ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলা থেকে ঠিক ৬০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত রুদ্রসাগর লেক|তার তীরেই গড়ে তোলা হয়েছে ‘নীরমহল’ অর্থাৎ জলপ্রাসাদ| সেখানেই একদল মাঝি দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন রাজ্যের সবচেয়ে বড় নৌকা বানানোর উদ্দেশ্যে|
এই নৌকা গঠন কমিটির প্রধান দুলন সূত্রধর জানিয়েছেন, তিনি এর মধ্যে প্রায় ১০০০টিরও বেশি নৌকা তৈরী করে ফেলেছেন| জানা গেছে, মাত্র ১২ বছর বয়স থেকে নৌকা তৈরির কাজে লিপ্ত তিনি| এখন তার বয়স ৭০ বছর| এখন তিনি এই ‘বড় ডিঙি’ তৈরির কাজ করছেন| তাঁর দাবি, এটাই তার জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ হতে চলেছে| তিনি নিজেই জানিয়েছেন, নিজের হাতে প্রায় ৫০০০ নৌকা তৈরী করেছেন| নতুন যে নৌকা তৈরির কাজ তিনি শুরু করেছেন তাতে মোট ২০০টি বসার জায়গা থাকছে| জানা গেছে, নতুন এই নৌকাটি প্রচন্ড স্রোতের মুখে দাঁড়িয়েও দুলবে না| দুলনবাবু জানিয়েছেন, শুধুমাত্র পর্যটক আকর্ষণ করাই তাঁর মূল লক্ষ্য নয়| এরসাথে সাথে নৌকা তৈরির প্রচলিত শিল্পকলাটিকে টিকিয়ে রাখাও তাঁর উদ্দেশ্য|
দুলন মোট ৬ জনের একটি দল নিয়ে কাজটি শুরু করেছেন| দলে রয়েছে দুলনের ছোটভাই এবং তাঁর নিজের ছেলে| তারা এই কাজটি শুরু করেছেন ২৪শে অক্টোবর থেকে| ইতিমধ্যেই প্রায় কাজটি শেষের মুখে| জানা গেছে, আগামী মাসের মধ্যেই ৬৬ ফিট লম্বা এবং ১১.৫ ফিট চওড়া নৌকাটি জলে ভাসতে চলেছে| শুরু দিকে নৌকাটি রাজঘাট থেকে নীরমহল পর্যন্ত যাতায়াত করবে|
এই প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই রুদ্রসাগর উদ্বাস্তু জেলে সমবায় সমিতির অনুমোদন পেয়ে গেছে| জানা গেছে, নীরমহলে ইতিমধ্যেই ১০টি ‘বড় সরজ্ঞা’ অর্থাৎ ঐতিহ্যবাহী রেসের নৌকা জলে ভাসমান রয়েছে| এছাড়াও রয়েছে প্রচুর স্পিড বোট এবং প্রহরীদের জন্য রয়েছে কিছু নৌকা যারা সারারাত এই লেকের পাহারার দায়িত্ব থাকেন| এই সমবায় সমিতির সেক্রেটারি পরমেশ্বর দাস জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সরকারের স্বদেশ দর্শন স্কিমের অধীনে চলে গেছে ‘বড় ডিঙি’| তবে এই প্রকল্পের জন্য সরকারের তরফ থেকে কোনরকম সাহায্য নেওয়া হয়নি|