ছোট থেকে তাঁর ইচ্ছে ছিল বিজ্ঞান গবেষণায় জাতীয় ক্ষেত্রে কাজ করবেন। লক্ষ্য গবেষণা সংক্রান্ত কাজ করার। অবশেষে ঝাড়গ্রামের যুবক সোহম মহাপাত্রের সেই স্বপ্ন সফল হতে চলেছে। মুম্বইয়ের ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার-এ ট্রেনি সায়েন্টিফিক অফিসার হিসেবে যোগ দিতে চলেছেন ২৩ বছরের সোহম। এই সাফল্যে খুশি তাঁর গোটা পরিবার।
২০১৭ সালে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিয়ে বেলেঘাটায় গর্ভমেন্ট কলেজ অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সেরামিক টেকনোলজিতে ভর্তি হন। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগে। ২০২১ সালে বি.টেক পাস করেন। পাস করার পর নয়ডাতে উচ্চ বেতনের এক বেসরকারি চাকরিতে যোগ দেন। বছরে বেতন ছিল ১২ লক্ষ টাকা। কর্মক্ষেত্রে ‘বেস্ট এমপ্লয়ি অ্যাওয়ার্ড’-ও পেয়েছিলেন।
কিন্তু চাকরি জীবনে উৎসাহ পেতেন না। ২০২২ সালের শেষের দিকে সেই চাকরি ছেড়ে দেন সোহম। 'গেট' পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। ঝাড়গ্রামে ফিরে দশ মাস মাত্র পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাতেই গেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। দেশের অন্যতম সেরা IIT-তে ঢোকার সুযোগ পেয়ে যান তিনি। পাটনা IIT-তে ভর্তি হওয়ার পরেই সোহম জানতে পারেন মুম্বইয়ের ভাবা অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার থেকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হচ্ছে। এরপরেই পরীক্ষা দিয়ে বার্কে চাকরি পেয়ে যায় তিনি।
ছোটবেলা কেটেছে আর পাঁচ জনের মতোই। ঝাড়গ্রামের একটি বেসরকারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি অবধি পড়েছেন। ২০১৫ সালে কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। আর তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। বহু ভালো চাকরি আসা সত্ত্বেও তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল গবেষণা সংক্রান্ত কাজ করবার। সেই স্বপ্ন এবার সত্যি হয়েছে। ছোটবেলা থেকেই পাশে পেয়েছেন গোটা পরিবারকে। সোহমের এই সাফল্যে খুশি প্রত্যেক ঝাড়গ্রামবাসী।
এক সংবাদ মাধ্যমে সোহম বলেন, “বেসরকারি সংস্থায় অত্যন্ত ফাস্ট ডেলিভারি দিতে হত। ভাবনার সময় ছিল না। আমি এমন কিছু করতে চেয়েছিলাম যেখানে আমি ভাবনাচিন্তা করার সুযোগ পাব। চাকরি ছাড়ার পর অনেকেই মনে করেছিলেন আমাকে কাজ থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে। তবে আমার রিসার্চ করাই লক্ষ্য ছিল। সেই জন্যই আমি ভেবেছিলাম গেটের থেকে ভালো অপশন হতে পারে না।”