ভগবান শ্রী বিষ্ণুর কূর্ম রূপের জীবাশ্ম রয়েছে এই মন্দিরে

ভক্তদের রক্ষা করতে দশ অবতারে পৃথিবীতে এসেছিলেন ভগবান বিষ্ণু। তার দ্বিতীয়  হল কূর্ম অবতার। বিষ্ণুর এই রূপের পুজো করা হয় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকুর্মাম জেলায় কুর্মানাথস্বামী মন্দিরে। তাই এটি বিশ্বের এক মাত্র স্বয়ম্ভু মন্দির। ১১ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এই মন্দির নির্মাণ করা হয়েছিল। মন্দিরে যে মূর্তিটি রয়েছে সেটা কোনও মানুষ নির্মিত নয়। সেটা একটি বড় কচ্ছবের জীবাশ্ম। ভক্তদের বিশ্বাস, সমুদ্র মন্থনের সময় মন্দার পর্বত জলের তলার চলে যাচ্ছিল তখন ভক্তদের রক্ষা করার জন্যে ভগবান বিষ্ণু কূর্ম অবতার নেন ও পর্বতের পৃষ্ঠ ধারণ করেন। ভগবানের সেই কূর্ম রূপের জীবাশ্ম রয়েছে এই মন্দিরে।

প্রাচীনকালে শ্বেতা মহারাজা নামের এক রাজা ভগবান বিষ্ণুকে প্রসন্ন করবার জন্যে তপস্যা শুরু করেছিলেন। বহু বছর ধরে তপস্যা করবার পর ভগবান বিষ্ণু খুশি হয়ে কূর্ম অবতারে তাঁকে দেখা দিয়েছিলেন। শ্বেতা রাজার নামের একটি হ্রদ রয়েছে মন্দিরের সামনেই। যার নাম শ্বেতা পুষ্করিণী। যেটা ভগবান বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র দ্বারা নির্মিত বলে মনে করা হয়।

সম্পূর্ণ মন্দিরটিতে মোট ১০৮টি স্তম্ভ রয়েছে। মন্দিরের দেওয়ালের বিভিন্ন ছবির আঁকা রয়েছে। যেগুলির সঙ্গে মিল রয়েছে অজন্তা ও ইলোরা গুহার দেওয়ালে আঁকা ছবিগুলোর। মন্দিরের প্রধান দেবতার মুখ রয়েছে পশ্চিম দিকে। ভারতের অন্যান্য  মন্দিররে এমন হয় না। এছাড়াও মন্দিরের নীচে রয়েছে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ। এই সুড়ঙ্গের নাম কাশীদ্বারম। সেই সুড়ঙ্গের মাধ্যমে বারাণসী পৌঁছে যাওয়া যায়। কিন্তু এখানে থেকে বারাণসীর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার।

প্রত্যেক বছর জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে দোল উৎসব পালন করা হয় এই মন্দিরে। সেই সময় বহু মানুষের ভিড় দেখা যায় মন্দির চত্বরে। মোট তিন দিন ধরে চলা এই উৎসব পালন করা হয় ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে। এছাড়াও কল্যাণৎসব ও মুককোটি উৎসব পালন করা হয় এখানে। জৈষ্ঠ বাহুলা দ্বাদশীর দিন কূর্ম জয়ন্তী পালন করা হয় এই মন্দিরে। রেল ও সড়ক পথে এই মন্দিরে আসার ব্যবস্থা রয়েছে। সড়ক পথে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী হায়দ্রাবাদ থেকে শ্রীকূর্মাম জেলার দূরত্ব প্রায় ৭১৬ কিলোমিটার। ট্রেনে মাত্র ১৩১ কিলোমিটার।

এটা শেয়ার করতে পারো

...

Loading...