এক নয়া পালক পেল কলকাতা! দেশের সবথেকে নিরাপদ শহরের তকমা জিতে নিল শহর কলকাতা।
২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস করে এখানে। তবুও সবথেকে কম বিবেচনাযোগ্য অপরাধের রেকর্ড পাওয়া গিয়েছে এই শহরেই। ঠিক এটাই বলছে ২০২২ সালের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি)-র প্রতিবেদন। এখানেই শেষ নয়, টানা তিন বছর ধরে আমাদের শহর কলকাতা এই স্থানটি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
এনসিআরবি যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সেখান থেকে জানা গিয়েছে যে প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যার নিরিখে বিবেচনাযোগ্য অপরাধের পরিমাণ ৮৬.৫। দেখা যাচ্ছে প্রথম স্থানে রয়েছে কলকাতা।
এরপর দ্বিতীয় সেরা নিরাপদ শহর হল পুণে। পুণের প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যার নিরিখে বিবেচনাযোগ্য অপরাধের পরিমাণ ২৮০.৭। এরপরেই তৃতীয় স্থানে রয়েছে হায়দরাবাদ এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে চেন্নাই। দেখা গিয়েছে সেখানে প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যার নিরিখে বিবেচনাযোগ্য অপরাধের পরিমাণ যথাক্রমে ২৯৯.২ এবং ৪৫০.১।
এখানেই শেষ নয়, এই নতুন কলকাতার রেকর্ড দেখলে অনেকটাই উন্নতি চোখে পড়েছে। সেটা হল, ২০২১-এর রিপোর্টের পরিসংখ্যান দেখলে দেখা যাচ্ছে যে প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যার নিরিখে ওই শহরে বিবেচনাযোগ্য অপরাধের পরিমাণ ১০৩.৫। এছাড়া ২০১৬ সাল থেকে কলকাতা শহরের অপরাধের পরিমাণ দ্রুত হারে কমেছে। সেই সময়ে দেখা যাচ্ছে কলকাতায় প্রতি ১ লক্ষ জনসংখ্যার নিরিখে বিবেচনাযোগ্য অপরাধের পরিমাণ ছিল ১৫৯.৬।
এই নিয়ে দেশের মধ্যে তৃতীয়বারের জন্য় কলকাতা নিরাপদ শহর হিসাবে বিবেচিত হল, তবে এটা ২০২২ সালের রিপোর্ট।
বর্তমানে, কলকাতা পুলিশের আওতায় মোট ৮৩টি থানা রয়েছে, তার মধ্য়ে ৯টি মহিলা থানা। দুটি সাইবার থানা ও এসটিএফের কেন্দ্র।
কলকাতার এই সুখবর জানতেই খুশি সকলে। এক মন্ত্রী এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন যে ‘ন্যাশানাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরোর সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে দেশের অন্য়ান্য় শহরের তুলনায় কলকাতায় সবথেকে কম অপারধের মাত্রা। আর দেশের জাতীয় রাজধানীতে সবথেকে বেশি। দিল্লিতে যেখানে প্রতি লাখ মানুষের মধ্য়ে অপরাধের হার ১৯৫২.৫ আর কলকাতায় মাত্র ৮৬.৫। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দফতর কোচি, ইন্দোর, জয়পুর, পাটনায় প্রতি লাখে ক্রাইম রেট হাজারের বেশি দেখিয়েছে’।
তবে, কলকাতা শহরে অপরাধ কমলেও গোটা দেশ জুড়ে অপরাধ কমছে, এমনটা একদমই নয়। ২০২২ সালের রিপোর্ট পয়লা ডিসেম্বর ক্রাইম ইন ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। যদিও প্রতি বছর এই রিপোর্ট সাধারণত জুলাই অগস্ট মাসে প্রকাশিত হয়, কিন্তু এবার কিছুটা দেরি করে এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে।
দেখা যাচ্ছে যে মহিলাদের উপর নানাভাবে নির্যাতন নেমে আসছে। সেখানে স্বামী ও অন্যান্য আত্মীয়রাও এই নির্যাতনে শামিল হচ্ছেন। সেই সংখ্যা সবথেকে বেশি। পরিসংখ্যান গিয়ে দাড়িয়েছে ৩১.৪ শতাংশ। ২০২২ সালে সব মিলিয়ে ৪,৪৫,২৫৬টি (Crime against Women)-এর কেস নথিভুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে, ২০২১ সালের তুলনায় এই সংখ্য়া ছিল ৪ শতাংশ বেশি।