জ্বলছে পৃথিবীর ফুসফুস। আমাজনের কঠিন অবস্থায় পরিস্থিতি প্রতিকূলে আনতে ৫০ লক্ষ টাকা দান করলেন হলিউড অভিনেতা লিওনার্দো দিক্যাপ্রিও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ রেইনফরেস্ট আমাজনের উদ্দেশ্যে, ‘আর্থ অ্যালায়েন্স’ নামক দিক্যাপ্রিওর একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান একটি আপৎকালীন তহবিল গঠন করে সেখানে ৫০ লক্ষ টাকা দান করেছেন।
সূত্রের খবর, আদিবাসী সম্প্রদায়ভুক্ত এবং অন্যান্য স্থানীয় মানুষেরা, যারা আমাজনের জীবন-রক্ষাকারী জীববৈচিত্রকে রক্ষা করার আপ্রাণ প্রয়াসে নিযুক্ত রয়েছেন, অর্থ সংস্থানের মাধ্যমে তাদের সংকটাকীর্ণ অবস্থায় দৃষ্টিপাত করাই এই অর্থের মূল উদ্দেশ্য।
অভিনেতা দিক্যাপ্রিও, কোটিপতি লরেন পাওয়েল জবস্ ও ব্রায়ান শেথ’কে দলটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। শুধু তাই নয়, ইন্সটাগ্রামে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার মাধ্যমে তিনি সকলকে এই প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন। “যারা গ্রাউন্ড লেভেলে আমাজন রক্ষার্থে অনবরত কাজ করে চলেছেন, আপনাদের অনুদানের ১০০ শতাংশ পৌঁছে দেওয়া হবে তাদের কাছে। প্রকৃতিকে রক্ষা করার কাজে আর্থ অ্যালায়েন্স প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাজনের চলমান সংকট নিয়ে আমরা গভীরভাবে চিন্তিত। আবহাওয়া ও জীববৈচিত্রের প্রাকৃতিক ভারসাম্যের পাশাপাশি এই ঘটনা আদিবাসীদের অস্তিত্বকেও প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।“
গত সপ্তাহের একটি ইন্সটাগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, “পৃথিবীর ফুসফুস অগ্নিশিখার মধ্যে বিরাজ করছে। ১০ লক্ষ আদিবাসী জনজাতি ও ৩০ লক্ষ প্রজাতির উদ্ভিদের বাসস্থান ব্রাজিলের আমাজন, গত দু’সপ্তাহ ধরে অনবরত পুড়ে চলেছে। ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্পেস রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, বছরের গোড়া থেকে এখনও অবধি প্রায় ৭৪,০০০ অগ্নিকান্ড ঘটেছে ব্রাজিলের আমাজনে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৮৪ শতাংশ বেশি। বিজ্ঞানী ও সংরক্ষনবাদীরা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলসোনারো’র কাছে অরণ্যবিনাশ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন, যিনি জানুয়ারিতে সরাসরি কাঠুরে এবং কৃষকদের আমাজনের জমি সাফ করার উন্মুক্ত আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। গোটা বিশ্বের জলবায়ু সংকট রোধ করতে অনস্বীকার্য ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই রেইনফরেস্ট। আমাজন ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকা প্রায় দুষ্কর। প্রার্থনার থেকেও বেশি কিছু প্রয়োজন আমাজনের। নির্বাচনের সময় আসলে কেবল তাদেরই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করুন যারা জলবায়ু সংকট সম্বন্ধে সচেতন এবং তা রোধ করতে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।“
আমাজনের অগ্নিকান্ডের ঘটনাগুলি অধিকাংশই ব্রাজিলীয় কৃষকদের দ্বারা পরিচালিত। গোচারণ ও তাদের শস্যাদি প্রেরণ করার উদ্দেশ্যে ব্রাজিলীয় আমাজনের একটা বিরাট অংশে প্রতিবছর তারা অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে থাকেন।
সব মিলিয়ে দিক্যাপ্রিও’র এই উদ্যোগ বিশ্ব জুড়ে ঘটে চলা জলবায়ু সংকট সম্বন্ধে জনমানুষে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি এই উদ্যোগের ফলে বিরাট অংশের মানুষ এই কর্মকান্ডে সামিল হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।