পুজো কিংবা বিয়েবাড়ি, বর্তমানে অল্পবয়সী মেয়েদের মধ্যে শুরু হয়েছে একটি নতুন ট্রেন্ড। তা হলো শাড়ী পড়ার ট্রেন্ড। নানা রকম পদ্ধতিতে নানা রকম স্টাইলে শাড়ী পরেই আজকাল অনুষ্ঠানবাড়ি যেতে পছন্দ করে জেনেরেশন ওয়াই এবং জেড। বাড়িতে মা থাকলে তো কথাই নেই। শাড়ী নিয়ে মায়ের কাছে হাজির হলেই হলো। কিন্তু বাড়িতে যদি মা না থাকে তাহলে উপায়? তখন অনেক্ষেত্রেই খোঁজ পড়ে ড্রেপারের। আগেকার দিনে বাড়িতে সবসময় এমন কেউ থাকতেন যিনি সকলকে শাড়ী পড়াতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। কিন্তু যুগ বদলাচ্ছে, শাড়ী পড়ার প্রবণতাও কমছে। বিশেষ কিছু অনুষ্ঠান ছাড়া শাড়ী ক্যারি করতে কেউই চাননা। সেই ক্ষেত্রে শাড়ী পরানোর জন্য খোঁজ পড়ে ড্রেপারের। ড্রেপারের কাজই হলো বিভিন্ন স্টাইলে শাড়ী পরানো। সেরকম এক শাড়ী ড্রেপারের গল্পই শোনানো যাক...............
কলকাতার এক সাধারণ গৃহবধূ ছিলেন ডলি জৈন।একসময় গৃহবধূ হয়ে থাকা ডলি আজ সেলিব্রিটি। এখন তিনিই তাবড় তাবড় সেলিব্রিটিদের ভরসার অন্যতম জায়গা।তাদের বাড়ি গিয়ে তাদের শাড়ী পরিয়ে দিয়ে আসার কাজ পেয়েছেন তিনি।সোনাম কাপুর থেকে শুরু করে প্রিয়াঙ্কা চোপড়া, ঈশা আম্বানি সকলের বাড়িতেই তাকে যেতে হয় তাদের শাড়ী পরিয়ে দেওয়ার জন্য। কি ভাবছেন? এই সেলিব্রিটিরা শাড়ী পরতে পারেন না? না তা নয়। ডলি যে পেশাটির সাথে যুক্ত তার নাম শাড়ী ড্রেপার অর্থাৎ যিনি নানাধরণের স্টাইলে শাড়ী পরাতে পারেন।বিশ্বের তাবড় তাবড় সেলিব্রিটি ছাড়াও বিশ্বের বড়বড় ডিজাইনারও ডলির উপর ভরসা করে থাকেন।
মাত্র ১৮ সেকেন্ডে শাড়ী পরিয়ে ইতিমধ্যেই লিমকা বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ নাম লিখিয়ে ফেলেছেন তিনি। প্রথমদিকে তিনি ১২৫ রকমের শাড়ী পড়াতে পারতেন কিন্তু বর্তমানে তিনি ৩২৫ রকম উপায়ে শাড়ী পরানো পারেন। ভারতের সব প্রদেশের স্টাইলেই তিনি শাড়ী পরাতে সিদ্ধহস্ত। ডলি জানিয়েছেন, কনের উপর নির্ভর করে তার শাড়ী পরানোর স্টাইল।কনের ব্যক্তিত্বের সাথে মিলিয়েই তিনি শাড়ীর স্টাইল বেছে নেন। তিনি বলেন, শরীর স্টাইল এমনভাবে সিলেক্ট করা হয় যাতে কনের ব্যক্তিত্ব কোনোভাবে চাপা না পড়ে যায়। এর সাথে কনের পছন্দ অপছন্দ তো রয়েইছে। যেমন, দীপিকা ডলির কাছে আবদার করেছিলেন হাতের উপর এলিয়ে পড়া আঁচল। তাই সেইভাবেই দীপিকাকে সাজিয়েছিলেন তিনি। ডলি জানান, বিয়ের আগে শাড়ী পরা বা পরানো নিয়ে কোনো মাথাব্যথা ছিল না তার। তবে তার এমন জায়গায় বিয়ে হয় যেই বাড়িতে শাড়ী ছাড়া আর কিছু পরা চলবে না। সেই থেকেই শাড়ী পরার নানা কায়দাকানুন নিয়ে নাড়াচাড়া এবং নতুন নতুন শাড়ী পড়ার পদ্ধতি শেখা।প্রথম প্রথম ম্যানিকুইনে শাড়ী পরিয়েই অনুশীলন করতেন আর চিন্তা করতেন আরও নতুন নতুন পদ্ধতিতে কিভাবে শাড়ী পরানো যায়। সেই থেকে শুরু। আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। কলকতার সেই গৃহবধূ ডেস্টিনেশন ওয়াডিংয়ের জন্য বিদেশেও পাড়ি দিয়েছেন।
জানা যায়, শুধু বলিউড সেলিব্রিটি নয়, পলিটিকাল পার্সনদেরও নিজের হাতে শাড়ী পরিয়েছেন তিনি। সেই লিস্টে রয়েছেন স্মৃতি ইরানি থেকে শুরু করে জয়ললিতা। কত পারিশ্রমিক পান তা স্পষ্টভাবে জানা না গেলেও তিনি জানান ৩৫০০০ থেকে শুরু করে ২ লক্ষ পর্যন্ত পারিশ্রমিক তিনি পেয়েছেন। শুধু সেলিব্রিটিদেরই তিনি শাড়ী পরান তা কিন্তু নয়। সাধারণ কনেদের জন্য বুক করা যায় তাকে। যদি কেউ তার খরচ অ্যাফোর্ড না করতে পারেন তার জন্য রয়েছেন তার সহকর্মীরা। তারাও অত্যন্ত যত্নের সাথে কনেকে শাড়ী পরান।তবে সে সেলিব্রিটি হোক বা সাধারণ লোক ডলির দেখা পেতে গেলে কিন্তু দুই বা তিন মাস আগে থেকেই তাকে বুক করতেই হবে।