টারি স্কুল। নর্থ ওয়েস্ট এডুকেশন ফাউন্ডেশনের সাহায্যে তারা এমন ব্যবস্থা করেছেন যাতে শিক্ষার্থীরা শুধু বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছে তা নয়, তাদের মধ্যে তৈরী হচ্ছে সুস্থ প্রতিযোগী মনোভাব, সাথে একরাশ উৎসাহ। কিন্তু কী সেই উদ্যোগ? জানাব সে কথা।
এই স্কুলে এসেছে বুক ভেন্ডিং মেশিন। অবাক হচ্ছেন? জাঙ্ক ফুড ঠাসা মেশিনে কয়েন বা কার্ড দিলেই বেরতো কোল্ড ড্রিংকসের বোতল আর সেখান থেকে বেরবে বই? হ্যাঁ। এমনই কান্ড ঘটেছে। যদিও জর্জিয়া হসপিটালে বছর সাতেক আগে ডাক্তার, রোগী, অপেক্ষমান রোগীর পরিজনদের মানসিক প্রশান্তির জন্য এই মেশিনের ব্যবস্থা করেছিল কর্তৃপক্ষ।
এরপর চীন, জাপান সহ ইউরোপের একাধিক দেশে এই মেশিন লাইব্রেরির কাজে ব্যবহার শুরু হয়। সেখানে অবশ্য রিডিং কার্ড-এর বারকোড দিয়ে Borrow অথবা Return অপশন দিয়ে নির্দেশ অনুসরণ করলেই নিজের প্রয়োজন মিটবে। কিন্তু এবার এমন মেশিনের দেখা মিলছে টেক্সাসের এই স্কুলে।
এখানে অবশ্য সবাই ছোট। তাই সাপ্তাহিক যোগ্যতার ভিত্তিতে শিক্ষকরা প্রত্যেক শুক্রবার একজন করে ছাত্র নির্বাচন করে তাদের গোল্ডেন টিকিট বা গোল্ডেন কয়েন দেন। ওই কয়েন দিয়ে মেশিন ভর্তি রকমারি বইয়ের সম্ভার থেকে বইয়ের আর তাকের নম্বর দিলেই মিলছে আকর্ষণীয় বই, যা সে বাড়িতে নিয়ে পড়তে পারবে।
নিঃসন্দেহে এই ব্যবস্থা আকর্ষণীয়। বইগুলো সব এক্কেবারে নতুন, কিছু আছে ডোনেশন প্রাপ্ত, তবে পরিসংখ্যান বলছে শিক্ষার্থীরা নিজেদের তৈরী করার সুযোগ পাচ্ছে, জ্ঞানার্জন করছে আর আগ্রহ তো বেড়েছেই। মেশিনে আছে ফেরতের ব্যবস্থাও।
কিন্ডল, ইন্টারনেটের যুগেও নতুন বইয়ের সাদা পাতার গন্ধ যে কী শান্তির উদ্রেক করে তা বলাই বাহুল্য। তাই এখনো লাইব্রেরী আছে। আছে বইয়ের দোকানও। আর আছে বই পাগলের দল। প্রযুক্তির বিচ্ছুরণে খানিক ম্রিয়মান সেই নেশাকেই ফিরিয়ে আনতে এই ভেন্ডিং মেশিন নিঃসন্দেশে এক অভিনব পদক্ষেপ।