১৩ বছর আগে ভারতকে কুষ্ঠরোগ মুক্ত হিসেবে ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক৷ অর্থাৎ কুষ্ঠ রোগ নির্মূল হয়ে গিয়েছে ভারত থেকে। কিন্তু আবার ফিরে আসছে এই রোগ।
সেন্ট্রাল লেপ্রসি ডিভিশনের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৭ সালের মধ্যে সারা দেশে ১৩৫,১৮৫ জন কুষ্ঠ রোগের শিকার হয়েছে। ভারতে প্রতি চার মিনিটে একজন করে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ২০১৮ সালে ৩৬২ জনের শরীরে কুষ্ঠ ধরা পড়েছে। ‘দেশ কুষ্ঠমুক্ত’ ঘোষনার পরও সামনে এসেছে এই পরিসংখ্যান। ২০১৭ সালে লোকসভায় বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছিলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে দেশ থেকে পুরোপুরিভাবে নিশ্চিহ্ন হবে এই রোগ ৷ কিন্তু 'নিশ্চিহ্ন' হওয়া দূরের কথা আবার পুরো মাত্রায় কুষ্ঠের প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অংশে৷ আগে যে সমস্ত জায়গায় কখনও কুষ্ঠ রোগীর সন্ধান মেলেনি, সেরকম অঞ্চল থেকেও রোগীর সন্ধান মিলছে। বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রেই রোগ ধরা পড়ছে অ্যাডভান্স স্টেজে।
সেন্ট্রাল লেপ্রসি ডিভিশনের ২০১৬-১৭ সালের রিপোর্ট প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ভারতের সমস্ত রাজ্যের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে কুষ্ঠরোগে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি৷
বিশ্বের ৬০ শতাংশ কুষ্ঠ রোগী এখনও ভারতেই।
কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে চলছে সেখানে সে ক্ষেত্রে ভারত কুষ্ঠ বিরোধী দেশ এই দাবী কতটা যুক্তিযুক্ত সে নিয়েও এখন প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
ভারতে মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যুদিন, ৩০ জানুয়ারিকে প্রতি বছর কুষ্ঠরোগ বিরোধী দিবস হিসাবে পালন করা হয়।
কুষ্ঠ ক্রনিক সংক্রামক ব্যাধি। কুষ্ঠ সংক্রমণে ‘মাইক্রো ব্যাক্টেরিয়াম লেপ্রি’ জীবাণুর দায়ী। আক্রান্ত রোগীর হাঁচি বা সর্দি-কাশি বা অন্য শ্বাসনালী-ক্ষরিত পদার্থের মাধ্যমে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। রোগের প্রথম লক্ষণ দেখা দেয় চামড়ায়। সাদা বা কালো দাগ দেখা দেয়। জায়গাটিতে কোনও সাড় থাকে না। স্নায়ু ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অঙ্গহানি বা শরীরে বিকৃতিও ঘটে।
এখনও কুষ্ঠ হলে সামাজিকভাবে ‘একঘরে’ হয়ে যাওয়ার প্রবনতা রইয়ে গিয়েছে মানুশের মধ্যে। যার কারণে রোগ লুকিয়ে রাখে অনেকেই। সঠিক সামাজিক সচেতনতার অভাব কুষ্ঠ নির্মূল হওয়ার পথে বড় বাধা।